Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছয় বছর মোমবাতির আলোয় চলে চিকিৎসা

দাউদকান্দির দোনারচর ২০ শয্যা হাসপাতাল

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ আলী, দাউদকান্দি (কুমিল্লা) থেকে

২০ শয্যা হাসপাতাল। কিন্তু এটিতে বিদ্যুতের সংযোগ নেই প্রায় ৬ বছর ধরে। মোমবাতি বা মুঠোফোনের আলোয় চলে স্বাস্থ্যসেবা। তিনজন চিকিৎসক থাকলেও তারা বেতন পাচ্ছেন না। এ অবস্থা কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা দোনারচর হাসপাতালে। ২০১০ সালের আগস্ট থেকে হাসপাতালটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর আগে ১৬ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পরে তাদের। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে দাউদকান্দি পৌরসভা দোনারচর এলাকায় গড়ে উঠে দোনারচর ২০ শয্যা হাসপাতাল। তৎকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নির্বাচনী এলাকা এটি। তার উদ্দ্যেগে এ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। তবে চালুর পর থেকে জনবল সংকট যেন এর নিতাসঙ্গী। শুরুর দিকে প্রেষণে জনবল এনে কার্যক্রম চালানো হতো। দিন যত গেছে, অবস্থা ততই করুণ হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে চিকিৎসক হিসেবে রোগীদের সেবা দেন চারজন। এর বাহিরে একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন চিকিৎসা সহকারী রয়েছেন। এ ৬ জনের মধ্যে একজন করে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট ও চিকিৎসা সহকারী দাউদকান্দি সদর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জনবল। ওই কেন্দ্রে বসার জায়গা না থাকায় কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি নিয়ে এখানে অফিস করেন তারা। হাসপাতালের সূত্র জানায়, দোনারচর হাসপাতালের নিজস্ব জনবল হিসেবে রয়েছেন চিকিৎসক নাসের আবুল হাসনাত, ফারজানা আক্তার ও রাসেল মাহমুদ। তারা তিন মাস আগে বদলি নিয়ে এখানে এলেও আজ অবধি বেতন পাচ্ছেন না। কার্যত এখানে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। বেতন ছাড়াই কিছুদিন এখানে অফিস করার পর তারা তদবির করে অন্যত্র চলে যান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালটি উন্নয়ন খাতের। রাজস্ব খাতের নয়। ফলে এটি থাকে বরাদ্দের ওপর নির্ভরশীল। ২০১০ সাল থেকে তা বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের তিন স্থায়ী চিকিৎসকদের একজন ফারজানা আক্তার জানান, হাসপাতালে দারোয়ান, এমএলএসএস, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্ন কর্মী কেউই নেই। কিন্তু বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় ভোগান্তি বেশি হচ্ছে। আরেক চিকিৎসক কর্মকর্তা ডাঃ কাইয়ুম বলেন, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলেই হাসপাতালে ভেতরে অন্ধকার নেমে আসে। তখন মোমবাতি বা মুঠোফনের আলো দিয়ে কার্যক্রম চালাতে হয়। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জনকে এভাবেই চিকিৎসা সেবা দিতে হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী গাজি মিয়া ও আল-আমিন বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচ- গরমের মধ্যে আমার চিকিৎসা নিতে আমাদের কষ্ট হয়। দাউদকান্দি পৌরসভা প্যানেল মেয়র রকিব উদ্দিন রকিব বলেন, এলাকায় এমন একটি হাসপাতাল থেকেও কাক্সিক্ষত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না, এটা পৌরবাসীর জন্য বড় দুঃখের। কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর আওয়াতাধীন দাউদকান্দি কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ১৬ মাসে ৫৬ হাজার ৩০২ টাকা বকেয়া পরার পর তা পরিশোধ করতে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বরাবর চিঠি দেওয়া হয় এরপরও বিল পরিশোধ না করা ২০১০ সালের ৮ আগস্ট সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিল পরিশোধ ছাড়া হাসপাতালে পুনরায় সংযোগ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহ আলম মোল্লা বলেন, বরাদ্দ না থাকায় হাসপাতালটির চিকিৎসকদের বেতন ও বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হচ্ছে না। বরাদ্দ আনার চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছয় বছর মোমবাতির আলোয় চলে চিকিৎসা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ