Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমেরিকায় করোনায় মৃত্যু ৪০ হাজার ছাড়াল

শনাক্ত : ২৪,৪৫,৪০১ মৃত : ১,৬৮,৭৭৪ সুস্থ : ৬,৪২,৬৪২ : ইউরোপে আশার আলো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫৩ পিএম

আমেরিকায় করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৪০,০০০ ছাড়াল। বর্তমানে এই সংখ্যাটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আমেরিকার ঠিক পরেই যে দেশে করোনার ছোবল সবচেয়ে বেশি, সেই ইতালির মৃতের সংখ্যার থেকে ট্রাম্পের দেশের মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। এদিকে, আশার আলো দেখছে ইউরোপ। সেখানে সংক্রমণ অনেকটাই কমে এসেছে। গতকাল রাত পর্যন্ত সারা বিশে^ কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছেন ২৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪০১ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭৪ জনের। আর চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৪২ হাজার ৬৪২২ জন।
গতকাল রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রে ৭৪১, যুক্তরাজ্যে ৪৪৯, ইতালিতে ৪৫৪, স্পেনে ৩৯৯, বেলজিয়ামে ১৪৫, ইরানে ৯১, হল্যান্ডে ৬৭, রাশিয়ায় ৪৪, সুইডেনে ৪০ মেক্সিকোয় ৩৬, ব্রাজিলে ২২, পর্তুগালে ২১, ফিলিপাইনে ১৯ এবং অস্ট্রিয়া ও রোমানিয়ায় ১৮ জনের।
গত ২৯ ফেব্রæয়ারি প্রথম আমেরিকায় করোনা ধরা পড়ে। তারপর থেকে ক্রমেই লাফিয়ে বেড়ে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। ৬ এপ্রিলের মধ্যেই সংখ্যাটা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তবে সেই সংখ্যাটা ২০ হাজারে পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র ৬ দিন। মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার থেকে বেড়ে ৪০ হাজার ৬২০ হয়েছে মাত্র চার দিনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৯৯৭ জনের। জন হপকিংসের রিপোর্ট বলছে, আমেরিকার ঠিক পরেই থাকা করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বর্তমানে ২৩,৬৬০।
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখেও আমেরিকা বিশ্বে অন্যান্য দেশের থেকে অনেক এগিয়ে। সেখানে বর্তমানে আক্রান্ত মোট ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৩ জন। গত ১৩ দিনে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নিউ ইয়র্ক। সেখানে ইতোমধ্যেই ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকার মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা স্পেনের থেকে প্রায় চার গুণ বেশি। সেখানে আক্রান্ত ২ লাখ ২১০ জন।
তবে আশার আলো দেখছে ইউরোপ। রোববার গত এক মাসের মধ্যে এক দিনে সব চেয়ে কম মৃত্যু ঘটেছে স্পেনে। এখনও পর্যন্ত স্পেনে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২০ হাজার। ইটালিতেও আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন কমছে। এখনও পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৬৬০ জনের। জার্মানিসহ ইউরোপের বহু দেশেই ধীরে ধীরে জীবনযাত্রা স্বাভাবিকের পথে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা চলছে। জার্মানিতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার কড়াকড়ি থাকলেও একটি একটি করে নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে। ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যেও করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো।
আশার আলো চীনেও। গত দুই দিনে সেখানে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। গত তিন দিনে দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কুড়ির নীচে নেমে গিয়েছে। মালয়েশিয়া পরীক্ষামূলকভাবে আগামী ১৮ মে এক দিনের জন্য পার্লামেন্টের অধিবেশন ডেকেছে। অস্ট্রেলিয়ায় বেশ কিছু অর্থনীতিবিদ সরকারের কাছে চিঠি লিখেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, লকডাউন না তুললে অর্থনীতি ধসে পড়বে। কিন্তু লকডাউন তুললেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
ইউরোপ এবং অ্যামেরিকায় সামান্য স্বস্তির ছবি দেখা গেলেও ভারতীয় উপমহাদেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ বলছেন, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহ সব চেয়ে ভয়ঙ্কর হতে পারে। বস্তুত গত এক সপ্তাহে ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। প্রতিদিনই সংখ্যাটি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তানে আক্রান্ত আট হাজার ৩৮৪, মৃত ১৬৮ জন।
১৩ হাজার কোটি পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি জার্মানির
করোনাভাইরাসের কারণে চীনের কাছে ১৩ হাজার কোটি পাউন্ডের ক্ষতিপূরণ চেয়েছে জার্মানি। করোনা মহামারির জন্য বেইজিংকে দায়ী করে সর্ববৃহৎ জাতীয় পত্রিকা ‘বিল্ড’-এ প্রকাশিত একটি মন্তব্য প্রতিবেদনে এমন দাবি জানানো হয়েছে। একই কারণে এরই মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স, বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। তার সঙ্গে যোগ দিলো জার্মানি। তাদের দাবি, চীনের উহান থেকেই করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি এবং বিষয়টিকে চীন ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চেয়েছিল। এ ছাড়া তারা করোনায় মৃতের সংখ্যাকে অনেক কম করে দেখিয়েছে। এরই মধ্যে উহানের একটি ল্যাবরেটরি থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে- এমনটা বিশ্বাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তদন্ত শুরু করেছে। সূত্র : ওয়াল্ডমিটার্স ও আল-জাজিরার।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২১ এপ্রিল, ২০২০, ৮:৩১ এএম says : 0
    গতকাল রাত পর্যন্ত সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছেন ২৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪০১ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭৪ জনের। আর চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৪২ হাজার ৬৪২২ জন।সারা পৃথিবীতে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী আমেরিকায়, সেখানে এখন পর্যন্ত মোট ৪০ হাজার ৬২০ এর মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকার ঠিক পরেই থাকা করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বর্তমানে ২৩,৬৬০। এখনও পর্যন্ত স্পেনে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২০ হাজার। সারা বিশ্বের কথা চিন্তাকরলে কোভিড-১৯ এক ভয়াবহ মহামারীতে রূপায়িত হয়েছে। বাংলাদেশে দেরীতে হলেও এর প্রকোপ শুরু হয়েছে। এখানে চিকিৎসক আছেন কিন্তু পারদর্শিতার প্রচুর ঘাটতি রয়েছে যেজন্যে এখনো বাংলাদেশে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে আনতেতো পারেনি বরং মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। ফেব্রুয়ারী মাসেই ইতালীতে কোভিড-১৯ মহামারীতে রূপান্তরিত হয়েছে, আর এরপরই ঐ দেশে থাকা বাংলাদেশীরা দেশে ফিরা শুরু করলে সরকার এদেরকে বিশ্বাস করে বিমান বন্দর থেকে ঘরে ফিরে কোয়ারেন্টাইন পদ্ধতী মেনে ১৪ দিন ঘরে থেকে করোনাভাইরাসের লক্ষন পাওয়া যায় কিনা সেটা দেখার অনুরোধ করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু এসব ইতালী ফেরতদের উপর কোন নজরদারিই সরকার রাখেনে এদেরকে বিশ্বাস করে। এই বিশ্বাসই করাটাই দেশের জন্যে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, আমাদের দেশের লোকজন যারা বিদেশে গিয়ে নিজের জন্যে পয়সা উপার্জন করে নিজের আর্থিক অবস্থা পরিবর্তন করে ধরাকে সরা জ্ঞান করেনা। এরা নিজেকে বিরাট কিছু মনে করে এবং কাওরও কোন আদেশ কিংবা উপেদশ মানেন না এমনকি দেশের আইনকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি পরিদর্শন করে থাকে। এসব মূর্খ ইতালী ফেরতেরা সরকারের উপদেশ না মেনে তাদের বহন করে আনা করোনাভাইরাস সংক্রামিত করে আজ দেশটার বারটা বাজিয়ে ছেড়েছে। এখন এর মাশুল সরকার ও জনগণকে গুনতে হচ্ছে। যাইহোক এখনো সময় আছে সরকারের, এখন একটাই প্রধান কাজ হওয়া উচিৎ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের উপস্থিত চিহ্নিত করন। শুনা যাচ্ছে পরীক্ষাগার ব্যাবস্থা করার পর এখন পরীক্ষকদের অভাব এটা মান যায় না। সরকারকে আরো সচেতন হতে হবে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি যেকোন উপায়েই হউকনা কেন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করতেই হবে। এতদিনেও রক্ত পরীক্ষক সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। আল্লাহ্‌ করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাবার জন্যে আমাদের দেশের প্রযুক্তিকে আরো শক্তিশালী করে দিন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমেরিকা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ