Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুয়েত থেকে ৩শ’ বাংলাদেশি কর্মী ফিরছে আজ

ক্যাম্পে অপেক্ষমানদের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২০, ১:৪০ পিএম

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে কুয়েত সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশটি থেকে আজ মঙ্গলবার দু’টি ফ্লাইট যোগে ৩শ’ অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরছেন। এতে কুয়েতের চারটি অস্থায়ী ক্যাম্পে অপেক্ষমান সাড়ে চার হাজার কর্মীর মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছে। কুয়েত থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের কল্যাণ ডেস্কের এডি ফখরুল আলম আজ মঙ্গলবার ইনকিলাবকে জানান, কুয়েতের একটি বিশেষ ফ্লাইট যোগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ১২০ জন এবং রাত ২টায় অপর একটি ফ্লাইট যোগে ১৮০ জন কর্মী ঢাকায় পৌঁছবেন। কুয়েত ফেরত এসব কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অবৈধ অভিবাসীদের কুয়েত ছাড়ার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে দেশটির সরকার। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অবৈধ অভিবাসী বাংলাদেশি সাধারণ ক্ষমার আবেদন করেছেন। রাজধানী কুয়েত সিটির বাইরে চারটি ক্যাম্পে তাদের রাখা হয়েছে। ক্যাম্পগুলো হচ্ছে, আবদালিয়া, সেবদি, মাঙ্গাফ ও কসর। ক্যাম্পে বসবাকারি কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন ক্যাম্পে তারা মানবেতন জীবনযাপন করছেন।
কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় দেশটির ৬টি ফ্লাইট যোগে প্রথম ৩ ফ্লাইটে ফিরবেন ৬১৮ জন। পরবর্তী ৩ ফ্লাইটেও সমান সংখ্যক বাংলাদেশি ফিরবে। কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম জানান, এক মাস হয় বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে কুয়েত সরকার। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বিভিন্ন অস্থায়ী ক্যাম্পে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। খাবার-দাবার না পাওয়াসহ ক্যাম্পের পরিবেশ নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু পুরোটাই কুয়েত সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, দেশটিতে এক লাখ ৬০ হাজার অবৈধ অভিবাসী রয়েছে। এবার ২০২০ এর সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছেন ২৫ হাজার অবৈধ অভিবাসী। অর্থাৎ এখনও এক লাখ ৩৫ হাজার অবৈধ অভিবাসী সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নেয়া থেকে বিরত রয়েছে। তবে এর মধ্যে বাংলাদেশি কতজন তা জানা যায়নি। দেশটিতে প্রায় ১৫ থেকে ১৭ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সনে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছিলেন ৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মী। এবার ২০২০ সালের সাধারণ ক্ষমায় এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অবৈধ অভিবাসী বাংলাদেশি সাধারণ ক্ষমার আবেদন করেছেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশে ফেরার জন্য প্রত্যাবাসন ক্যাম্পে অপেক্ষমান দু’জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের সব কিছু প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ফ্লাইট দেরি হওয়ায় তারা জীবিত দেশে যেতে পারলেন না। কুয়েতে সাধারণ রোগে মৃত ত্রিশ প্রবাসী কর্মীর লাশ দেশে আনারও চাপ রয়েছে। দেশটির বিভিন্ন হাসপাতাল মর্গে দীর্ঘ দিন যাবত এসব লাশ পড়ে রয়েছে। কুয়েত সরকার কারাগারে আটক ১৯৬ জন বাংলাদেশিকে মুক্তি দেয়ার একটি তালিকাও বাংলাদেশ দূতাবাসকে শেয়ার করেছিল, কিন্তু পরবর্তীতে ১৪৬ জনকে মুক্তি দেয়ার কথা জানায়। তাদের মধ্যে অনেকের যাবজ্জীবন দ-ও রয়েছে। বাকীদের বিষয়টি ঝুলে যাওয়ায় তাদের দেশে ফেরা আপাতত স্থগিত বলে জানান রাষ্ট্রদূত। দেশটিতে প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ যাবত ১৮ জন বাংলাদেশি কর্মী মারা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ