যেভাবে ৫০০
ক্লাব ফুটবলে গোলের প্রায় সব রেকর্ডই তার দখলে। এবার সেই লিওনেল মেসি উঠে গেলেন আরেক উচ্চতায়। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি।
রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাবের সদস্যরা এখন উত্তর আমেরিকা সফরে। উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন্স কাপে আংশ নেওয়া। ইউরোর ধকল সামলে ওঠার জন্য দলের অধিকাংশ সিনিয়র খেলোয়াড়ই বিশ্রামে। বিশ্রাম নেই কেবল জিদানের। যদি ভাবেন রিয়ালের এই দলে জিদান আছেন এই ‘একজন’, তাহলে একটু ভুল করবেন। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর এই দলে জিদান আছেন মোট তিনজনÑলিজেন্ড জিদান, যিনি দলের বর্তমান কোচ এবং তার দুই পুত্র লুকাস জিদান ও এনজো জিদান। তবে, আলোচনার বিষয় এখানে শুধু জিদান নয়। বর্তমান ফুটবলে এমন অনেক লিজেন্ডারি বাবা আছেন যাদের গুনধর পুত্ররাও ভবিষ্যতে তাদের পিতার মত আলো ছড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন ইতোমধ্যেই। জিদান তনয়ের মতো এই দলে আছেন আয়াক্স লিজেন্ড পাত্রিক লুইভার্ট, পাওলো মালদিনি ও জিওর্জি হ্যাগির মত তারকাদের পুত্ররাও। বাবার পথে ধরে আদৌ তারা ফুটবলাঙ্গনে আলো ছড়াতে পারবেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে। এর আগে আসুন এমনই কিছু পিতা-পুত্রের সাথে পরিচিত হই।
লিখেছেন -ইমামুল হাবীব বাপ্পী
জিনেদিন জিদান ও তার
দুই পুত্র এনজো ও লুকা
জিজুকে চেনানোর জন্য আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। ইউরোপের সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সম্পর্কে শুধু এটুকুই বলে রাখিÑ খেলোয়াড়ি জীবনে ফ্রান্সের হয়ে তিনি জিতেছেন বিশ্বকাপ ও ইউরো দুটিই। ক্লাব ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ শিরোপা চ্যাম্পিয়ন্সলিগও আছে তার নামের পাশে। এর মধ্যে বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দুই ফাইনালে স্কোর বোর্ডে নাম লেখানোর কৃতিত্বও আছে তার। তিন তিনবার হয়েছেন ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে মার্কো মাতেরাজ্জিরকে সেই ‘কলঙ্কিত ঢুঁস’ না মারলে হয়তো পেলে-ম্যারাডোনাদের কাতারে উঠে যেত জিদানের নাম। খেলোয়াড়ি পাট চুকিয়ে এখন তিনি পুরোদস্তুর একজন কোচ। ফুটবলের দ্বিতীয় ক্যারিয়ারেও করেছেন মাজিমাত। গেল মৌসুমের মাঝপথে রিয়াল মাদ্রিদের দায়ীত্বে এসে ধুঁকতে থাকা দলকে করেছেন ইউরোপ সেরা। তার মত এমন খেলোয়াড় ইউরোপ আবার কবে পাবে তা সময়ই বলে দেবে। তার ছেলেরা যদি জিদানের সিকি ভাগও অর্জন করে তবুও তাদের ফুটবল ক্যারিয়ার সার্থক হবে তা বলা যায়।
আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন্স কাপের জন্য উত্তর আমেরিকা সফরে মোট চার ছেলের মধ্যে দুই জন স্থান পেয়েছে পিতার (জিদানের) ঘোষিত রিয়াল মাদ্রিদের ২৫ সদস্যের দলে।
বড় ছেলে এনজো আলান জিদান ফার্নান্দেসের বয়স ২১। একজন ঝাক্কাস মিডফিল্ডারের সব গুনই আছে তার মধ্যে। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন তাকে তো আর এমনি এমনি চাননি। কিন্তু এনজো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চাওয়া উপেক্ষা করে বাবার ক্লাবকেই বেছে নিয়েছেন। যুব ক্যারিয়ারের গোড়ার দিকে এনজো ছিলেন জুভেন্টাসে। সেখান থেকে লিসিও ফ্রান্স ও সান জোসে হয়ে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। বার্নাব্যু দলের সিনিয়র দলে অভিষেক হয় ২০১৪ সালে। ‘সি’ দলের পরীক্ষা পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন ‘বি’ দলে। ক্লাবের সাবেক কোচ রাফায়েল বেনিতেজ তাকে করেন ‘বি’ দলের অধিনায়ক। মেজো ছেলে লুকা জিনেদিন জিদান ফার্নান্দেস এনজোর চেয়ে ৪ বছরের ছোট। পরিবারের অন্যান্য সদস্যের তুলনায় লুকা হেঁটেছেন একটু ভিন্ন পথে, খেলেন গোলরক্ষক হিসেবে। ফ্রান্সের বয়সভিত্তিক দলের সক্রিয় সদস্য লুকাস। রিয়াল মাদ্রিদে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে গেল মৌসুমে খেলেছেন যুব চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।
এছাড়া জিদান পরিবারে আছেন ১৪ বছর বয়সী থিও জিদান ও ১০ বছর বয়সী এলিয়াজ জিদান ফার্নান্দেস। রিয়ালের যুব দলে মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেন থিও। জিদান পরিবারের সর্বশেষ সংযোজন এলিয়াজ কোন পথে হাঁটবেন তা এখনি কিছু বলা ভার। তবে এরই মধ্যে পরিবারের বাকি সদস্যদের মত তার মধ্যেও দেখা গেছে ফুটবলারের স্পষ্ট ছায়া। রিয়ালের বয়সভিত্তিক দলের জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতিও শুরু করেছেন তিনি। এক কথায় রিয়াল মানেই যেন এক খ- ‘জিদান’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।