Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আসামিদের লোমহর্ষক খুনের বর্ণনা পদ্মা থেকে নিখোঁজ সারেঙদের লাশ উদ্ধার : গ্রেফতার ৪

প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শিবচর (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : নিখোঁজের ৮দিন পর মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মা নদী থেকে জাহাজের সারেঙ চাঁন মিয়া মোল্লার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ আসামিকে গ্রেফতার করলে তাদের স্বীকারোক্তিতে গত সোমবার সন্ধায় পদ্মা নদীর শিবচরের কাঁঠালবাড়ী চরচান্দ্রা হাজরা চ্যানেলের মুখ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। নিহত চাঁন মিয়া শিবচরের মাদবরেরচর সাড়ে এগার রশি গ্রামের মৃত সাহের মোল্লার ছেলে। নিহতের লাশ সুরতহাল শেষে রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ, জাহাজের মালিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামের ইউসুফ মিয়ার মালিকানাধীন এমভি মারুফ-তুষার নামক কার্গো জাহাজটি বালু বহনের কাজে নিয়োজিত ছিল। গত ২৫ জানুয়ারি বিকেলে ৬ শ্রমিক উপজেলার কাওড়াকান্দি ঘাটে জাহাজের বালু আনলোড করে জাহাজটি পদ্মা নদীর চরে সিরু চৌধুরীর হাটে গিয়ে রাতে নোঙর করে রাখে। ওইদিন রাতে নিহত চান্দুর মোবাইল থেকে জাহাজের অপর মালিক শাহ আলমকে জানানো হয় তারা পরের দিন সকালে বালু আনার জন্য পাবনা রওয়ানা দিবে। কিন্ত ২৬ জানুয়ারি সকালে ওই জাহাজের সকলের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় গত ৩০ জানুয়ারি শনিবার জাহাজের মালিক ইউসুফ মাতুব্বর শিবচর থানায় মামলা দায়ের করলে শিবচর থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মোঃ মিরাজ হোসেন রোববার শিবচরের মাদবর চর গ্রামের আবদুর রহমান সরদারের ছেলে বেলাল সরদারকে (২১) তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করলে তার দেওয়া তথ্য মতে বরিশালের বাবুগঞ্জ থেকে একই উপজেলার পূর্ব কেদারপুর গ্রামের আবুল হোসেন হাওলাদারের ছেলে আল আমিন হাওলাদার (১৯) ওই গ্রামের ইউনুস সরদারের ছেলে সোহেল রানা (২২), একই গ্রামের খলিল হোনার ছেলে আল আমিন হোনারসহ (২০) ৩ জনকে আটক করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নুর আলম মুন্সীর ছেলে মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি মোঃ সোহেল মুন্সী (২১) এখনো পলাতক রয়েছে।
নিহত চান্দু মোল্ল­ার স্ত্রী মজিদা বেগম জানান, পদ্মা ঘর বাড়ি শেষ করেছে। এখন অপরের জমিতে ঘর তুলে থাকি। একমাত্র আয়ের লোকটিকে ওরা মেরে ফেলেছে। এখন কি ভাবে ৫ সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকব। আমি ওই ডাকাতদের ফাঁসি চাই।
আসামিদের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই জাহাজটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা ছিল তাদের। তাই বিভিন্ন কৌশলে মিস্ত্রি লস্কর ও বাবুর্চি পদে ওরা ৪ জন জাহাজটিতে চাকরি নেয়। গত ২৫ জানুয়ারি বুধবার সুযোগ পেয়ে ওরা ৪ জন এক সঙ্গে প্রথমে সুকানি চান্দু মোল্ল­া ওরফে চানমিয়া মোল্লাকে জাহাজটি ঘুরিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা করতে বলে। সুকানি তাদের কথা না শোনায় তার গলায় রশি দিয়ে পেছিয়ে শ্বাস রোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হাত পা বেঁধে পদ্মায় ফেলা হয়। পরে তারা জাহাজটি বিক্রির উদ্দেশ্যে কীর্তনখোলা নদী হয়ে বরিশাল লঞ্চ ঘাটের কাছাকাছি চলে যায়।
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাকির হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতরা বয়সে ছোট হলেও এরা নদীপথে ভয়ানক দস্যুর দল। এরা সংঘবদ্ধ চক্র। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর পাঠানো হয়েছে। আরেক আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আসামিদের লোমহর্ষক খুনের বর্ণনা পদ্মা থেকে নিখোঁজ সারেঙদের লাশ উদ্ধার : গ্রেফতার ৪
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ