পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় অধ্যাপক শিক্ষাবদ ড. আনিসুজ্জামান আর নেই। গতকাল রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী সিদ্দিকা জামান, দুই মেয়ে রুচিবা ও শুচিতা এবং একমাত্র ছেলে আনন্দসহ অংসখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ এবং মরহুমের পরিবারের প্রতি সমবেতনা জানান।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বার্ধক্যজনিত কারণে বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ছেলে আনন্দ জামান জানান, তার বাবার দীর্ঘদিন থেকে হার্ট, কিডনিতে জটিলতায় ভুগছিলেন।
বার্ধক্যজনিত নানা রোগের কারণে গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে। সেখানে চিফ কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক খন্দকার কামরুল ইসলামের অধীনে চিকিৎসা নেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৩ মে চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (সিসিইউ) স্থানান্তর করেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ৯ মে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অনাবিল সমাজ হিতৈষী, গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল চেতনা, সুশীল বুদ্ধিবৃত্তিকর চর্চা ও ব্যক্তিগত মণীষা দিয়ে নিজেকে পরিণত করেছিলেন দেশের অগ্রগণ্য মানুষে। বাংলাদেশের মতো তিনি ভারতের খুবই সমাদৃত ছিলেন। ভারত তাকে রাষ্ট্রীয় পদ্মভুষণ সম্মাননা প্রদান করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রিতে ভূষিত করেন। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করেন। এ ছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, অলক্ত পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পান। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেন।
ড. আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রæয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এটিএম মোয়াজ্জেম ছিলেন বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। ১৯৫৬ ও ১৯৫৭ সালে স্নাতক সম্মান এবং এমএ- তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন আনিসুজ্জামান। অনার্সে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার কৃতিত্বস্বরূপ ‘নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক’ বৃত্তি লাভ করেন।
১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।
আনিসুজ্জামানের উল্লেখযোগ্য রচনাবলির মধ্যে ‘স্মৃতিপটে সিরাজুদ্দীন হোসেন’, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ স্মারকগ্রন্থ’, ‘নারীর কথা’, ‘মধুদা, ফতোয়া’, ‘ওগুস্তে ওসাঁর বাংলা-ফারসি শব্দসংগ্রহ’ ও আইন-শব্দকোষ অন্যতম। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।