Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রাণ ফিরে পাচ্ছে সুন্দরবন

আবু হেনা মুক্তি : | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১২:০৬ এএম

প্রাণিকূলের পাশাপাশি ভিন্ন আমেজ ও সজীবতায় ফিরেছে বনের বৃক্ষলতাও। জেগে উঠেছে প্রকৃতি। প্রাণ ফিরে পাচ্ছে সুন্দরবন। এ যেন নতুন এক সুন্দরবন! বনের ভেতরে নেই মানুষের কোলাহল, নেই নৌযান চলাচলের বিকট শব্দ। এ অবস্থায় নদী ও খালের চরাঞ্চলে দেখা মিলছে বাঘ, হরিণ, বানর, বন মোরগ, শজারু, সাপ, পাখিসহ নানা ধরনের বন্যপ্রাণীর। নদী ও খালে ভেসে বেড়াচ্ছে কচ্ছপ, কুমির, শুশুক, ডলফিনসহ নানা জলজ প্রাণি।

পৃথিবীর বৃহত্তম এ ম্যানগ্রোভ বন দেখতে সারা বছরই থাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড়। বন ঘিরে থাকে জেলে, মৌয়ালসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর আনাগোনা। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বর্তমানে পর্যটক ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বন বিভাগ। জেলে প্রবেশের অনুমতিও করা হয়েছে সীমিত।

বন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এতদিন মানুষের কারণে যেসব প্রাণির অহরহ দেখা মিলত না, এখন পর্যটকবিহীন সুন্দরবনে সেসব প্রাণির ছোটাছুটি আর কোলাহল চোখে পড়ার মতো। নদী-খালের চরাঞ্চলে নির্ভয়ে বিচরণ করছে হরিণ, বানর, বন মোরগ, শূকরসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণি। শিকারের সন্ধানে ছুটে চলছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বিষাক্ত সাপ, কাঁকড়া ও হরেক রকম পাখির আনাগোনা বেড়েছে। নদীর বাঁকে শিকারের অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে আছে নোনা জলের রাক্ষুসে কুমির। গাছে-তরুলতায় ফুল ফুটেছে, জানান দিচ্ছে মধু মাসের। মানুষের কোলাহল থেকে আড়ালে থাকা ম্যানগ্রোভ বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ এখন ভিন্নরূপে সেজেছে। নদীর মোহনায় দেখা মিলছে শুশুক ও ইরাবতি ডলফিনের।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ মোকাবিলা করে টিকে আছে সুন্দরবন। এ বনের প্রকৃতি ও প্রাণিক‚লের ওপর রয়েছে মানুষের নিষ্ঠুর আচরণ। নিয়মনীতি না মেনে বনের ভেতরে পর্যটক, পেশাজীবীসহ বৈধ ও অবৈধ প্রবেশকারীদের পদচারণা, বৃক্ষ নিধন ও বন্যপ্রাণি হত্যা-পাচারসহ নানা কারণে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। এতোদিন সরকারি-বেসরকারি নানামুখী তৎপরতা ও উদ্যোগ নেয়া হলেও মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পায়নি সুন্দরবনের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

সূত্র আরও জানায়, ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনের ভরা মৌসুম থাকে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে গত ফেব্রুয়ারি থেকে সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটক একেবারেই কমে যায়। একই সঙ্গে দেশিয় পর্যটকের সমাগমও কমতে থাকে। এ অবস্থায় করোনা ঝুঁকি এড়াতে গত ১৯ মার্চ থেকে পর্যটকদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থান করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, চকিখালী ও হিরন পয়েন্ট এলাকা এখন পর্যটকশূন্য। এ নিষেধাজ্ঞা সাময়িক সময়ের জন্য বলবৎ থাকবে বলে জানান পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বেলায়েত হোসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুন্দরবন

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ