Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নিম্নআয়ের পেশাজীবীদের জন্য তহবিল গঠন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০২০, ৯:০০ পিএম

করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার একটি নিজস্ব তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পূর্ণ অর্থায়ন স্কিম-২০২০’ শিরোনামের এই তহবিল থেকে অর্থ নেওয়া ঋণে সুদ হবে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ।

ঋণ বিতরণের নীতিমালায় বলা আছে, তফসিলি ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে এই স্কিমে অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা নিতে পারবে। ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে এই ঋণ বিতরণ করবে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (মাইক্রো ফিন্যান্স ইনস্টিটিউট)। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সদস্যরাই কেবল এই ঋণ পাবেন।

সোমবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই স্কিমের আওতায় তফসিলি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ১ শতাংশ সুদ নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে ক্ষুদ্রঋণ (মাইক্রো ফিন্যান্স) প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ নেবে অর্থায়নকারী বিভিন্ন ব্যাংক। আর গ্রাহক পর্যায়ে এই ঋণ থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদ নেওয়া হবে।

ব্যাংকের অর্থায়নের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান নির্বাচন : 

এ স্কিমের আওতায় ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণ করবে। তফসিলি ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে তাদের অনুকূলে অর্থায়ন করবে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

ঋণ/বিনিয়োগের জন্য যোগ্য গ্রাহক : 

নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অর্থাৎ স্থানীয়ভাবে কৃষি এবং বিভিন্ন আয় উৎসারী কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত বিভিন্ন শ্রেণিপেশার স্থানীয় উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এই স্কিমের আওতায় যোগ্য গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এছাড়াও অতিদরিদ্র, দরিদ্র অথবা কোনো অনগ্রসর গোষ্ঠীভুক্ত ব্যক্তি এবং অসহায় বা নিগৃহীত নারী সদস্য এ স্কিম থেকে ঋণ বা বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন।

ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিনিয়োগ বিতরণের শর্ত : 

ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব নীতিমালার পাশাপাশি গ্রাহকের গত একবছরের আয়বর্ধক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিয়ে এই স্কিমের আওতায় ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণ করবে। কেবল ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সমিতিভুক্ত কোনো সদস্যকে এই ঋণ বা বিনিয়োগ দেওয়া যাবে। করোনাভাইরাসের সংক্রামণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন— এমন গ্রাহকরা অগ্রাধিকার পাবেন। স্কিমের আওতায় গৃহীত ঋণ বা বিনিয়োগের অর্থ দিয়ে গ্রাহকের বিদ্যামান অন্য কোনো ঋণ বা বিনিয়োগ সমন্বয় করা যাবে না।

গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ : 

এই স্কিমের আওতায় নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের একক গ্রাহকের ক্ষেত্রে ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা। গ্রুপভিত্তিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ সদস্যের গ্রুপকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ঋণ বা বিনিয়োগ দেওয়া যাবে।

গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ/বিনিয়োগের মেয়াদ : 

এই স্কিমের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে (একক বা গ্রুপভুক্ত) ঋণ বা বিনিয়োগের মেয়াদ হবে বিতরণের তারিখ থেকে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ এক বছর। ক্ষুদ্র উদ্যেক্তা পর্যায়ে (একক ও গ্রুপভুক্ত) ঋণ বা বিনিয়োগ মেয়াদ হবে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ দুই বছর। তবে এক্ষেত্রে একজন একক উদ্যেক্তা বা একটি গ্রুপ কেবল একটি ক্যাটাগরিতে ক্ষুদ্র ঋণ বা বিনিয়োগপ্রাপ্য হবেন।

গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার : 

গ্রাহক পর্যায়ে এই ঋণ বা বিনিয়োগে বার্ষিক সুদ বা মুনাফা বা সার্ভিস চার্জের হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। নন-জুডিশয়িাল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামার খরচ ছাড়া এই ঋণ বা বিনিয়োগে অন্য কোনো চার্জ বা ফি আদায় করা যাবে না।

ঋণ আদায় : 

ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের কাছ থেকে সাপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতে ঋণ বা বিনিয়োগের অর্থ আদায় করবে। অর্থায়নকারী ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানকে প্রদত্ত তহবিল আদায়ের ক্ষেত্রে তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ড দেবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ