Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নারায়ণগঞ্জে করোনায় এক নারীর মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০২০, ৬:৩৬ পিএম

এলাকায় ১০০ পরিবার লকডাউনে চিকিৎসা প্রদানকারী এক ডাক্তারসহ আরও ১০ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে
করোনায় বন্দরের এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় ২৩নং ওয়ার্ডের রসুলবাগ এলাকায় ১০০ পরিবার লকডাউন করে দিয়েছে প্রশাসন। মৃত্যুবরনকারী নারী কখনো দেশের বাইরে যায়নি। তাদের বাড়ির কেউ বিদেশফেরত নয়। তারপরও তিনি করোনায় আক্রান্ত। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসনকে। বৃহস্পতিবার ৫০ বছর বয়সী ওই নারীর দাফন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হওয়ায় অজানা একটা শঙ্কা রয়েই যাচ্ছে মানুষের মাঝে। কেননা, মৃত্যুর পর এই নারীকে গোসল দিয়েছেন কেউ, হাসপাতাল থেকে লাশ বয়ে বাড়ি এনেছেন তার পরিবারের লোকজন। আক্রান্ত এই নারীর সংস্পর্শে ছিলেন অনেকেই। আবার তার সংস্পর্শে থাকা মানুষগুলোও অন্যদের সংস্পর্শে গিয়েছেন। ফলে, ওই নারীর দাফনের দুদিন পর্যন্ত তার পরিবারের লোকজন অবাধে চলাফেরা করেছে। এ বিষয়গুলোই প্রশাসনকে ভাবিয়ে তুলেছে।

মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহের পরীক্ষা শেষে পজেটিভ রিপোর্ট আসায় ২ এপ্রিল রাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ, বন্দরের ইউএনও শুক্লা সরকার সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এর আগে ৩০ মার্চ ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪৫ বছর বয়সী ওই নারীর মৃত্যু ঘটে।

বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি ৪৫ বছর বয়সী এক নারী অসুস্থ হন। পরে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩০ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সেদিনই তাকে দাফন করা হয়। পরে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা শেষে ২ এপ্রিল করোনার পজেটিভ রিপোর্ট ধরা পড়ে। এ ঘটনায় জানার পর রাতেই প্রশাসন ও পুলিশ সেখানে উপস্থিত হন। রাতেই বন্দরের ২৩নং ওয়ার্ডের রসুলবাগ এলাকার জামাল সোপ কারখানা থেকে রসুলবাগ মোড় পর্যন্ত সড়কটি লক ডাউন করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এ সড়কের দুই পাশে সবকিছু বন্ধ থাকবে। কোন লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বন্দর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার জানান, গত ২৯ মার্চ (রোববার) বন্দর উপজেলার সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসূলবাগ এলাকার ৫০ বছর বয়সী ওই নারী শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে আক্রন্ত হলে স্বজনরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে স্বজনরা তা না মেনে ওই দিনই তাকে বাড়িতে ফেরত নিয়ে যান। পরদিন (৩০ মার্চ) ওই নারী আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে কুর্মিটোলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর এ পাঠায়।

তিনি আরও বলেন, স্বজনরা ওই নারীর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন। এর আগে ওই নারীর হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে স্বজনরা স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ভেবে ওই নারীর দুই ছেলে এবং মেয়ের জামাতাসহ অন্যান্য নিকট আত্মীয়-স্বজন স্থানীয় কবরস্থানে তাকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দাফন করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আইইডিসিআর এর পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস পজিটিভ আসলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ওই এলাকা লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

নিহত নারীর বাড়িসহ আশেপাশের পরিবারগুলো লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। রসূলবাগ এলাকায় প্রবেশের তিনটি রাস্তার দুইটি পথ সরু হওয়ায় টিনের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। মূল সড়কের পাশে আক্রান্ত বাড়ির প্রবেশের গলির মুখে পাচঁজন পুলিশ নিয়মিত টহল দেয়ার জন্য মোতায়ন করা হয়েছে। যে দুটি সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেখানেও দুজন করে পুলিশ নিয়মিত পাহাড়ায় থাকবে। এছাড়া স্থানীয় পাঁচজন সেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। পুলিশের পাশপাশি তারাও নজরদারি করবেন যাতে ওই একশ পরিবারের কোনো সদস্য বাড়ি থেকে বের হতে না পারেন। এ দিকে এই নারীর সংস্পর্শে থাকা সদর হাসপাতালের এক ওয়ার্ডবয়কে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে চিকিৎসা প্রদানকারী এক ডাক্তারসহ আরও ১০ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে|

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা ভাইরাস

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ