Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামে সেফটিক ট্যাংক নির্মাণের সময় মাটি চাপা পরা দু’শ্রমিককে জীবন্ত উদ্ধার

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২০, ৮:৫২ পিএম

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের একটি বাড়িতে সেফটিক ট্যাংকের গর্তে কাজ করার সময় ২০ফিট নীচে মাটি ধ্বসে চাপা পরা দু’নির্মাণ শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। রুদ্ধশ্বাস ৫ঘন্টা পর তাদেরকে জীবিত উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস একটি টিম। গুরুতর আহত আমিনুল ইসলাম নামে এক শ্রমিককে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ছিনাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুল হক নুরু জানান, শুক্রবার সকালে ইউনিয়নের ছিনাইহাট বড়গ্রামের ময়েন উদ্দিনের পূত্র মোজাম্মেলের আধাপাকা বাড়িতে কাজ করছিল একই গ্রামের মজুল হকের পূত্র আমিনুল ইসলাম (২৮) ও নব্বার আলীর পূত্র মোক্তার আলী (২৮)। তারা বাড়িতে সেফটিক ট্যাংকের জন্য ২০ফিট গর্তের নীচে ইটের কাজ করছিল। দুপুর সোয়া ১১টার দিকে হঠাৎ উপরের দিকের মাটি নীচে ধ্বসে পরে। এসময় নীচে কর্মরত শ্রমিক আমিনুল ইসলামের গলা পর্যন্ত মাটি চাপা পরে। এসময় আতংকিত আমিনুলকে উদ্ধার করতে নীচে নামে মোক্তার আলী। পরে দ্বিতীয় দফা মাটি ধ্বসে পরার ঘটনায় মোক্তার আলীও গর্তে আটকে পরে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি গাড়িতে ১০ সদস্যের একটি টিম এসে তাদেরকে উদ্ধার অভিযানে নামে। টানা ৫ঘন্টার চেষ্টায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাটি চাপা দুই ব্যক্তিকে জীবন্ত উদ্ধার করতে সমর্থ হয়।

কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারি পরিচালক মনোরঞ্জন সরকার ও সিনিয়র স্টেশন অফিসার খুরশিদ আনোয়ার জানান, সেফটিক ট্যাংকের গর্তে একজন গলা পর্যন্ত মাটি চাপা পরে। অপরজন তাকে উদ্ধার করতে নেমে নিজেও মাটির নীচে আটকে পরে। এসময় চেনপুলি দিয়ে মোক্তার আলীকে প্রথমে উদ্ধার করা হয়। পরে আমিনুলকে উদ্ধার করতে তার শরীরের চারদিক থেকে বালতি দিয়ে মাটি সড়িয়ে গর্তে পাইলিং-এর ব্যবস্থা করা হয়। দীর্ঘসময় পর কোমড় পর্যন্ত মাটি সড়ানো সম্ভব হয়। এসময় আমিনুলকে চেনপুলিতে বেঁধে তোলার সময় মাঝখানে এসে বেল্ট ছিঁড়ে আবারো নীচে পরে যায় আমিনুল। পরে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে বেল্ট এনে আবারো চেষ্টা করলে পূণরায় বেল্ট ছিঁড়ে নীচে পড়ে যায় সে। পরে দড়ি দিয়ে বেল্ট তৈরী করে রুদ্ধশ^াস ৫ঘন্টা চেষ্টার পর আমিনুলকে গর্তের নীচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এটি আমাদের জীবনে একটি নতুন অভিজ্ঞতা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: রেদওয়ান ফেরদৌস সজীব জানান, আহত আমিনুলকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। সে এখন আশংকামুক্ত। পুরোপুরি সুস্থ হতে আরো বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ