মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সোমবার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যজোট সরকার (জিএনএ) মাত্র সাত ঘন্টায় মধ্যে বিদ্রোহী খলিফা হাফতার বাহিনীর কাছ থেকে ছয়টি শহর এবং দুটি কৌশলগত অঞ্চলের দখল নিয়ে নিয়েছে। সোমবার তুরস্কের সমর্থনে তারা এই সফলতা অর্জন করে। এলাকাগুলো হলো-
সারমান: মুক্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সারমান শহর। রাজধানী ত্রিপোলির সাথে তিউনিসিয়া সীমান্তের সংযোগ রক্ষাকারী উপকূলীয় সড়কের উপর অবস্থিত এই কৌশলগত শহরের জনসংখ্যা আনুমানিক ৪০ হাজার। ত্রিপোলির ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এই শহরটি নিয়ে হাফতারের মিলিশিয়া এবং জিএনএ বাহিনীর মধ্যে দীর্ঘদিন সংঘর্ষ চলছিল। এই শহরটি হাফতারের নিয়ন্ত্রণে থাকলে পশ্চিম ত্রিপোলির বাকী এলাকাও দখল করা তার জন্য সহজ হত।
সাব্রাথা: সাব্রথা শহরটি ত্রিপোলি থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যার জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার। এটি জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে রাজধানীর পশ্চিমে অবস্থিত বৃহত্তম শহরগুলির মধ্যে একটি। সাব্রথাও উপকূলীয় সড়কের উপর অবস্থিত যা তিউনিসিয়াসহ অন্যান্য দেশে বাণিজ্যিক বিনিময় এবং যাত্রী পরিবহণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আল-আজিলাত: এইশহরটি ত্রিপোলি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এর জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার। শহরটি উপকূলীয় রাস্তা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি হাফতারের মিলিশিয়াদের অন্যতম প্রধান দুর্গ ছিল। জিনতান সামরিক কাউন্সিলের কমান্ডার ওসামা আল-জুওয়াইলি জিএনএ-এর প্রতি আনুগত্যে প্রকাশ করার পরে, এই শহরে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আসে।
জুমাইল: ত্রিপোলি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যার জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ। শহরটি আরব উপজাতি অধ্যুষিত। এটি উপকূলের অ্যামেজিগ জুওয়ারা এবং অ্যামেজিগের পর্বতের মধ্যে একটি মানবিক এবং ভৌগলিক বাধা তৈরি করেছে। অঞ্চলটির বেশিরভাগ হাফতারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। যদিও আল-জুওয়াইলিরও সেখানে কিছুটা প্রভাব রয়েছে। এছাড়াও, আল-জুফরা এয়ারবেস (ত্রিপোলি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে) প্রশাসনিকভাবে জুমাইল শহরের অন্তর্গত।
রিকদালিন: ত্রিপোলি থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে এবং জুওয়ারা উপকূল থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যার জনসংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। নগরটির জনতাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক কাঠামো জুমাইলের মতোই, কারণ এথানে আল-জুওয়াইলি বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও হাফতারপন্থী আরব উপজাতিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। গত ২৫ মার্চ হাফতার শহরটি পুনরুদ্ধার করেছিলেন।
জাল্টান: এটি একটি ছোট শহর, যার জনসংখ্যা মাত্র ২৫ হাজার। এটি তিউনিসিয়ার সীমানা থেকে অনেক দূরের উপকূলীয় সড়কের শেষ শহর। শহরটি ত্রিপোলি থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে এবং এটি জিএনএ সরকারকে সমর্থন করার জন্য পরিচিত। জিএনএ বাহিনী আল-ওয়াটিয়া সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পরে হক ২৫ মার্চ হাফতারের মিলিশিয়ারা এটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছিল।
আল-আসাহ: এটি তিউনিসিয়া সীমান্তের নিকটে এবং রাস জেদির ক্রসিংয়ের দক্ষিণে অবস্থিত। এটি প্রশাসনিকভাবে রিকদালিন শহরের অন্তর্গত। আল-আসার কৌশলগত গুরুত্ব হচ্ছে, এখানে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শিবির রয়েছে, যা চোরাচালানের উপর নজরদারি চালানোর জন্য নিয়োজিত।
২০১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দল কৌশলগত তাৎপর্য বিবেচনা করে এই শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করেছে। যাইহোক, ২৫ মার্চ, জিএনএ সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার পরে হাফতার বাহিনী শিবিরটিতে হামলা করেছিল। এটি দেশের পশ্চিমে আল-ওয়াটিয়া বিমান ঘাঁটির কাছে অবস্থিত, যা হাফতারের মিলিশিয়াদের মূল ঘাঁটি ছিল।
মেলিতাহ: কৃষির উপরে নির্ভরশীল ছোট এই এলাকায় অল্প কিছু মানুষ বাস করে। এটি প্রশাসনিকভাবে এটি আল-আজাইলাত শহরের অন্তর্গত। একটি তেল বন্দর, একটি গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কমপ্লেক্স এবং ইতালির সাথে লিবিয়ার সংযোগকারী একটি গ্যাস পাইপলাইন খোলার পরে কৌশলগতভাবে শহরটি গুরুত্ব অর্জন করে। এর ফলে শহরটি একটি শিল্প অঞ্চলে রূপান্তরিত হয়।
সামরিকভাবে শহরটির গুরুত্ব হচ্ছে এটি উপকূলীয় সড়কের উপর অবস্থিত যার চারপাশে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহর রয়েছে। সেগুলো হলো- পূর্ব দিকে সাব্রথা, পশ্চিম দিকে জুওয়ারা এবং দক্ষিণে আল-আজাইলাত। এই শহরটি হাফতার এবং তার বিরোধীদের মধ্যে সর্বদা দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যদিও তিনি সম্প্রতি এই শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছিলেন। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।