পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গার্মেন্টস খুলে যাওয়ায় সারাদেশ থেকে দলবেঁধে বিকল্প যানবাহনে ঢাকায় আসছেন লাখ লাখ শ্রমিক। গতকাল ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-মানিকগঞ্জ, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক দিয়ে দলে দলে গ্রার্মেন্টস শ্রমিক ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করেছেন। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাদের ফোন করে কর্মস্থলে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। চাকরি হারানোর ভয়ে তিন-চারগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি, হ্যালো বাইক, ভ্যান-রিকশা, ব্যাটারিচালিত গাড়িতে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় এসেছেন। অন্যদিকে বিজিএমইএ গতকালও ঢাকার বাইরে অবস্থানরত শ্রমিকদের এখন ঢাকায় না আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, গ্রামে থাকলেও তাদের বেতন পৌঁছে দেয়া হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, করোনা আশঙ্কা নিয়ে হাজারো ভোগান্তি নিয়ে ঢাকায় ফেরা শ্রমিকরা সত্য বলছেন, নাকি বিজিএমইএ? নাকি গার্মেন্টস মালিকদের বড় অংশ বিজিএমইএ’র নির্দেশ মানছেন না?
গোটা বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসের ভয়ে কাঁপছে, তখন গার্মেন্টস মালিক-শ্রমিকরা থোড়াই কেয়ার করছেন। দেশের কোটি কোটি মানুষকে করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে ফেলে সামাজিক দূরত্ব ভঙ্গ করছেন। অথচ সরকার নানাভাবে করোনা সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিবিপির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, গার্মেন্টস খুলে দিয়ে গোটা জাতিকে অন্তর্ঘাতের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। তিনি শ্রমিকদের ৩ মাসের বেতন দিয়ে এ সময় ছুটি দেয়ার দাবি জানান।
এক সময় পরিবহন সেক্টর সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। সরকারের পরিবর্তন হলে শ্রমিক নেতাদের মুখের পরিবর্তন হয়; কিন্তু সেক্টরটি সরকারের আদেশ-নির্দেশ উপেক্ষা করে। কঠোর পদক্ষেপ নিলেই পরিবহন ধর্মঘট করে সরকারকে ভয়ের মধ্যে ফেলে দিত। বিশেষ করে গত কয়েক বছর ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা নেতা শাজাহান খান, খন্দকার এনায়েতউল্লাহ ও জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গা পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করায় শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে যায়। করোনাকালে এখন গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকদের দেখা যাচ্ছে বেপরোয়া। সরকারের নির্দেশকে তারা থোড়াই কেয়ার করছেন। সরকারের মন্ত্রী টিপু মুন্সি, শাহরিয়ার আলমসহ দুই ডজন এমপি গার্মেন্টস মালিক হওয়ায় মূলত এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সচিবালয়ে গত ২৮ এপ্রিল বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, গার্মেন্টস মালিকরা জানিয়েছেন, ঢাকায় যারা রয়েছেন সেই শ্রমিকরা কাজ করবেন; গ্রাম থেকে শ্রমিক আনা হবে না। কিন্তু গতকাল সারাদেশ থেকে শ্রোতের মতো শ্রমিক নানা পন্থায় ঢাকায় এসেছে।
রংপুর বিভাগের জেলাগুলো থেকে রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিনই আসছেন শত শত মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ট্রাকে করে অভিনব পদ্ধতিতে ঢাকা আসছেন। গঙ্গাচড়া থেকে আসা মমতাজ উদ্দিন বলেন, আমরা দালালদের মাধ্যমে জনপ্রতি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা দিয়েছি। আমাদের গাজীপুরে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। ট্রাকচালক সালাহ উদ্দিন মিয়া বলেন, পুলিশ যাতে ট্রাক না আটকায় সে জন্য সবাইকে বসিয়ে ট্রাকের ওপর পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। তারপরেও ঘাটে ঘাটে পুলিশকে টাকা দিতে হয়। একই চিত্র দেখা গেছে মানিকগঞ্জের আরিচায়। নানা পন্থায় নদী পার হয়ে শ্রমিকরা ঢাকায় আসছেন।
জানতে চাইলে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে কোনো শ্রমিক আনছি না। আনতে চাচ্ছি না। তারপরও বাস্তবতা হলো অনেকে চলে আসছেন। তাদের আমরা ডিসকারেজ করার চেষ্টা করছি। ঈদে আমরা চাচ্ছি তারা আবার গ্রামে ফিরে না যাক। ছুটি কীভাবে দেব, আমরা আরেকবার বসবো ঈদের আগে সরকারের সঙ্গে।
আইএলও করোনা থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিরাপদ রাখতে ৩টি দিক নির্দেশনা দিয়েছে। গার্মেন্টস মালিকরা কেউ সেটা মানেননি। ফলে বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা গার্মেন্টসের মালিক-শ্রমিকরা সামাজিক দূরত্ব না মেনে গোটা জাতিকে করোনাভাইরাসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।