Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রভাবশালীদের হুমকিতে যেতে পারছে না ক্লাসে, এলাকা ছাড়া মা-মেয়ে

প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
নাজিরপুর (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

পিরোজপুরের নাজিরপুরে শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হয়রানির শিকার হওয়া ওই স্কুল ছাত্রীর মা। অভিযোগ দেয়ার পর প্রভাবশালী ওই শিক্ষকের হুমকিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়ে পিতৃহারা একমাত্র মেয়েকে নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন মা। জানা গেছে, উপজেলার গাওখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অষ্টম শ্রেণীর ওই ছাত্রী বিগত ৫ মাস পূর্বে তার বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক শংকর কুমার গোলদারের কাছে প্রাইভেট পড়তে শুরু করে। ৩ মাস প্রাইভেট পড়ার পর ওই শিক্ষকের আচরণে ছাত্রীসহ তার মা বুঝতে পারেন শিক্ষক একজন মাদকাসক্ত ও দুশ্চরিত্রের লোক। তাছাড়া তিনি স্কুলে বসে প্রাইভেট না পড়িয়ে নিজ বাসায় প্রাইভেট পড়ান, যে বাসায় তার স্ত্রী থাকেন না। রমজান মাসের আগে থেকে ওই শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দেয়। গত ১১ জুলাই সকালে শিক্ষক শংকর কুমার গোলদার লোক পাঠিয়ে ওই ছাত্রীকে তার বাড়ী থেকে তার বাসায় ডেকে নেন। ওই ছাত্রী শিক্ষকের বাসায় যাওয়ার পর ওই বাসায় থাকা অন্য দু’জন ছাত্রীকে বাসা থেকে বের করে দিয়ে শিক্ষক ওই ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর আচরণ শুরু করেন। মেয়েকে বাসায় না পেয়ে শিক্ষকের বাসায় ওই ছাত্রীকে আনতে গেলে শিক্ষক শংকর ওই ছাত্রীর মায়ের সাথে তাকে বাড়ি যেতে বাধা প্রদান করে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে ওই শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে তার লোকজন নিয়ে স্বামীহারা ওই ছাত্রীর মাকে ভয়ভীতি দেখালে তিনি তার মেয়েকে নিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, শংকর বাবু একজন মাদকাসক্ত ও দুশ্চরিত্রের লোক। তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর নিজ ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। তিনি খারাপ চরিত্রের হওয়ায় ছাত্রীরা তার কাছে প্রাইভেট পড়তে চায় না। কিন্তু তার ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে না এবং কর্তৃপক্ষও ব্যবস্থা নিতে পারে না। অভিযুক্ত শিক্ষক শংকর কুমার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বারবার একটি মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আসছি। তার কাছে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করার পরেও কেন ওই দিন সকালে ওই ছাত্রীকে বাসায় ডাকা হল এ প্রশ্নের জবাবে তিনি এটা স্পেশাল ম্যাটার বলে উল্লেখ করেন। ঘটনার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অনিল চন্দ্র মিস্ত্রীর সাথে কথা হলে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর কমিটির জরুরী সভা ডেকে তাকে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তিনি আর কোন ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রভাবশালীদের হুমকিতে যেতে পারছে না ক্লাসে
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ