Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেচ সুবিধা নিশ্চিতে বেড়েছে ফসল উৎপাদন

প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও সেচ উন্নয়ন প্রকল্প
সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে

মাগুরায় বিএডিসি উদ্ভাবিত সেচ নালা কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ সেচ নালা দিয়ে নদী ও খাল থেকে সহজে পাম্পের সাহায্যে জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে। আর এতে খরচ ও অনেক কম লাগছে। অল্প খরছে অধিক ফসল উৎপাদন করতে পেরে খুশি এলাকার কৃষকরা। সেচ সুবিধা নিশ্চিত হলে আগের তুলনায় ফসল উৎপাদন বাড়বে। সেচের এ সহজলভ্যতার কারণে এসব এলাকায় ফসল উৎপাদন বেড়ে কৃষকের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে এ কারণে কৃষকরা এই সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণের জোর দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ‘জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও সেচ উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায়’ জেলার মাগুরা সদর উপজেলা, শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলার ৩০টি সেচ নালা নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে ২২টিতে নদী ও খালের পানি ব্যবহার করে পাম্পের মাধ্যমে সেচ দেয়া হচ্ছে। বাকি ৮টি সেচ নালা ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব এলাকায় পাইপের মাধ্যমে প্রায় ৭০৫ হেক্টের জমিতে সেচ দিয়ে উৎপাদিত হচ্ছে ৫ হাজার ১২৫ টন অতিরিক্ত ফসল। পাম্পের সাহায্যে নদী ও খালের পানি ব্যবহার করে ২২টি সেচ নালা দিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার জমিতে সেচ দেয়ায় এসব এলাকার ভূগর্ভাস্থ পানির উপর চাপ অনেক কম পড়ছে। যা পরিবেশের জন্য যথেষ্ট সহায়ক। বিএডিসি অফিস সূত্রে জানায়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৮৯ লাখ ৩ হাজার ৭৫৯ টাকা ব্যয়ে জেলার শালিখা উপজেলা, সদর ও মাহম্মদপুর উপজেলা সদর আড়পাড়া, শতখালি, চুকিনগর হাজারাহাটি, বয়রা, ধাওয়াসীমা, কৃষ্ণপুর এবং সদর উপজেলার মঘি, শিয়াল ঝুড়ি, ফুলবাড়ি, ধর্মসীমা, উত্তর ধর্মসীমা এবং বড়শলই এলাকায় এ প্রকল্প আওতায় প্রতিটি ৯৫০ মিটার লম্বা হারে ১৫টি সেচ নালা নির্মিত হয়। পরবর্তিতে প্রকল্পটি সম্প্রসারণ নতুন করে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে নদী ও খাল তীরবর্তী এলাকায় ৯৫০ মিটার লম্বা আরো ৭টি সেচ নালা তৈরি হয়েছে। এর পাশপাশি ৬শ’ মিটার লম্বা আরো ৮টি ভূগর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণ করা হয়। ফলে এসব এলাকার কৃষকরা জমিতে স্বল্প খরচে জমিতে স্বাচ্ছন্দ্যে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করা সহজতর হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় সেচ কাজ স্থানীয়ভাবে গঠিত কৃষক সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রকল্প এলাকায় মোট ৩০টি সেচ নালায় সমান সংখ্যক কৃষক সমিতির মাধ্যমে প্রায় এক হাজার উপকারভোগী কৃষক এ সেচ সুবিধা ভোগ করছে। জমিতে সেচ দেয়ার জন্য পাম্পের যন্ত্রাংশ ও পাইপ মেরামত কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগেই করে থাকে। এ ছাড়া কৃষক সমিতির সদস্যদের বিএডিসিকে প্রতি বছর নাম মাত্র ১০ হাজার টাকা ভাড়া দেয়। মাগুরার শালিখা উপজেলা চুকিনগর গ্রামে এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী কৃষক শংকর বিশ্বাস ৪ একর, গনি মিয়া ৩ একর, গজেন্দ্র বিশ্বাস সাড়ে ৩ একর, সর্বত আলি ১ একর জমিতে সেচ দিয়ে ধান চাষ করছেন। তারা জানান, বিএডিসি নির্মিত সেচ নালা দিয়ে জমিতে সেচ দেয়া খুবই সহজ। খরচ একইবারেই কম। এটির মধ্যমে তারা সময় মত ফসলী জমিতে সেচ দিয়ে অধিক ফসল উৎপাদন করতে পারছে। জমিতে সেচ সুবিধা সহজতর হওয়ায় ফসল উৎপাদনও বাড়ছে। এ কারণে এ প্রকল্প সম্প্রসারণের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। মাগুরা জেলা বিএডিসি অফিসের সহকারি প্রকৌশলী মাজাহারুল ইসলাম জানান, মাগুরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তায়িত হওয়ায় ফসলের উৎপাদন বেড়েছে। বিশেষ করে ২২টি সেচ নালায় পাম্পের সাহায্যে নদী ও খালের পানি ব্যবহার করে সেচ দেয়ায় এসব এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ অনেকাংশে কমে গেছে। ফটকি নদী, নবগঙ্গা নদী ও খালে জমে থাকা পানি দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা জমিতে সেচ দিতে পারছে। সেচের এ সহজলভ্যতার কারণে এসব এলাকায় কৃষকের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটছে। বিএডিসি জানায়, আগামীতে এই সেচ ব্যবস্থাটির সম্প্রসারণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেচ সুবিধা নিশ্চিতে বেড়েছে ফসল উৎপাদন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ