Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিষখালী নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন পানিবন্দি পাঁচ গ্রামের শত শত মানুষ

প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চৌধুরী মোঃ ফারুক, পাথরঘাটা (বরগুনা) থেকে

উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চরলাঠিমারা নামক স্থানের বিষখালীর বেড়িবাঁধ ভেঙে বিষখালী নদীর পানি ঢুকে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে শতাধিক পরিবার পানিবন্দিসহ উল্লেখিত এলাকার মাছের ঘের-পুকুর তলিয়ে অন্তত বিশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও এলাকার কাঁচাঘরগুলো পানিতে ভিজে মাটির সাথে মিশে গেছে এবং পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে অন্তত ১৫শ’ একর জমির বিভিন্ন ধানের বীজ। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গত ৩ জুলাই উল্লেখিত স্থানের আঃ বারেকের বাড়ির সামনে থেকে উত্তর-দক্ষিণ দুই দিক মিলে অন্তত আড়াই কিমি বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারে বিষখালী নদীর কড়াল স্রোত বেড়িবাঁধের ঘরকূলের বীজতলার জমিসহ প্রায় ১২শ’ পরিবারের বসতঘর প্লাবিত হয়ে গেছে। আর কড়াল ওই স্রোতের মুখেই পড়েছে দিনমজুর আঃ বারেক, আঃ রহমান, মোঃ শাহিন, মৃত আবু হানিফের স্ত্রী মোসাঃ সেলিমোন ও মোসাঃ তাছলিমার বসতঘর। ৩ জুলাই আকস্মিক বিষখালী নদী থেকে পানি ঢুকে তাদের বসতঘরগুলো ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় বেড়িবাঁধের নিচে পড়ে দিনমজুর শাহিনের শিশু ছেলে বাবু (১০)। তাৎক্ষণিক এলাকাবাসী মাটি খুড়ে শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলে শিশু প্রাণে বেঁচে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩ জুলাই থেকে উল্লেখিত এলাকার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে এবং অনেকে নিজেদের ভিটাবাড়ি হারিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করলেও কেউ রাখেনি তাদের খবর। কোনো রকম জুটেনি ওই সকল হতভাগাদের ভাগ্যে ঈদের আনন্দ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. বাদল সরদার, মো. দেলোয়ার, মো. আবুল হোসেন, মো. ইদ্রিস কাজি বলেন, সম্প্রতি বরগুনার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্বাধীন এন্টারপ্রাইজ ওই বেড়িবাঁধটির আংশিক নামে মাত্র সংস্কার করে বাকি বেড়িবাঁধের সংস্কার না করে ওই বেড়িবাঁধের ব্যাপারে যে টাকা বরাদ্দ ছিল সকল টাকা উত্তোলন করে চলে গেছে তারা বলেন ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণেই বেড়িবাঁধটি ধসে গেছে এবং এলাকাবাসীর এমন অবস্থা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আঃ ছত্তার খান বলেন, ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণেই আজ এ অবস্থা হয়েছে। তিনি বলেন, বেড়িবাঁধটি ভেঙে গিয়ে চরলাঠিমারার ৫টি গ্রামের অন্তত ১২শ’ পরিবারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক পরিবার এখন পর্যন্ত পানিবন্দি হয়ে আছে। ছত্তার খান বলেন, পানি ঢুকে এলাকাবাসীর বিভিন্ন ধানের বীজ নষ্ট হওয়া ছাড়াও শতাধিক মাছের ঘের তলিয়ে অন্তত বিশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী সরকারি অথবা বেসরকারি কোন সাহয্য পেয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের পূর্ব থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিন চরলাঠিমারা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের বিভিন্ন সহযোগিতা করার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা করা হয়নি ক্ষতিগ্রস্তদের। যার ফলে চরম দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে বিষখালী বেড়িবাঁধের পরিবারগুলো। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি উল্লেখিত স্থান পরিদর্শন করেছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর জন্য সরকারিভাবে কিছু সাহায্য বরাদ্দ করাতে সক্ষম হয়েছি যা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রদান করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইকবাল হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর জন্য আরো সরকারি সাহায্য পেতে আমি চেষ্টা করতেছি। বেড়িবাঁধের ব্যাপারে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে শীঘ্রই বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হবে। পূর্বের ঠিকাদারের কাজের দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, পূর্বের ঠিকাদারের বিষয়টিও জেলা প্রশাসক এর কাছে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিষখালী নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন পানিবন্দি পাঁচ গ্রামের শত শত মানুষ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ