Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদেশিদের চাপের মুখে

করোনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশে সরকারের বাধা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে সারাবিশ্বেও প্রশংসা কুড়িয়েছে সরকার। কক্সবাজারে এখন স্থানীয়দের চেয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা বেশি। এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সেখানে নতুন করে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না সরকার। কিন্তু জাতিসংঘ, পশ্চিমা দেশসহ বিভিন্ন মানবাধিকারকর্মী এবং এনজিও কর্মকর্তারা ক্যাম্পগুলোতে প্রবেশের অনুমতি চাইছে। সরকারকে এ নীয়ে রীতিমতো চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য করোনা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ছাড়া অন্য কাউকে ক্যাম্পে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

নিরাপত্তার খাতিরেই শরণার্থী শিবিরে নতুন কাউকে ঢুকতে না দেয়ায় সাগরে ভাসা রোহিঙ্গা ২৯ সদস্যকে গত শনিবার নোয়াখালীর ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে। মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে করোনামুক্ত আর সেখানে জায়গা না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জানা যায়, যুক্তরাজ্যসহ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ৬৩ জন সদস্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশের অনুমতি চায়। অনুমতির আবেদনপত্রে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা মহামারি ছড়ালে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো করোনামুক্ত রয়েছে। তাদের এখানে কোনো প্রয়োজন নেই। অতপর ইউএনএইচসিআর কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শরণার্থীদের চিকিৎসার বদলে ক্যাম্পে থাকতে দেবার অনুমতি চায়। সে প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করা হয়। অবশ্য ঢাকা ৬৩ জনের তালিকা থেকে মাত্র ১৯ জনকে ক্যাম্পে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, কিছু বিদেশী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। ওখানে ঢুকতে চায়। আবার ইউএনএইচসিআর এবং ব্রিটেন আমাদের খুব চাপ দিচ্ছে, তারা আমাদেও দেশে লোক নিয়ে আসবে। আমাদের ক্যাম্পগুলো এখনো করোনামুক্ত। তারা বলছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা মহামারি হলে ওনারা চিকিৎসা দেবেন। আমরা বলেছি, কোনো দরকার নেই। ক্যাম্পগুলোতে এখনো মহামারি হয়নি। ওনারা বলছেন, তারা নাকি করোনাভাইরাস সম্পর্কে এক্সপার্ট (অভিজ্ঞ)। আমরা যাচাই কওে দেখলাম, ওনাদের মধ্যে ১৯ জন ডাক্তারি লাইনের। আমরা তাদের ক্লিয়ারেন্স করলাম। আমরা বলেছি, এই মুহূর্তে আমাদের অন্যদের দরকার নেই। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় জাতিসংঘ সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বললাম প্লেন নেই, ওনারা বলল, তারা চার্টার্ড করে নিয়ে আসবে। খুব জরুরি। আমরা বলেছি আপনারা আসলে ঢাকায় হোটেলে ওঠেন, কোয়ারেন্টাইট করবেন ১৪ দিন, তারপর কক্সবাজার যাবেন। তারা এতে খুব অসন্তুষ্ট।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ৮ এপ্রিল কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ‘লকডাউন’ করা হয়। করোনা সংক্রমনের বিস্তার রোধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো ঘনবসতিপূর্ণ হওযায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ইউরোপ, আমেরিকা নিজেদের দেশে শরণার্থীদের যায়গা দেন না। অথচ রোহিঙ্গাদের যায়গা দেখার জন্য বাংলাদেশের ওপর চাপ দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, কিছুদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিটেন ও আমেরিকার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন আপনারা রোহিঙ্গাদের যায়গা দিচ্ছেন না কেন। আপনারা যায়গা দিলে আমরা বিমানে করে তাদের পাঠিয়ে দেব। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ