Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বল শাইন করাতে লালার বদলে ঘাম!

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ৭:২৪ পিএম

ক্রিকেটারদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এর মধ্যেই বলে লালা মাখানো, আম্পায়ারদের কাছে সোয়েটার, চশমা রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শোয়েব আখতারের দাবি, বলে লালা মাখানো যে অস্বাস্থ্যকর, এই অভ্যাসে যে বিধিনিষেধ আরোপ করা দরকার, তা সবার আগে তিনিই বলেছেন।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলে লালা মাখানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শোয়েব বলেছেন, ‘প্রায় দশ-এগার বছর আগে এক বোর্ড সভায় আমি এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। সে সভায় কে কে উপস্থিত ছিলেন, আমি তাঁদের নাম বলব না। আমি তাঁদের বলেছিলাম, একটা ম্যাচে একাধিক খেলোয়াড় বলের সংস্পর্শে আসে। এখন কোনো এক খেলোয়াড়ের যদি হাত বা মুখের রোগ থাকে, তাহলে তার কাছ থেকে ঐ রোগের জীবাণু বলের মাধ্যমে অন্য সব খেলোয়াড়ের কাছে ছড়িয়ে পড়বে। এটা বেশ বিপজ্জনক। আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, তারা আমার এই প্রস্তাব নিয়ে হাসাহাসি করা শুরু করে দিল। পরে সেই প্রস্তাব বাতিল করে দিল। আমাকে বলা হল এসব ভুলে যেতে।’

করোনাভাইরাসের কারণে এখন শোয়েবের সেই প্রস্তাবই নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ক্রিকেটে। সুইং পেতে পেসারদের লালা ব্যবহারে অভ্যাস আজকের নয়। গ্রিপ করতে লালা মাখিয়ে থাকেন স্পিনাররাও। মোট কথা, একজন বোলার মুখের লালা ব্যবহার করবেন না, তা ভাবা কঠিন।

কিন্তু এখন থেকে এই লালা মাখানোর ব্যাপারে সম্ভবত ভাবতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার জেসন গিলেস্পিও কিছুদিন আগে এই কথাই বলেছিলেন। মুখের লালা ও কাশির সঙ্গে যে সুক্ষ্ম জলকণা বেরিয়ে আসে সেই ‘ড্রপলেট’ থেকে ছড়ায় ভাইরাসের সংক্রমণ। সামনে ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার কথা ভেবেই বোলারদের এ অভ্যাসে লাগাম টানা হতে পারে বলে মনে করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ পেসার। গিলেস্পি মনে করেন, করোনা-কাল শেষে ক্রিকেট শুরু হলে তখন বলে লালা মাখানোর অভ্যাসে হস্তক্ষেপ করতে পারে আইসিসি।

বলে লালা মাখানো নিয়ে এর আগে সংশয় প্রকাশ করেছেন ভারতের পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও জশ হ্যাজলউড। করোনা থেকে সতর্ক থাকতেই বলে মুখের লালা মাখানোয় বিরতি দেওয়ার কথা বলেছিলেন এই ভারতীয় পেসার। সাবেক ভারতীয় পেসার প্রসাদ বিকল্প একটি উপায়ও বের করেছেন। তারমতে শরীরের ঘাম দিয়ে বিকল্প কাজ চালানো যেতে পারে, ‘ক্রিকেট চালু হলে প্রথম কয়েকমাস থুতুর বদলে ঘাম ব্যবহার করা যায় বল শাইনের জন্য।’

তবে ঘাম তো আর সবার সমান নয়। হরমোন জনিত কারণে ঘামের মাত্রা হয় ভিন্ন। আবার শীত প্রধান কন্ডিশনে শরীর থেকে ঘাম বেরোয় কম। প্রসাদের মতে দলের মধ্যে যে বেশি ঘামে তাকেই নিতে হবে এই দায়িত্ব, ‘যার ঘাম বেশি হয় তাকেই এই ভার নিতে হবে। অনেকেই যেমন কম ঘামে। আমার যেমন অতো ঘাম হয় না। কিন্তু আমাদের মধ্যে রাহুল দ্রাবিড় অনেক ঘামতো।’

গিলেস্পর আবার সংশয় আছে এই পন্থা নিয়ে। থুতুতে যেভাবে বল শাইন করা যায় ঘামে তা নাও হতে পারে বলে শঙ্কা তার, ‘থুতু দিয়ে বল শাইন করলে যে সুবিধা মেলে, ঘামে কী আর তা হবে? আমার জানা নেই!’ ভারতের আরেক সাবেক পেসার প্রবীর কুমার বলছেন, যত সমস্যাই হোক কিছুটা ছাড় দিয়েই শুরুর দিকে থুতু ব্যবহার করা উচিত নয়, ‘ক্রিকেট চালু হলে থুতুর ব্যবহার প্রথম কয়েক মাস একদম বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এটা সত্য থুতু অনেক কার্যকর। আমি যেমন অনেক শাইন করতাম, তাতে স্যুয়িং মিলত। অফ স্পিনারদের জন্যও শাইন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঝুঁকির ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে।’

করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাঝপথে স্থগিত হয়ে যাওয়া সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দেখা গেছে এই দৃশ্য। দুদলের বোলাররা বল শাইনে থুতুর বদলে ঘাম ব্যবহার করেছিলেন সেদিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ