Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সখিপুরে বন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই মাকে দেখতে গেলেন ছেলে সানোয়ার

সখিপুর(টাঙ্গাইল)উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ১২:১৪ পিএম

টাঙ্গাইলের সখিপুরের বন থেকে উদ্ধার হওয়া ওই মাকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেছেন ওই মায়ের একমাত্র ছেলে সানোয়ার হোসেন। তিনি বৃহস্পতিবার বিকালে ওই মায়ের সঙ্গে দেখা করেন ও সেলফি তুলেন। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে মায়ের সঙ্গে ওই হাসপাতালে থাকবেন বলে ফোনে জানান। ছেলের দাবি ‘আমার মা একজন মানসিক রোগী। তিনি গত ২৩ মার্চ শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। সে বলে, আমি আমার মাকে করোনার ভয়ে সখিপুরের বনে ফেলে যাইনি। তবে আমার মায়ের প্রতি আমাদের পরিবারের যথেষ্ট অবহেলা ছিল। আমি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করার কারণে মাকে খুঁজতে সময় দিতে পারিনি। সানোয়ার টাঙ্গাইলের সখিপুরে ইউএনও, পুলিশ ও স্বাস্থ্যবিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও দেশবাসীর কাছে করজোরে ক্ষমা চান। কারণ সখিপুরের প্রশাসন আমার মাকে ওই বন থেকে উদ্ধার না করলে হয়তো আমার মা মারা যেত। সে কান্না করে বলেন, ‘আমি দারুণ লজ্জা পেয়েছি। আপনারা আমাকে ভুল বুঝবেন না।

করোনার সন্দেহে মাকে সখিপুরের বনে ফেলে গেলেন সন্তানেরা’ শিরোনামে গত মঙ্গলবার সবগুলো মিডিয়াতে ওই খবর ব্যাপকভাবে প্রচার হয়। মঙ্গলবার রাতে টেলিভিশনে মায়ের ছবি দেখে সানোয়ার তাঁর মাকে শনাক্ত করে। বৃহস্পতিবার বিকালে সানোয়ার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মাকে দেখতে যান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, ‘গত সোমবার রাত আটটার দিকে বনের ভেতর থেকে এক নারীর কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা আমাকে খবর দেয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ এলাকার লোকজন ওই নারীর কাছে যান। ওই নারী তাঁর ছেলেমেয়েরা কিভাবে তাঁকে জঙ্গলে ফেলে গেছেন, সেই কাহিনি বলেন। পরে রাত ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) খবর দেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে ইউএনও আসমাউল হুসনার নেতৃত্বে পুলিশ ও মেডিকেল টিম ওই নারীকে উদ্ধার করে রাতেই অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার চিকিৎসকরা ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন। গত বুধবার ওই মায়ের ফলাফল করোনাভাইরাস ‘নেগেটিভ’ আসে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি রেজিস্টার (মেডিসিন বিভাগ) মোক্তাদির ভূইয়া জানান, সাজেদা নামের ওই নারী কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে আইসোলেশন বিভাগে রাখা হয়েছে। কয়েকদিন পর ওই মাকে আবার দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা করা হবে।

সানোয়ার হোসেন বলেন, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে আমি আমার মায়ের সঙ্গে দেখা করি। আমি মাকে বলি তুমি আমাকে চিনেছ, বলে চিনেছি। তাহলে এগুলো বলছো কেন ? মা কোনো উত্তর দেয় না। আমাকে দেখে মা খুব খুশি হয়েছে। পরে মায়ের সঙ্গে একটা সেলফি তুলেছি।

সানোয়ার তাঁর স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ২৩ মার্চ মা নিখোঁজ হন। ২৫ মার্চ বাড়ি থেকে আমাকে নিখোঁজ বিষয়ে জানায়। ২৭ মার্চ আমি আমার মায়ের নিখোঁজ বিষয়ে ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করি। সেখানেও আমার মা একজন মানসিক রোগী বলে জানাই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ধার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ