Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাপাসিয়ায় করোনায় আক্রান্ত ৬২ জনের মধ্যে ৩২ জনই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের !

কাপাসিয়া(গাজীপুর) | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ৫:২৬ পিএম
গাজীপুরে কাপাসিয়া উপজেলায় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে কভিড-১৯ শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা। ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণের (পিপিই) সংকটের মধ্যেই এখনো পর্যন্ত  সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। তবে বিপত্তি ঘটছে লক্ষণ গোপন করে হাসপাতালে যাওয়া রোগীদের নিয়ে। অনেকে তথ্য গোপন করে হাসপাতালে যাওয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি বেশ কয়েকটি হাসপাতাল তাদের সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারি হাসপাতাল চালু থাকলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা। ফলে অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসাপ্রাপ্তির সুযোগ সংকুচিত হয়ে এসেছে। সব মিলিয়ে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার  স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখন ভেঙে পড়ার উপক্রম।
 
আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত গাজীপুরে মোট ১৬১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হয়েছে। তবে গাজীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৫৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্তের তথ্য জানানো হয়েছে৷
 
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১৫৯ জনের মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও ৯ জন চিকিৎসক এবং ১২ জন নার্সসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগেরই মোট ৫৭ জন করোনাভাইরাস পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফই হলো ৩২ জন। 
গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানাযায়, কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আক্রান্তের সংখ্যা গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি। কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ এ পর্যন্ত  হাসপাতালের মোট ৩২ জন স্টাফ  করোনাভাইরাস পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হয়েছে। 
গত ১৭ মার্চ গাজীপুরের অস্থায়ী কোয়ারেন্টিন ক্যাম্প থেকে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো ইতালিফেরত এক ব্যক্তির মধ্যে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত। তিনি মূলত নরসিংদীর বাসিন্দা। এরপর ২৯ মার্চ গাজীপুর সদরের বারবৈকা এলাকায় আরেকজন শনাক্ত হন। তিনি ইতালিফেরত এক আত্মীয়ের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এরপর থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ওই জেলায় নতুন সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। ১০ এপ্রিল কাপাসিয়ার দস্যুনারায়ণপুর এলাকায় অবস্থিত ‘ছোঁয়া অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট লিমিটেডে’র এক কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর থেকে প্রতিদিন বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
 
চিকিৎসকরা বলছেন, পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়াই চিকিৎসকদের সেবা দিতে হচ্ছে। রয়েছে পিপিইর সংকট। একই পিপিই একাধিক চিকিৎসককে ব্যবহার করতে হচ্ছে। সরবরাহ করা হয়নি এন৯৫ বা সমমানের কোনো মাস্ক। অথচ বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের মতো চিকিৎসকরাও ব্যাপক হারে সংক্রমিত হচ্ছেন নভেল করোনাভাইরাসে। কভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক, নার্স, অন্য বিভাগের কর্মী ও তাদের স্বজনরা রয়েছেন। আক্রান্ত সবাই আইসোলেশনে রয়েছেন।
 
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, ১৮এপ্রিল (শনিবার) কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ হাসপাতালের মোট ১৯ জন নতুন করে করোনা পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩ জন নার্স, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) ১ জন, আউটসোর্সিং এর ২ জন এবং হাসপাতালের কর্মরত আরো ১৯ কর্মী রয়েছেন। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল (বুধবার) কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স ৩ জন, স্টোর কিপার ১ জন, টেকনিশিয়ান ১ জন, স্বাস্থ্য সহকারী ৬ জন এবং হিসাব রক্ষক ও একজন স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ১৩ জন করোনা পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মোট ৩২ করোনা পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১০ জন চিকিৎসক ও ২৬ জন নার্স সহ প্রায় ৭০ জন হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত এর মধ্যে ৩২ জনই করোনা পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হওয়ার পর আইসোলেশনে রয়েছেন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আরো ৩২ জন পজেটিভ (আক্রান্ত) শনাক্ত হয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলায় করোনা পজেটিভ  (সনাক্ত) হয়েছে মোট ৬২ জন। এর মধ্যে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার, নার্স সহ ৩২ জন স্টাফের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। 
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন  কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মামুনুর রহমান।
গাজীপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে কাপাসিয়া উপজেলায়।  ৩২ জন স্টাফ আক্রান্ত হওয়ায় কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ