Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার শিকার চীন

নিজের চরকায় তেল দিতে বলে বেইজিংয়ের হুঁশিয়ারী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫২ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী বছরে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, অর্থনৈতিক মন্দা বা করোনাভাইরাসের কারণে আরো যেসব ক্ষতি হয়েছে, সেসবের দায় এড়াতে চীনকে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। চীনের প্রতি কঠোর বাণিজ্য নীতি ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাকে ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছেন। গত ২ মাস ধরে করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপটে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের শক্তিশালী, দক্ষ ও দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করলেও নির্বাচন উপলক্ষে ভোল পাল্টে ফেলেছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রতিদ্ব›দ্বী জো বাইডেনের সাথে চীনের সু-সম্পর্ককে পুঁজি করে প্রচারণায় নেমেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে আমেরিকার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের পর্দায় চাইনিজ পতাকাসহ একটি আতঙ্কিত সুরের আবৃত্তি শোনা যায়, ‘সবসময়ের থেকে এখন আরো বেশি, আমেরিকা অবশ্যই চীনকে রুখে দেবে’ এবং ‘চীনকে থামানোর জন্য আপনাকে জো বাইডেনকে থামাতে হবে।’
নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প করোনাভাইরাসকে ‘চাইনিজ ভাইরাস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। স্বচ্ছতার অভাব আছে বলে তিনি এই ভাইরাস বিস্তারের জন্য চীনকে দায়ী করেন।
ট্রাম্পের বিরোধীরা বলছেন, তিনি এমন একটি ধারণা সৃষ্টি করতে চান, যাতে বোঝানো যায় যে, এই অবস্থার জন্য তার কোনো ভুল ছিল না। এই যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, এটা বাইরের দেশ থেকে চাপিয়ে দেয়া। বিজ্ঞান যাই বলুক বা না কেন, এক্ষেত্রে চীন একটি সহজ বলির পাঁঠা হয়েছে।
প্রচার মুখপাত্র অ্যান্ড্রু বেটস ইমেল করা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ট্রাম্প চীনের পদক্ষেপকে সফল এবং স্বচ্ছ হিসাবে প্রশংসা করে গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহগুলি ব্যয় করেছেন। আমেরিকান জনগণের সাথে প্রতারণা করে আমাদের চরম হুমকির মুখোমুখী করেছেন এবং আমাদের দেশকে প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
এদিকে, আমেরিকার নির্বাচরী প্রচারণায় চীনকে খলনায়ক হিসবে ব্যবহার করার তীব্র সমালোচনা করে আমেরিকাকে তার নিজের চরকায় তেল দিতে বলেছে চীন। শুক্রবার বেইজিংয়ে দৈনিক ব্রিফিংয়ে চীনের বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝা লিজিয়ান মহামারীটির সত্য ধামাচাপা দেয়ার জন্য এবং এর দায় চাপিয়ে চীনকে কলঙ্কিত করার জন্য আমেরিকান রাজনীতিবিদদের কড়া সমালোচনা করেন।
লিজিয়ান উহানের একটি ভাইরাস ল্যাবের সাথে করোনাভাইরাসকে যুক্ত করার জন্য ওয়াশিংটনকে পাল্টা অভিযুক্ত করেন। বেইজিং ওয়াশিংটনকে বিভ্রান্ত করছে এবং করোনা মহামারী সম্পর্কে অস্বচ্ছ বলে পেন্টাগন প্রধান মার্ক এস্পার অভিযোগ করার পর আমেরিকাকে তার রাজনৈতিক চক্করবাজি বন্ধ করতে বলে চীন।
লিজিয়ান বলেন, ‘যেকোনো বুদ্ধির যে কেউ বুঝবে যে, আমেরিকার লক্ষ্য হলো, দায়িত্ব এড়ানোর জন্য পানি ঘোলা করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়া’। চীন আমেরিকাকে করোনা মহমারী ও অর্থনীতিতে আরও বেশি শক্তি ব্যয় করার আহŸান জানিয়েছে।
এরই মধ্যে, আমেরিকার লকডাউন দ্বিতীয় মাসে আবর্তিত হতে শুরু করেছে এবং ট্রাম্পের রেটিং হ্রাস পেতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে, তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনুমোদনের রেটিং ৬ পয়েন্ট কমে ৪৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি থেকে তার রেটিংয়ে সর্বোচ্চ পতন ঘটে। সূত্র : আলযাজিরা, ডেইলি মেইল।

 

 

 



 

Show all comments
  • Abdul Hye ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে পড়ার পর ধারনা করা হয়েছিলো পৃথিবী স্থির হবে, শান্ত হবে। কিন্তু স্নায়ু যুদ্ধ যে যুক্তরাষ্ট্রকেও ফাপা করে দিয়েছে তা বোঝা গেলো আশির দশকের শেষের দিকে স্পষ্ট করে বললে ১৯৮৭ সালের শেয়ার বাজার ধ্বশ,২০০০ সালের শেয়ার বাজার ধ্বশ এবং ২০০৮ সালের মহা আর্থিক সংকট। ফেডারেল রিজার্ভের সাবেক প্রধান গ্রীন স্প্যান বলেছেন, তিনি এতোদিন যা বিশ্বাস করেছেন, আজ তা ভুল প্রমানিত হয়েছে। স্নায়ু যুদ্ধের সময় ছিলো গোয়েন্দা সংস্থাদের আধিপত্য।তারাই নীতি নির্ধারনের জন্য সব ধরনের তথ্য সরবরাহ করতো। আর এ জন্য তাদের কাজের ব্যস্ততা ও পরিসর ছিলো পৃথিবী ব্যাপী। যুক্তরাষ্ট্র এক সময় সমগ্র পৃথিবী ব্যাপী তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতো। এক সময় উৎপাদিত পণ্যের পরিমান বেড়ে গেলে তা বাকীতেও রপ্তানি করেছে। প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন ১৯৬৭ সালে সরাসরি জোট নিরপেক্ষ দেশ গুলোকে আর্থিক সহায়তা দিলে স্নায়ু যুদ্ধে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হয়। সে সময় যুক্ত রাষ্ট্রের হাতে প্রচুর ক্যাশ টাকা থাকায় যুক্ত রাষ্ট্র তা করতে পেরেছিলো। কিন্তু ২০০৮ সালের মহা আর্থিক সংকটের পর এ থেকে উদ্ধার পেতে যুক্তরাষ্ট্র চীনের দারস্থ হয়। চীন সাধ্য মতো সহযোগীতাও করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ন রিকভার করতে আজো পারেনি বরং চীন তার জিডিপি এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে আগামী দিনে জিএনপিতেও যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলবে এটা প্রায় নিশ্চত। চীনের রয়েছে বিনিয়োগ যোগ্য ট্রিলিয়ন, ট্রিলিয়ন ডলার। যা ব্যয় করে গবেষণায় নিজেকে শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে চীন। স্বাভাবিক ভাবেই সম্পদ থাকলে তা রক্ষা করার সামর্থ্যও থাকতে হবে। চীনের প্রায় সব রকমের সামরিক শক্তি রয়েছে। বিশেষত ওপেন যুদ্ধের জন্য। কিন্তু চীনের যেটা নেই তা হলো সিআইএ এর মতো প্রতিষ্ঠান। যাদের রয়েছে সব ধরনের সংকট মোকাবেলা করার অভিজ্ঞতা। তারা জানে ওপেন যুদ্ধের পথ কিভাবে তৈরি করতে হয়। কিভাবে আইএস তৈরি করতে হয়। কিভাবে অর্থনীতি উদ্ধারের জন্য অস্ত্র ব্যবসা চালু করতে হয়। কিন্তু সম্ভবত তাদের সব প্রচেষ্টা সত্তেও চীনকে রুখতে পারছিলো না। কারন চীনের সাথে আছে এ যুগের সুপার ম্যান ভ্লাদিমীর পুতিন। কিন্তু হলুদ আর লাল ভায়াদের হারাতেই হবে। কেননা নেতৃত্ব হাতছাড়া হলে হয়তো একাধিক বিপর্যয় দেখা দেবে। এ কারনেই এ শ্বেত সন্ত্রাস। শুরুতেই রুশ গোয়েন্দা যা বলেছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, এর পর কী? শ্বেত সন্ত্রাস কোথায় যেয়ে থামবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Jakaria Muhammad ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    উন্নত এ দেশগুলোই পৃথিবীর যত মহামারী অার যুদ্ধের কারণ। পৃথিবী ধ্বংসের জন্য এ দেশগুলোর প্রতিহিংসা, জনগনের বিলাসিতা, ক্ষকতার দাপট সর্বাধিক দায়ী। এ দেশ গুলোর প্রতি ঘৃণা ছুরে দেওয়া ছাড়া সাধারণ বিশ্ববাসীর অার কিছুই করার নাই..
    Total Reply(0) Reply
  • Raju Ahamed ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
    I think China was researching about virus but somehow the virus came outside for someone's mistake.
    Total Reply(0) Reply
  • Mithun Mistry ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
    অসভ্যতা কোন পযার্য়ে পৌছালে একটা মহামারি নিয়ে একটা দল একটা দলকে দোষারোপ করে। একজন আরেকজনকে নিয়ে ট্রল করে। গুজব নিয়ে পড়ে থাকে। ভাই ধৈর্য্য ধরুন, শান্ত হোন, সচেতন হোন, সচেতনতা বাড়ান। গুজবকে প্রতিহত করুন। ধমার্ন্ধতায় কান না দিয়ে ধমীর্য় অনুশাসন মেনে চলুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Rony Rahman ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 0
    করোনা আক্রান্ত দেশ গুলো থেকে বাংলাদেশে আসার পরেই আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে.. কথা হলো ভাই তোরা কি নিজেরা বাঁচতে এসেছিস?? নাকি নিজেরা তো ডুবেছিস আমাদের ও ডুবাতে এসেছিস???
    Total Reply(0) Reply
  • Ziared Rahman ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 0
    যেহেতু চীন থেকে উৎপত্তি তাই দোষ টা চীনের নেওয়া উচিৎ, তবে এখন চীন বা অ্যামেরিকার মধ্যে সীমা নেই তাই এখন এইসমস্ত ফালতু কথা বাদ দিয়ে পৃথিবীর মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া উচিৎ চীন এবং অ্যামেরিকা মিলেই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ