মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবস্থিত তাবলিগ জামাতের বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় মারকাজ নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাতকাণ্ডের পর 'মুসলমানরাই করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে'- এমন গুজব ছড়িয়েছে পুরো ভারতজুড়ে। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে বেড়েছে মুসলিমবিদ্বেষ। ঘটছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। মুসলমান বলে হাসপাতালে ঠাঁই হয়নি অন্তঃসত্ত্বা নারীর। তাই অযত্নে জন্ম নেওয়ার পরই মারা গেছে নবজাতক। ভারতের ঝাড়খন্ড ও রাজস্থান রাজ্যে সম্প্রতি এমন দু’টি ঘটনা ঘটেছে। আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না মুসলমানরা। কোথাও হিন্দু-মুসলমান আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। করোনাভাইরাসের এই সময়ে যখন মানুষের পাশে দাঁড়ানো খুব প্রয়োজন, তখন ভারতে বেড়েছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রতি বিদ্বেষ।
ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝাড়খন্ডের জামসেদপুর শহরের এমজিএম হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৩০ বছরের অন্তঃসত্ত্বা রিজওয়ান খাতুনকে। ‘ভারতে মুসলমানরাই করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে’- এমন একটি গুজব ছড়িয়েছে। সেই গুজবের শিকার হন রিজওয়ান। হাসপাতালের গেটের সামনেই সন্তান জন্ম দেন তিনি। তবে নবজাতকটিকে বাঁচানো যায়নি। এরপর রিজওয়ানকে পিটিয়ে বাধ্য করা হয় হাসপাতালের সামনে পড়ে থাকা তারই রক্ত পরিষ্কার করতে। গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা এটি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে রাজস্থানের ভরতপুর জেলাতেও একই রকম একটি ঘটনা ঘটে। সেখানেও বাঁচানো যায়নি নবজাতকটিকে।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাটের আহমেদাবাদে একটি সরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করে আলাদা আলাদাভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহমেদাবাদের সিভিল হাসাপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেটি সরকারি নির্দেশ।
কেন্দ্রের মতোই গুজরাটেও ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। ক্ষমতাসীন এই দলের সদস্য ও সমর্থকরা ভারতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য দায়ী করেছে তবলিগ জামাতকে। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে দিল্লির একটি মসজিদে তবলিগ জামাতের সদস্যরা জমায়েত হয়েছিলেন।
তাবলিগের ওই সদস্যরা যখন দিল্লির মসজিদে জমায়েত হয়েছিলেন তখন ভারতে লোকসমাগম বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনো সরকারি নির্দেশনা ছিল না। এমনকি ওই জমায়েতের এক সপ্তাহ পর ভারত লকডাউন করা হয়।
বিজেপি সরকার এখন দাবি করছে, ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ৩০ শতাংশ তবলিগ জামাতের ওই সদস্যদের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
উত্তর প্রদেশে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ লকডাউন ভেঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই ভারতের অন্যত্রও গত কয়েক সপ্তাহে একইরকমের জমায়েত হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য খুব বেশি আলোচনা-সমালোচনা হয়নি।
তাবলিগ জামাতের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নিতে শুরু করেছে ভারত সরকার। মুসলিম নেতারা এই তদন্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, এই তদন্ত যেন একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষে পরিণত না হয়।
উত্তর প্রদেশের মিরাটে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে বলা হয়েছে, ‘কোনো মুসলমান করোনা আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে না।’ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে এমন শর্ত নেই। তেলেঙ্গানার অনেক হাসপাতালেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না মুসলমানদের। সূত্র- গার্ডিয়ান, আল জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।