নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সারাবিশ্বে এখন একটাই আতঙ্ক। করেনাভাইরাস। প্রতি দিনেই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের ভয়াবহতা। এর প্রকোপে অসহায় হয়ে পড়েছে বিশ্ববাসী। হুহু করে করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। সঙ্কটময় এই অবস্থায় স্থবিরতা নেমে এসেছে সবখানে।
সব জায়গার মতো খেলার মাঠেও এখন শুনশান নিরবতা। বিশ্বের সব খেলাই স্থগিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সব খেলাধুলা বেশ আগেই স্থগিত ঘোষণা করেছে সরকার। সব খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের ফেডারেশন, ক্লাব, খেলোয়াড়রা।
আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে ধনী ক্রীড়া সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। সব ধরনের ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশ বড় অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীনই হতে হবে বিসিবিকে। করোনার প্রভাবে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির।
এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে করণীয় নিয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছে বিসিবি। প্রতি বছরের বাজেটের ৩০ শতাংশের সমান ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এসিসি ও আইসিসি ইভেন্ট এবং বিপিএলকে লক্ষ্য হিসেবে স্থির করছে বিসিবি। এশিয়া কাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও বিপিএল দিয়ে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন বিসিবির ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ইসমাইল হায়দার মল্লিক। অন্যান্য দেশের ক্রিকেট বোর্ড ক্রিকেটার, স্টাফদের বেতন কমানোর কথা ভাবলেও বিসিবি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বর্তমানে আয় না থাকলেও কেন্দ্রীয় ও প্রথম শ্রেণির চুক্তির বাইরে থাকা ক্রিকেটার ও নারী ক্রিকেটারদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিসিবি। এমন অবস্থা থাকলেও আগামী কয়েক বছর দেশের ক্রিকেট চালিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য আছে বলে বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের তৃতীয় দফার পাকিস্তান সফর স্থগিত হয়ে গেছে। আয়ারল্যান্ড সফরও স্থগিত করা হয়েছে। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফরের ভাগ্যও ঝুলে গেছে। এই সিরিজগুলো না হলে মোটা অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীন হবে বিসিবি। তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে যদি এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হয়ে যায়।
প্রতি বছর আইসিসি থেকে ১১ থেকে ১৩ মিলিয়ন ডলার অনুদান পায় বিশ্বের পঞ্চম ধনী ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। এই দুই টুর্নামেন্ট না হলে অনুদান পাবে না বিসিবি। এতে ক্ষতিটা পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকবে না বিসিবির সামনে।
এ বিষয়ে বিসিবির ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেছেন, ‘ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি এসিসি বা আইসিসির টুর্নামেন্ট না হয়, তাহলে বড় ক্ষতি হবে। আমাদের এক বছরের বাজেটের ২৫-৩০ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে, এটা ৪০ কোটি টাকার মতো।’
প্রতি বছরের জন্য বিসিবির বাজেট করা থাকে। বিসিবির প্রতি বছরের বাজেট ১৬০ কোটি টাকার মতো। বাজেটের ৩০ শতাংশ ব্যয় করা হয় ক্রিকেট ডেভেলপমেন্টে। ক্রিকেট অপারেশন্সে ৪০ শতাংশ এবং বাকি ৩০ শতাংশ খরচ হয় ক্রিকেটার, কোচসহ স্টাফদের বেতনের পেছনে।
এই বাজেটের অর্ধেকটাই আসে এসিসি ও আইসিসি থেকে। অর্থাৎ, বিসিবির ৫০ শতাংশ আয় আসে এই দুই সংস্থা থেকে। বাকি ৫০ শতাংশ আয় টিম টাইটেল স্পন্সর, বিভিন্ন সিরিজের স্পন্সর, ব্রডকাস্ট সত্ত্ব থেকে আসে।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের টাইটেল স্পন্সর নেই। ইউনিলিভারের সঙ্গে বেশ আগেই চুক্তি শেষ হয়েছে বিসিবির। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাখলেও এখন পর্যন্ত মেলেনি টাইটেল স্পন্সর। আগামী ৩০ এপ্রিল গাজী টিভির সঙ্গে ব্রডকাস্টিং চুক্তিও শেষ হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে নতুন চুক্তি করাও সম্ভব হবে না। সব মিলিয়ে করোনায় তৈরি হওয়া এই সঙ্কটে বড় ধাক্কাই অপেক্ষা করছে বিসিবির জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।