Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘরে বসেই মিলছে পছন্দের ইফতার

অনলাইন-ফেসবুকে বিক্রি

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০২ এএম

ভোজনরসিক বাঙালির কাছে রমজানের ইফতার মানেই অন্যরকম উৎসব। ছোলা, মুড়ি, পেয়াজু, জিলেপি, বুন্দিয়া, নানা পদের চপ, বেগুনি, হালিম, হরেক রকমের মিষ্টান্নসহ আরও কত পদের খাবার নিয়েই থাকে ইফতারের আয়োজন। বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, পরিচিতজনদের নিয়ে স্কুল, কলেজ, খেলার মাঠ, হাটে-বাজারে, অফিস সর্বত্রই একত্রে ইফতারে বসেন রোজাদাররা। বাহারি সব খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারাও। বছরের পর বছর ধরে এমন চিত্রই দেখে এসেছেন দেশের মানুষ। তবে এবার ভিন্ন এক পরিবেশে রমজান এসেছে রোজাদারদের মাঝে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে লকডাউন ও দোকানপাট বন্ধ থাকায় ইফতার নিয়ে বিপাকেই পড়েন তারা। এই সুযোগে অনলাইন মাধ্যমে বিক্রি বেড়েছে ইফতার সামগ্রীর। বিভিন্ন অনলাইন ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান সাধারণ ছুটির কারণে কিছুদিন খাবার বিক্রিতে মন্দার দেখা পেলেও রমজানের শুরু থেকেই ফের ব্যস্ততা ফিরে পেয়েছে।

নগরবাসীকে ইফতার বাজারের সেবা দিতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোও সব ধরনের সেবা দিচ্ছে আগের চেয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে। তাই রমজানে যারা স্টার হোটেলের ইফতারি বা কলাবাগানের মামা হালিম খুব বেশি‘মিস’ করছেন, তারাও ঘরে বসে খেতে পারবেন রাজধানীর নামকরা দোকানের ইফতারি। খাবার সরবরাহ করে এমন বেশ কিছু অ্যাপ চালু আছে ঢাকা, চট্টগ্রাম বা সিলেটের মতো বড় বড় শহরে। রেস্তোরাঁর তৈরি করা খাবার দ্রুত গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দেয় তারা। সহজ ফুডের পরিচালক ফারজানা শারমীন বলেন, অনেক জায়গার এক বা একাধিক ইফতারির সুনাম আছে। লকডাউন বা কোয়ারেন্টিনে থাকায় সেসব খাবার খেতে ইচ্ছা করলেও বাইরে যাওয়া নিষেধ। তাই হালিম বা জিলেপির মতো খাবারগুলো গ্রাহকের কাছে নিরাপদে, দ্রুত পৌঁছে দিচ্ছি আমরা।
সহজ ফুড ছাড়াও উবার ইটস, ফুডপান্ডা, পাঠাও ফুডের মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইফতারি অর্ডার করা যাবে নির্দিষ্ট রেস্তোরাঁ থেকে। এ ছাড়া কিছু রেস্তোরাঁ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ফেসবুক বা মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করে ইফতারি বা রাতের খাবারের অর্ডার নিয়ে গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন। ফলে কেএফসি, পিজ্জা হাট, গ্লোরিয়া জিনস, হারফি, মিনা সুইটস, প্রিমিয়াম সুইটস ও স্টার হোটেলের তৈরি ইফতার এখন ঘরে বসেই পাচ্ছেন রোজাদাররা।

ফুড পান্ডার বিক্রয়কর্মী আবু সালেহ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না, ফলে রোজার প্রথম দিনই অনলাইনে ইফতারির অর্ডার করেছেন অনেকে। রোজার মাসে মনে হয় অনলাইনে বিক্রি বাড়বে।
এসব প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনেকেই বাসায় তৈরি করা ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছেন বিভিন্ন ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। এসব পেজে সকালের মধ্যেই ইফতারের অর্ডার নেয়া হচ্ছে বিকেলের মধ্যে তৈরি করে কেউ বা গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইফতার, আবার অনেকের বাসায় পৌঁছে দিচ্ছেন বিক্রেতা নিজেই।

নিকুঞ্জ এলাকায় অনলাইন অর্ডারের ভিত্তিতে ইফতার সরবরাহ করছে ব্যাচেলরস রেস্টুরেন্ট। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজে ৫শ’র বেশি মানুষের ইফতার সরবরাহ করছে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার তৈরি ও সরবরাহ করা হয় বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মো. নাঈম হাসান। তিনি বলেন, তার রেস্টুরেন্টে রান্না ঘরে যারা কাজ করে তারা এক ফ্লোরে, ডেলিভারি যারা দেয় তারা আরেক ফ্লোরে থাকে। কেউ কারো সংস্পর্শে আসেন না। এছাড়া অন্যান্য যে স্বাস্থ্যবিধি তা মেনেই খাবার ডেলিভারি দেয়া হয়। শবনম কিচেন নামের একই ফেসবুক পেজ থেকে অর্ডার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন মানুষের কাছে ইফতার সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন একজন গৃহিণী। এর পরিচালক শবনম মুস্তারি জানান, অনেকেই বাইরের খাবার পছন্দ করেন না, ঘরের খাবার খেতে যারা পছন্দ করেন তারা এই পেজের মাধ্যমে অর্ডার করেন। কেউ কেউ গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে খাবার নিয়ে যায়, আবার অনেকের কাছে পৌঁছে দিতে হয়।

পান্থপথের মাদল খাবারঘর প্রায় ৩০ ধরনের ইফতারি তৈরি করছে। হোম ডেলিভারি ও পার্সেল সার্ভিসের মাধ্যমে সেসব খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে কলাবাগান, ধানমন্ডি, রাজাবাজার, কাঁঠালবাগান, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার থেকে দিলু রোড পর্যন্ত। এছাড়াও ঢাকাইয়্যা ইফতার বাজার, অনলাইন ইফতার বাজারসহ আরো অনেক নামেই অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে ইফতার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ