Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কক্সবাজার উপকূলে দুর্বৃত্তদের হাতে মারা পড়ছে ডলফিন

কক্সবাজার থেকে বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২০, ৬:২১ পিএম

কক্সবাজার উপকুলে একের পর এক মারা পড়ছে সাগরের সৌন্দর্য খ্যাত নিরীহ ডলফিন। গত শনি ও রবিবার পর পর দুইটি মৃত ডলফিন ভেসে আসে শাপলাপুর ও ইনানী সৈকতে। ভেসে আসা মৃত এসব ডলফিনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখাগেছে।   

ধারণা করা হচ্ছে কোলাহল মুক্ত কক্সবাজার সাগর উপকূলে আরো কয়েকদিন আগে দলবেঁধে নৃত্য করা ওই ডলফিন গুলোকেই সাগর দস্যুরা পিটিয়ে মেরেছে। অথবা জেলেদের জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে এসব ডলফিন।   

শনিবারে প্রথম শাপলাপুর সৈকতে ভেসে আসে একটি মৃত ডলফিন। রবিবারে ইনানী সৈকতে আরো একটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। রবিবার সকালে ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপের সামনে সৈকতে মৃত ডলফিনটিকে দেখতে পান একজন এনজিও কর্মী। এনিয়ে পরপর দুইটি মরা ডলফিল ভেসে এলো সৈকতে।

শনিবার ভেসে আসা মৃত ডলফিনটির লেজে রশি বাঁধা ছিল। এ থেকে ধারনা করা হচ্ছে সেটি কোন জেলের জালে আটকা পড়েছিল। এরপর জেলেরা এটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা। 

এদিকে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার নাজিম উদ্দিন, বিট কর্মকর্তা মেকলেস চাকমা ঘটনাস্থলে গিয়ে ডলফিনটি খুঁজে পাননি নলে জানান। নাজিম উদ্দিন জানান, ডলফিনটি হয়তো জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে থাকতে পারে। 

এরআগে শনিবার টেকনাফের শামলাপুর সৈকতে আরো একটি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমরা ডলফিনটি খোঁজাখুঁজি করি কিন্তু সৈকতের কোথাও সেটি দেখা যায়নি। জোয়ারে এটি ভেসে গিয়ে থাকতে পারে। তবে তারা শুনেছেন ডলফিনটি বেশ কয়েকদিন আগের।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ রেঞ্জের বন কর্মকর্তা মনজুর আলম জানান, এর আগে শনিবার আরো একটি ডলফিন টেকনাফ শামলাপুর এলাকায় ভেসে উঠেছিল। তিনি টেকনাফ পশুসম্পদ কর্মকর্তাসহ সেখানে গিয়ে ওই ডলফিন এর শরীরের বিভিন্ন অংশে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন এবং ওই ডলফিনটি মাটিতে পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি আরো জানান সম্প্রতি কোলাহলমুক্ত সৈকতের কক্সবাজার সাগর উপকূলে ডলফিনের খেলা করার বিষয়টি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এরপরে পরপর দুইটি ডলফিন মারা যাওয়ার বিষয়টি এখন উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ডলফিন হত্যার পেছনে সঠিক কারণ জানা নাগেলেও জেলেদের জালে আটকা পড়ে এগুলো মারা গেছে বলে তার ধারণা।

 

 

টেকনাফের হোয়াইক্যং রেঞ্জ কর্মকর্তা মনজুরুল আলম জানান, পশু সম্পদ কর্মকর্তার সহায়তায় শনিবার রাতে টেকনাফের শামলাপুর সৈকতে ভেসে আসা ডলফিনটির ময়নাতদন্তের জন্য শরীরের বিভিন্ন অংশের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে সেটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। এদিকে কিছুদিন আগে কক্সবাজারের কলাতলী পয়েন্টে সাগরে একদল ডলফিলকে খেলা করতে দেখা গেছে। নির্জন সাগরে ডলফিনের খেলা নিয়ে বেশ মানুষের মাঝে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হলেও একে একে মৃত ডলফিন ভেসে আসায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। তাদের ধারনা আরো অধিক সংখ্যক ডলফিন হত্যার শিকার হয়ে থাকতে পারে। অভিযোগের তীর জেলেদের দিকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ