মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এখনও কার্যকর কোন ভ্যাকসিন বাজারে আসেনি। এমন সময়ে আশা দেখাচ্ছে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভির। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এটি সাফল্য দেখিয়েছে বলে দাবি করছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। এ কারণে রেমডেসিভির দিয়ে মুনাফার আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে জুনের মধ্যেই তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফল জানাতে পারে অক্সফোর্ড। এই ভ্যাকসিনের ব্যাপক উৎপাদনে যেতে রাজি হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজিনিকা।
বুধবার আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিজের প্রধান অ্যান্থনি ফৌসি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিসংখ্যান বলছে, করোনা আক্রান্তদের উপরে রেমডেসিভির প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে যে তারা দ্রæত সুস্থ হয়ে উঠছেন।’ এক্ষেত্রে অন্য ওষুধের ক্ষেত্রে রেমডেসিভির প্রয়োগে সুস্থতার হার ৩০ শতাংশ বেশি। মানব দেহের কোষের মধ্যে প্রবেশ করে ভাইরাসের বৃদ্ধি রুখে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রেমডেসিভির আছে বলেও দাবি করেছেন শীর্ষ এই মার্কিন বিশেষজ্ঞ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে যে, ২০০৮ সালের মহামন্দার পর প্রথমবারের মতো মোট দেশীয় উৎপাদনে সর্বোচ্চ ত্রৈমাসিক সঙ্কোচন ঘটার পর, রেমডেসিভির’র ইতিবাচক সংবাদটি দেশটির শীর্ষ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠনগুলোর প্রতিনিধি এসএন্ডপি-৫০০ কে শেয়ার বাজারে প্রায় ৩ শতাংশ মুনাফা করতে সহায়তা করেছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই মুহ‚র্তে রেমডেসিভির ফেস থ্রি ট্রায়াল হয়েছে। আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়ার মোট ৬৮টি স্থানে ১ হাজার ৬৩ জন করোনা আক্রান্তের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে রেমডেসিভির প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি। করোনা চিকিৎসায় রেমডেসিভির প্রয়োগের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভিরের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালাচ্ছে ওই ওষুধের নির্মাতা সংস্থা গিলেড সায়েন্সেস। মানুষের শরীরে এই ওষুধের প্রভাব কী হচ্ছে সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ফাঁস হয়ে গেছে বলেই দাবি করেছিল সংবাদ মাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২৩৭ জন রোগীর ১৫৮ জনকে ওষুধ খাইয়ে দেখা গেছে তাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। যদিও এই রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে মুখ খোলেনি গিলেড সায়েন্সেস। তবে রেমডেসিভির ওষুধ নিয়ে প্রখ্যাত ল্যানচেটে জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মহামারি করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরের দুই শতাধিক কোভিড-১৯ রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে তারা দেখেছেন, রেমডিসিভির প্রয়োগে উল্লেখ করার মতো কোনো সুফল নেই। এর আগে চীনেও এই ওষুধের প্রথম পরীক্ষায় তেমন কোন সুফল মেলেনি বলে দাবি করেছিল চিকিৎসকরা।
এদিকে, ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরিকৃত করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটির ব্যাপক উৎপাদনে যেতে রাজি হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজিনিকা। ভ্যাকসিনটির ব্যাপক উৎপাদনের জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে ব্রিটেন ও সুইডেনভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারক এই কোম্পানি।
গত সপ্তাহে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের তৈরি ভ্যাকসিনটি মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষার ফল আগামী জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ের দিকে আসার কথা রয়েছে। অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয়ার বিষয়টি যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে চুক্তি অনুযায়ী- যুক্তরাজ্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাকসিনটি পাবে। ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এই চুক্তিকে বিশাল শুভ সংবাদ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই চুক্তির বিস্তারিত বিষয় চ‚ড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পরীক্ষার ফল জুনে আসার পরপরই ভ্যাকসিনটি ব্যাপক পরিসরে উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে অ্যাস্ট্রাজিনিকা। অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজিনিকা বলছে, এই উদ্যোগটি মুনাফা লাভের জন্য নয়। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র উৎপাদন এবং বিতরণের ব্যয় বিনিময় হবে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।