Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় সহিংসতার শিকার নারীর জন্য আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে -একশনএইড

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২০, ৯:০১ পিএম

করোনার এই মহামারীর সময় আইসোলেশন শুধু স্বাস্থ্যগত প্রয়োজনেই নয়, ঘরের ভেতরে সহিংসতার শিকার হাওয়া নারীর জন্য নিরাপদ আশ্রয় বা আইসোলেশনে প্রয়োজনে আইনগত নিরাপত্তার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য জোড়ালো ও যথোপযুক্ত অ্যাডভোকেসি এখন অনিবার্য।

বাংলাদেশের তরুনদের উপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে একটি ওয়েবিনারে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির একথা বলেন। তিনি বলেন, যুবদের দশক হিসেবে ঘোষিত এই দশকে করোনার মতো দূর্যোগে তাদের জন্য পরিকল্পনা এবং প্রণোদনা দুটো’র অভাবই প্রকট হয়েছে। তাই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বা জাতীয় বাজেটে যুবদের জন্য পৃথক পরিকল্পনা এবং বরাদ্দ রাখা অপরিহার্য। এই প্রসঙ্গে সুবিধা-বঞ্চিত যুবদের জন্য একশন এইড বাংলাদেশের বিভিন্ন কার্যক্রমের উল্লেখ করেন তিনি। কোভিড-১৯ সংকটকে সুযোগ হিসাবে নিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুবিধা-বঞ্চিত ও পিছিয়েপড়া নারী-শিশু ও যুবসহ সকল বঞ্চিত-শ্রেণীর জন্য একটি ন্যায্যতাভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা অপরিহার্য বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন ।

 

একশনএইড বাংলাদেশ এবং সাউথ এশিয়ান নেট্ওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং(সানেম)-র যৌথ আয়োজনে এই ওয়েবনিনারে সানেম-র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান তাদের কিছু গবেষণা তথ্য তুলে ধরেন। তার পরিবেশনায় তিনি বলেন, কোভিড-১৯-র প্রভাব পড়েছে দেশের ৩৭ মিলিয়ন শিক্ষার্থী-র উপর। অনানুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে থাকা ৮৯ ভাগ যুব শিকার হবেন বেকারত্বের, ফলে এক চতুর্থাংশ নতুন দরিদ্র তৈরি হবে এবং কোভিড-১৯ সংক্রান্ত প্রণোদনা প্যাকেজে যুবদের জন্য কোন বরাদ্দই নেই। তার সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত যুবকদের জন্য স্বাস্থ্য প্যাকেজ, বিস্তৃত শিক্ষা এবং তাদের কারিগরী-প্রযুক্তিগত উতকর্ষে আরো বেশি উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা।

 

অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেম-র গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক এবং সানেম-র রিসার্চ ফেলো মাহতাব উদ্দিন, একশনএইড বাংলাদেশের ইয়াং পিপল প্রকল্পের ম্যানেজার নাজমুল আহসান এবং সানেম-র রিসার্চ ইকোনমিস্ট জুবায়ের হোসেন। কোভিড-১৯ মহামারীকে মাথায় রেখে জাতীয় বাজেট এবং এই সংকট মোকাবিলায় বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন তারা।


ড. সায়মা হক বিদিশা যুবদের মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মাতৃপ্রজনন এবং শিশু স্বাস্থ্যের উপর প্রভাবের দিক তুলে ধরেন। এছাড়া কাজ হারিয়ে ফেলা প্রবাসী ও শহরফেরত যুবদেরকে কৃষিতে অন্তরভূক্তির মাধ্যমে চলমান অর্থনীতিতে সম্পৃক্তকরণ এবং সঠিক কর্মসংস্থানের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সঠিক নীতি নির্ধারন এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন।

 

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ৫ লাখ ফ্রিল্যান্সার বিপাকে পড়েছে বলে উল্লেখ করেন-জুবায়ের হোসেন । তবে তিনি বলেন যে, বর্তমানের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ কালচারে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে তাদের নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে আরো বেশি মনোযোগি হওয়া প্রয়োজন।

 

নাজমুল হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ছয় কোটি যুবক যারা একটি সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলো , তাদের স্বপ্নভঙ্গ ঘটেছে কভিড-১৯ মহামারীর কারণে। যুবনারীরা অনেকে কাজে ফিরতে না পেরে রিপ্রোডাক্টিভ হেলথে ফিরে যেতে হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। কেয়ার ইকোনমি এবং সার্ভিস সেক্টর সংক্রান্ত সুসংগঠিত তথ্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাতীয় যুবনীতি পূর্নবিবেচনা এবং স্থানীয় সরকারের সাথে জোড়ালো অ্যাডভোকেসি প্রয়োজন।’

 

মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘এ পরিস্থিতির কারণে দুই থেকে আড়াই লাখ শিক্ষার্থী তাদের পরিবারসহ আরো দারিদ্রের মুখে পড়েছে। তাদের জন্য ঋণ এবং বৃত্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। কর্মজীবী যুব জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ বেকার হয়ে পড়ার শংকা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। তাই তরুনদের নিয়ে সরকারের সব পরিকল্পনা আরো বাড়ানো হোক।’ সেই সাথে সরকারি চাকরিসহ সব ধরনের চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর সুপারিশ্ও করেন তিনি।


অনেক তরুন এই অনলাইন সেমিনারে অংশ নিয়ে তাদের মতামত, পরিকল্পনা, দাবি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শেষে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সবার প্রতি আহবান রাখেন এই দূর্যোগকে সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের। তিনি বলেন, ‘আমরা কোভিড-১৯ পূর্ব পৃথিবীতে ফিরে যেতে চাইনা আর। আমরা চাই, জলবায়ু সংকটকে আরো দৃড়ভাবে মোকাবিলা করে, একটি জবাবদিহিতামূলক সমাজ যেখানে সুশাসন নিশ্চিত হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ