Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আলতাফের মার্শাল আর্ট স্কুল

প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জাহেদ খোকন

ভদ্রলোক পেশায় একজন শিক্ষক হলেও শুধু শিক্ষকতা নিয়েই তিনি মেতে থাকছেন না। নিজ পেশার পাশাপাশি অন্য কাজেও নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তাই বলে শিক্ষকতার মতো মহৎ পেশাকে তিনি অবহেলা করছেন, তা কিন্তু নয়। সেখানে শতভাগ পেশাদারিত্ব দেখিয়ে তিনি জড়িয়েছেন আরো অনেক কাজে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকা- ছাড়াও খেলাধুলার জগতেও তার বিচরণ রয়েছে। খেলাকে ভালবাসের বলে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে তিনি খুলে বসেছেন ‘আশা মার্শাল আর্ট স্কুল’।
যেখানে নিয়মিতই চলছে কারাতে প্রশিক্ষণ। যার সম্পর্কে বলা হচ্ছে তার নাম মোঃ আলতাফ হোসেন। সিংগাইর মডেল পাইলট স্কুলে শিক্ষকতা করেন তিনি। খেলাধুলার প্রতি প্রচ- আগ্রহ তাঁর। নিজেও এক সময় খেলোয়াড় ছিলেন। ২০০০ সালে মার্শাল আর্টের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন আলতাফ হোসেন। প্রায় পাঁচশো প্রতিযোগির মধ্যে যে নয়জনকে ব্ল্যাকবেল্ট প্রদান করা হয়, তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম একজন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে শ্রেষ্ঠ ফাইটার হিসেবে সম্মাননা লাভ করেন ব্ল্যাকবেল্ট ১ম ড্যান অর্জনের মাধ্যমে। স্কুল জীবন থেকেই তিনি ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়ে আসছেন। এ প্রসঙ্গে আলতাফ হোসেন বলেন, ‘খেলাধুলার নেশাটা আমি ছাড়তে পারিনি। একটা সময়ে এসে উপলব্ধি করলাম, মার্শাল আর্ট খেলাটা আমাদের সবার জন্য খুব জরুরি। আত্মরক্ষার কাজে দারুণ সহায়ক এই খেলটি। তাই মার্শাল আর্ট নিয়ে কাজ করার আগ্রহ জাগে। নিজ স্কুলের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে গড়ে তুলি ‘আশা মার্শাল আর্ট স্কুল’। তবে এর শুরুটা হয়েছে জিনজিরা পী এম পাইলট স্কুল এন্ড কলেজে থাকাকালীন সময়ে। ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সিংগাইর মডেল পাইলট স্কুলে যোগ দেবার পর এখানেও এর কার্যক্রম শুরু করি।’ আশা মার্শাল আর্ট স্কুলে এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন পঞ্চাশের অধিক ছাত্র-ছাত্রী। এদেরই একজন মেহেদী হাসান বলেন, ‘মার্শাল আর্ট সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারাণাই ছিলো না। স্যার আমাদের স্কুলে যোগ দেবার পর থকেই এ সম্পর্কে ধারণা দেন। আমরাও দেখলাম বিকেলের অবসর সময়টায় মার্শাল আর্ট শিখে নিলে মন্দ হয়না। প্রচুর আগ্রহ জন্মেছে এই খেলাটির প্রতি। এখন তো আমি জাতীয় পর্যায়ে খেলার চিন্তা করছি।’ স্কুলের আরেক ছাত্র প্রয়াসও একই অভিমত ব্যক্ত করেন। কাজই মানুষকে বড় করে তোলে। পৌঁছে দেয় সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে। যেমনটা ঘটেছে মোঃ আলতাফ হোসেনের ক্ষেত্রে। পেশায় একজন শিক্ষক হয়েও তিনি একজন দক্ষ সংগঠক, ক্রীড়াবিদ, সাংবাদিক ও কলামিস্ট। কাজ করছেন পরিবেশ, শিশু শ্রম, নারী নির্যাতন, মাদক বিরোধী আন্দোলনসহ খেলাধুলা নিয়ে। ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালীন সময়ে তিনি যেমন ছিলেন মেধাবী, তেমন ছিলেন তেজস্বী। বি.এ পাশের পর তিনি বি.পি.এড কোর্স সম্পন্ন করেন শারীরিক শিক্ষা কলেজ ঢাকা থেকে, ১৯৯৩-৯৪ সালে। তিনি জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য স্বদেশ সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলায় শ্রেষ্ঠ ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে সম্মাননা পদক ২০১৩ লাভ করেন। ২০১৩ সালে শারীরিক শিক্ষাবিদ সমিতি কেরানীগঞ্জ ঢাকার সভাপতি পদে তাকে নির্বাচিত করা হয়। ২০১৬ সালে পরিবেশ ও মানবিক চেতনা নামে একটি গ্রন্থ একুশে বই মেলায় প্রকাশিত হয়। বর্তমানে তিনি মানিকগঞ্জ গ্রীন ক্লাবের চেয়ারম্যান। আলতাফ হোসেন শুধু শিক্ষক রূপেই নন, একজন সাবেক ক্রীড়াবিদ, দক্ষ সংগঠক ও কলামিস্ট এবং বহু প্রতিভার অধিকারী। তিনি অনেক গুণে গুনান্বিত একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি, যিনি কর্মক্ষেত্রে রয়েছেন একজন অতন্দ্র প্রহরীর মতো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আলতাফের মার্শাল আর্ট স্কুল
আরও পড়ুন