প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার : অভিজ্ঞতার আলোকে বলিতে পারি, টেলিভিশন মিডিয়ায় অভিনয় করিতে আসিয়া যেইসব অভিনেত্রী একটু দর্শকপ্রিয়তা পাইয়া থাকেন, উহাদের যখন প্রশ্ন করা হয়, চলচ্চিত্রে অভিনয় করিবেন কিনা, তখন এমন একটি ভাব করিয়া থাকেন যেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের মতো এমন মন্দ জায়গা দুনিয়ার আর কোথাও নাই। নাক-মুখ কুঁচকাইয়া বলিয়া উঠেন, নাহ এখনই উহা লইয়া ভাবিতেছি না। যদি চলচ্চিত্রের পরিবেশ উত্তম হইয়া উঠে এবং গল্প ও চরিত্র মনের মতো পাই, তখন চিন্তা-ভাবনা করিব। গৌরবের সাথে এই কথাও বলিয়া থাকেন, অসংখ্য প্রস্তাব আসিতেছে, কথা হইতেছে, গল্প ও চরিত্র মনে ধরিতেছে না, ফিরাইয়া দিতাছি। চলচ্চিত্রের প্রতি টেলিভিশন মিডিয়ার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রীদের এমন উন্নাসিক আচরণ সুদীর্ঘকাল ধরিয়াই অবলোকন করিয়া আসিতেছি। উহাদের মনে এমন একটি ধারণা বদ্ধমূল হইয়া উঠিয়াছে যে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অভিনয় করিলে জাত-কূল-মান ধূলিসাত হইয়া যাইবে। ছিঃ ছিঃ লোকে কী বলিবে বলিয়া লম্ফ দিয়া উঠেন। নিয়তির নির্মম পরিহাস এই যে, যখন চলচ্চিত্র অভিনয় উহাদের নিকট পরম কাক্সিক্ষত হইয়া উঠে, তখন শত চেষ্টা করিয়াও সুযোগ মিলাইতে পারেন না। চলচ্চিত্র নির্মাতাদেরও আর উহাদের প্রতি সবিশেষ আগ্রহী হইয়া উঠিতে দেখা যায় না। উহার নিগূঢ় কারণ এই যে, উহারা টেলিভিশনে অভিনয় করিয়া নিজেদের দর্শককে বিনা পয়সায় দেখাইয়া সহজলভ্য করিয়া তোলেন। দর্শকের প্রবণতা এমনই যে, যেইসব অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিনা পয়সায় দেখা যায়, পকেটের পয়সা খরচ করিয়া সিনেমা হলে উহাদের দেখিতে যায় না। কারণ হইল, সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের দেখিতে হইলে কসরত করিয়া সিনেমা হলে গিয়া পয়সা খরচ করিয়া এবং সময় বাহির করিয়া দেখিতেই তাহাদের পছন্দ বেশি। সিনেমার নায়ক-নায়িকারা সহজে দেখিবার পাত্র-পাত্রী নহে। যাহা হউক, টেলিভিশনের যেইসব অভিনেত্রীরা একদা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কথা শুনিলে নাক কুঁচকাইয়া উঠিতেন, উহারা যখন চলচ্চিত্রে অভিনয়ে আগ্রহী হইয়া উঠেন, তখন আর উহাদের বেইল থাকে না। নির্মাতারাও আর আগ্রহ দেখান না। তবে যেইসব নির্মাতারা উহাদের লইয়া সিনেমা নির্মাণে আগ্রহী হইয়া উঠেন, তখন উহাদের অনেকেই এমনসব সিনেমা করেন, যাহা কোনো ফল বয়ে আনে না। এক সময় চলচ্চিত্র অত্যন্ত মন্দ বলিয়া যে কথা বলিয়াছিলেন, সেই মন্দ কাজটি করিতেও উহারা রাজী হইয়া যান। সিনেমায় নিজেদের খোলামেলা করিয়া উপস্থাপন করিতেও পিছ পা হন না। এমনকি চলচ্চিত্রে যেইসব দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর নায়িকারা খোলামেলা হইয়া নিজেদের উপস্থাপন করিতেন, তাহাদেরও হার মানাইতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। মম নামে ছোট পর্দার এক অভিনেত্রী একটি সিনেমায় নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করিয়াছিলেন, যাহা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু হইয়া উঠিয়াছিল। অনেকে বলাবিল করিতে লাগিলেন ইহাই কি টেলিভিশনের সেই মম! আফসোস করিতে হয়, মম খোলামেলা হইয়াও দর্শকের মনে একটুখানি উত্তেজনা সৃষ্টি করিতে পারেন নাই। ফল হইল এই, চলচ্চিত্রে উহার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলাইয়া গেল। গত ঈদে ছোট পর্দার আরেক দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী তিশা অভিনীত মেন্টাল বা রানা পাগলা নামে একটি সিনেমা মুক্তি পাইয়াছে। উহাতে তাহার বিপরীতে নায়ক হিসাবে শাকিব অভিনয় করিয়াছেন। শাকিবের সহিত তিশার এমন কিছু দৃশ্য রহিয়াছে, যাহা দেখিয়া চোখ কপালে না তুলিয়া উপায় নেই। শ্লীল-অশ্লীল লইয়া তাত্ত্বিক অনেক বিতর্ক থাকিলেও শাকিব ও তিশার এইসব দৃশ্য দেখিয়া অশ্লীল না বলিয়া পারা যায় না। এমনকি ফেসবুকে এইসব ছবি অনেকে পোস্ট করিয়া ছিঃ ছিঃ রব তুলিয়াছেন। শাকিবকে লইয়া যতটা না ছিঃ ছিঃ হইতেছে, উহার চাইতে তিশাকে লইয়া অনেক বেশি হইতেছে। এইসব দৃশ্যে তিশাকে এমনই রগরগে দৃশ্যে দেখা গিয়াছে যে, যাহারা উহার ভক্ত ও শুভাকাক্সিক্ষ তাহারা আঁতকে উঠিয়াছেন। অনেকে বলিয়া উঠিয়াছেন, তিশা দেখি এককালের মুনমুন, ময়ূরীদেরকেও হার মানাইয়া দিয়াছেন। অনেকে আবার এ মন্তব্য করিয়াছেন, মূল ধারার চলচ্চিত্রে ঠাঁই পাইতে তিশা নতুন করিয়া মুনমুন, ময়ূরী হইবার পথ ধরিয়াছেন। অন্যদিকে শাকিবের প্রতি মন্তব্য হইল, উহা তো মুনমুন, ময়ূরী বা তাহাদের চাইতে আরও কম পরিচিতদের সঙ্গে এমন অসংখ্য দৃশ্যে অভিনয় করিয়াছেন। উহার জন্য ইহাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিশা কী করিয়া সুইমিং পুলে জলকেলির মতো এমন রগড় দৃশ্যে অভিনয় করিলেন! অথচ তাহার ভাব-ভঙ্গিতে এমন মনে হয়, উহা যেন বাংলাদেশের অতি বড় মাপের একজন আঁতেলিয় অভিনেত্রী। তাহার সমকক্ষ যেন আর কেহ নাই। তবে পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করিয়া এই মতামত দিয়াছেন যে, সময় হারাইয়া, বয়স বাড়াইয়া ছোট পর্দার এই মাপের অভিনেত্রীগণ বড় পর্দা ফাটাইবার জন্য শেষ সম্বল হিসাবে নিজেদের খুলিয়া তুলিয়া ধরিতে চান। উহাদের এই ধারণা যে, ইহাতে দর্শক তাহাদের অকুণ্ঠচিত্তে স্বাগত জানাইবে এবং হুমড়ি খাইয়া পড়িবে। বাস্তবতা হইল এই, খোলামেলা দৃশ্যে তিশার অভিনয়ের প্রতি দর্শক আগ্রহ দেখায় নাই। উহাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছে। কারণ দর্শক এখন আর মুনমুন, ময়ূরীদের পুরনো সংস্করণ নতুন করিয়া দেখিতে চাহে না। টেলিভিশনের কোনো অভিনেত্রীর কাছ থেকে তো নয়ই। সর্বশেষ সংবাদ হইল তিশা অভিনীত সিনেমাটি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ যেমন হইয়াছে, তেমনি উহা আলোচনার মধ্যেও নাই। তবে অশ্লীল দৃশ্যে তিশার অভিনয়ের বিষয়টি আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হইয়াছে। মূল ধারার চলচ্চিত্রে উহা তিশার জন্য শনির দশাই হইয়া থাকিবে। বিশেষ দ্রষ্টব্য হইল, যাহারা সিনেমায় নায়িকা হইতে চান, উহাদের উচিত সময় থাকিতে সুযোগ গ্রহণ করা। মনে রাখিতে হইবে, ছোট পর্দায় বিনা পয়সায় বহুল প্রদর্শিত হইয়া ইহকালে কেহ বড় পর্দায় নায়ক বা নায়িকার মতো তারকা হইতে পারে নাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।