রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগে ক্লিনিকে ভাঙচুরের চেষ্টা ওটি বয় আটক
অভ্যন্তরীণ ডেস্ক
ঢাকার সাভার ও গোলালগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় ২ গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ সংক্রান্ত আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদনÑ
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে জানান, ঢাকার সাভারে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধূর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। পালিয়ে যায় চিকিৎসকসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ক্লিনিকের ওটি বয়কে আটক করেছে। সোমবার রাতে সাভার থানা রোডে মুক্তি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিতু আক্তার (২৮) সাভারের বিরুলিয়া এলাকার মো: আসাদ উল্লাহর স্ত্রী। নিহতের স্বামী আসাদ উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, গত শনিবার বিকেলে মিতুর বুকে প্রচ- ব্যথা উঠলে দ্রুত থানা রোড এলাকায় মুক্তি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। তখন ওই ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে বলে তার অপারেশন করতে হবে জানান। সোমবার রাতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই সার্জারির ডা: কাজী সোহেল ইকবাল কাউকে কিছু না বলেই তড়িঘড়ি করে ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে চলে যায়। তখন সন্দেহ হলে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে দেখে মিতুর লাশ পড়ে রয়েছে। ভুল চিকিৎসায় মিতুর মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুললে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষও ভয়ে পালিয়ে যায়। তখন ক্ষুব্ধ স্বজনরা ক্লিনিকে ভাঙচুর করার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানার অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান জানান, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে না পাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ওটি বয় আবুল কালাম আজাদকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযাগের চেষ্টা করলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসক কাজী সোহেল ইকবালের মুঠোফোনে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক ভাঙচুর করা হয়েছে। সোমবার রাতে কাশিয়ানী উপজেলা সদরের নুরুদ্দীন মেমোরিয়াল ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পলাতক রয়েছে। জানা যায়, গত সোমবার দুপুরে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার বড়বাগ গ্রামের সৈয়দ নিয়ামূল হকের প্রসূতি স্ত্রী সম্পা বেগমকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে ক্লিনিকে ওটিতে নিয়ে সিজার করা হয়। অপারেশন টেবিলেই রাত ৮টার দিকে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। গৃহবধূর মৃত্যুর খবরে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ক্লিনিক ভাঙচুর করে। অন্যদিকে গত ১৫ জুলাই এ ক্লিনিকে একটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে অনভিজ্ঞ আয়াকে দিয়ে বাচ্চা ডেলিভারী করানোয় ওই শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পরই মারা যায়। মৃত্যু বরণকারী প্রসূতি সম্পা বেগমের স্বামী সৈয়দ নিয়ামূল আলী অভিযোগ করে বলেন, কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মেনোয়ার হোসেন ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রায়হান ইসলাম ইমন সিজার করেন। সিজার করার সময় অসাবধানতা বসত ডাক্তারা প্রসূতির অন্য নাড়ি কেটে ফেলেন। চিকিৎসকদের উদাসীনতার কারণেই আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চিতা গ্রামের পলাশ শেখের স্ত্রী আরিফা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত ১৫ জুলাই সন্তান প্রসবের জন্য আমি নুরুদ্দীন মেমোরিয়াল ক্লিনিকে ভর্তি হই। ক্লিনিকের অনভিজ্ঞ আয়া লিপি বেগম ও ক্লিনিকের মালিক মিহির বিশ্বাস আমার বাচ্চা লেভিভারী করে। ডেলিভারীর সময় বাচ্চার মাথায় প্রচ- চাপ লাগে। এ কারণে ডেলিভারীর পরপরই আমার বাচ্চা মারা যায়। প্রভাবশালীদের দিয়ে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্লিনিক থেকে বের করে দেয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৪/৫ বছর আগে কাশিয়ানী উপজেলা সদরে নুরুদ্দীন মেমোরিয়াল ক্লিনিক নামে একটি ক্লিনিক ব্যবসা শুরু করে। তখন মাগুরা জেলার মিহির বিশ্বাস এ ক্লিনিকের ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন। ৩ বছর আগে মালিক পক্ষ ক্লিনিক ব্যবসা ছেড়ে দিতে চাইলে ম্যানেজার মিহির বিশ্বাস ক্লিনিকটি ভাড়া নেন। তারপর থেকে তিনি ক্লিনিকটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় চিকিৎসক, আয় ও মিহির বিশ্বাস নিজে চিকিৎসা প্রদান করে অনেক অঘটনের জম্ম দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। ক্লিনিকের মালিক মিহির বিশ্বাস সোমবার রাত থেকে গা ঢাকা দেয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।