Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আক্রান্ত-মৃত্যু বাড়ছেই

উচ্চ ঝুঁকির চট্টগ্রামে দুর্বল প্রস্তুতি

রফিকুল ইসলাম সেলিম : | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

স্বাস্থ্য বিভাগ সারাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও আগে থেকেই করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম।
গুচ্ছ বা ক্লাস্টার সংক্রমণ এবং কোন কোন এলাকায় সামাজিক সংক্রমণও শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে যে ৩৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে তাদের বেশ কয়েকজন সামাজিক সংক্রমণের শিকার বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ ফেরত কয়েক জনের মাধ্যম তাদের পরিবারে সংক্রমণ ছড়ায়। কয়েকজন বিদেশ ফেরতদের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য আছে।
করোনায় এ পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক জন সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন। বাকি ২৭ জনের অবস্থা ভালো বলে জানান চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। স্বাস্থ্য বিভাগ শুরু থেকেই চট্টগ্রাম অঞ্চল সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকার কথা বলে আসছে। সেই সাথে মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে । সিভিল সার্জন বলেন, আমারা এখনও বলছি ঘরে থাকুন, তা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
বেশ কয়েকটি কারণে চট্টগ্রাম এ মহামারীর অতি ঝুঁকিতে। তার অন্যতম হলো দেশের প্রধান প্রবাসী অধ্যুষিত এ অঞ্চলের কয়েক হাজার প্রবাসী দেশে ফিরে মিশে গেছে লোকালয়ে। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম জেলায় সম্প্রতি দেশে ফেরা ৩৯২৮৩ জনের মধ্যে মাত্র ৯৭৩ জনের হদিস পেয়েছে প্রশাসন। বিমানবন্দর বন্ধ থাকলেও সমুদ্র বন্দর এবং স্থল সীমান্ত হয়ে অনেকেই ফিরেছেন। চট্টগ্রাম বন্দরে এ পর্যন্ত ১০ হাজার নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নির্দেশনা এবং সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানেও মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত বন্ধ করার ঘোষণাও মানছে না কেউ। গণপরিবহন বন্ধ এরপরও বিকল্প উপায় বের করে অনেকে চট্টগ্রাম আসছেন। চট্টগ্রামে আটকে পড়াদের অনেকেই ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান পিক আপ ভ্যান যোগে বাড়ি যাচ্ছেন। পুলিশের অভিযানে এ ধরনের ঘটনা প্রতিদিন ধরা পড়ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি জরুরি ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং রমজান মাসে অতি প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক রাখতে চট্টগ্রামকে পুরোপুরি লকডাউনে আনাও যাচ্ছে না।
উচ্চ ঝুঁকিতেও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তেমন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলা যাবে না। নানা সঙ্কট আর সন্বয়হীনতায় চলছে সবকিছু। জেনারেল হাসপাতাল ও বিআইটিআইডিতে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে জোড়া তালি দিয়ে। জেনারেল হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বসানোর কাজ আটকে আছে। চমেক হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরি বসানোর কাজ শেষ হয়নি।
এ দিকে রোগী আর মৃত্যু দুটোই বেড়ে চলেছে। গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামে একজনসহ একদিনে ১৯ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। বিআইটিআইডিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১১টি নমুনা পরীক্ষা হয়। তার ১৯টি করোনা পজেটিভ আসে। আক্রান্তদের মধ্যে চট্টগ্রামের এক জন, লক্ষ্মীপুর জেলার ১৭ জনের এবং ফেনীর ছাগলনাইয়ার একজন। বিআইটিআইডিতে এ পর্যন্ত ১১২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
চট্টগ্রামে আক্রান্ত ২৭ জন জেনারেল হাসপাতাল, বিআইটিআইডি হাসপাতাল এবং বাসায় চিকিৎসাধীন। এ পর্যন্ত মহানগরীর ১৪টি এলাকায় এবং জেলার ৫টি এলাকায় করোনা সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংক্রমণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ