Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনে আবারও করোনা সংক্রমণ : ‘১০ দিনের লড়াই’ শুরু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০২০, ৫:২৪ পিএম | আপডেট : ৬:০২ পিএম, ১৩ মে, ২০২০

গতকাল সোমবার চীনের উত্তরপূর্ব অঞ্চলে আরও ৫ জনের সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে সেখানে আরও ১১ জন লন্ড্রির কর্মীর সংক্রমণের খবরও পাওয়া যায়। এদিকে উহান শহরের কর্তৃপক্ষ ১০ দিনে শহরের সমস্ত বাসিন্দা অর্থাৎ এক কোটি দশ লক্ষ মানুষের করোনাভাইরাস পরীক্ষার পরিকল্পনা নিচ্ছে। –বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স, এএফপি
এদিকে এএফপি জানিয়েছে, বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা ৪০ লাখ পার হয়ে গেছে এবং ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। বৈশ্বিক অর্থনীতি নড়বড়ে হয়ে গেছে। চীনে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ৮৩ হাজার। সেখানে ৪ হাজার ৬০০ মানুষ মারা গেছেন। দেশটিতে প্রায় এক মাসের মতো সময়ে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা নেই। সেখানে ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছিল। গতকাল সোমবার সে দেশেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে নতুন করে ১৭ জন সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, চীনে এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় করোনার নতুন সংক্রমণ দুই অঙ্কে পৌঁছাল। এখানে উদ্বেগের বিষয় হলো যে চীনের রাশিয়ার লাগোয়া উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় জিলিন প্রদেশের শুলান নগরে গুচ্ছাকারে করোনার সংক্রমণ ঘটছে।
করোনায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফ্রান্স ও স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলো যখন লকডাউন শিথিল করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছে, এ সময় চীনে নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটল।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীনের উহান ছিল বিশ্বজুড়ে ভাইরাস ছড়ানোর কেন্দ্র। তবে গত মাসে সেখানে নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। সেখানে গত দুই দিন ধরে আবার সংক্রমণের ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। এ ঘটনাকে করোনার সংক্রমণের আরেকটি তরঙ্গ বলে সতর্ক করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য তাড়াহুড়ো করতে গেলে রোগের দ্বিতীয় তরঙ্গ আঘাত হানতে পারে। ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত লকডাউন মেনে চলতে হবে।
চীনে ভাইরাসটিতে প্রথমবারের মতো আবির্ভূত হওয়ার পর ভাইরাসটি কমিয়ে আনার এবং প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে তথ্য গোপন করার জন্য দেশে এবং বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি। সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। এদিকে বেইজিং জোর দিয়ে বলেছে, তারা সবসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য দেশকে সময় মতো তথ্য দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এগারো সপ্তাহ ধরে কঠোর লকডাউনে থাকার পর ৮ই এপ্রিল থেকে সেখানে লকডাউন তুলে নেওয়া শুরু হয়। কিছু সময় ধরে মনে হচ্ছিল সেখানে জীবনযাত্রা আবার স্বাভাবিক হয়ে আসছে। স্কুল খুলেছিল, দোকানপাট ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছিল এবং গণপরিবহনও খুলে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু একটি আবাসিক ভবন এলাকা থেকে শুরু হয়ে একগুচ্ছ মানুষের মধ্যে আবার নতুন করে সংক্রমণ দেখা দেয়ায় শহরটিতে জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে ওঠা এখন আবার নুতন করে ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
´১০ দিনের লড়াই´
দ্য পেপার নামে সংবাদপত্রের এক রিপোর্টে সেখানকার অভ্যন্তরীন একটি নথিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে শহরের প্রতিটি এলাকার প্রত্যেক মানুষকে দশদিনের মধ্যে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা তৈরি করে তা মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে পেশ করতে হবে। এই নথিতে এই পরীক্ষা পরিকল্পনার নাম দেয়া হয়েছে ´দশ দিনের লড়াই´। এতে আরও বলা হয়েছে পরীক্ষার সময় বয়স্ক মানুষ এবং যারা গাদাগাদি করে এক আবাসস্থলে থাকে তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
তবে গ্লোবাল টাইমস নামে এক সংবাদপত্র উর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলছে, গোটা শহরের প্রতিটি মানুষকে পরীক্ষা করা অসম্ভব এবং বিশাল ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার।
উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝংনান হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের পরিচালক পেং ঝিয়ং বলেছেন, শহরের গোটা জনগোষ্ঠিকে পরীক্ষা করার বদলে স্বাস্থ্যকর্মী, যারা ঝুঁকির মুখে এবং যারা কোন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে তাদের লক্ষ্য করে এই পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো উচিত।
চীনে সোমবার মাত্র একজনের আক্রান্ত হবার খবর দেয়া হয়েছে যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা সেখানে দাঁড়িয়েছে ৮২,৯১৯ এবং মৃতের সংখ্যা বলা হয়েছে ৪,৬৩৩।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ