Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশাসনের নীরবতায় খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার দুর্নীতি অব্যাহত

প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা
সরকারি ধান ক্রয় নিয়ে কলারোয়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার বাণিজ্যের খবর প্রকাশের পরেও কোন খুঁটির জোরে বহাল তবিয়তে সীমাহীন দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, গত ১৬ জুন ‘বস্তায় ৬০ টাকা ঘুষ ও ১ কেজি ধলে কলারোয়ায় ধান ক্রয়, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার কোটি টাকার বাণিজ্য’ শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবসহ জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কলারোয়ার গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত সমালোচনা ঝড় ওঠে। খাদ্য প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। গুদাম কর্মকর্তা ও দালাল চক্র দৌড়ঝাপ শুরু করে। সাময়িকভাবে ধান ক্রয় বন্ধ রাখা হয়। আর চিকন ধান মিলিংয়ের নামে মোটা চাল গুদামে ভরে লাখ লাখ টাকা পকেটস্থ করার দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে ম্যানেজ করে সদ্য মিলিং করা সেই চাল শ্যামনগর উপজেলার নওবেকী গুদামে পাঠানো হয়েছে। তবে বিধি ও বাস্তবে ধান মিলে নিয়ে সিদ্ধ করা, শুকানো, মাড়াই করে পরিষ্কার করে গুদামে ফিরিয়ে আনতে কমপক্ষে ৩/৪ দিন সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু কলারোয়া খাদ্য গুদামে সদ্য ক্রয় করা চিকন ধান ৩০ জুন মিলিংয়ে পাঠানো হয়। আর পরদিন ১ জুলাই সেই ধান মিলিং করে আনার নামে গুদামে মোটা চাল গ্রহণ করা হয়। মাত্র এক দিনের মধ্যে ধান সিদ্ধ, শুকানো এবং মাড়াই শেষে গুদামে ফেরত পাঠানোর মতো দুর্নীতির জ্বলন্ত প্রমাণ ধামাচাপা দিতে সক্ষম হয়নি। তারপরও খাদ্য প্রশাসনের নীরবতায় গুদাম কর্মকর্তার দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকন ধান গুদামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন সম্ভব নয়। আবার কলারোয়ার সিংহভাগ জমিতে চিকন ধানের চাষ হয়েছে। তাই গুদামে বিক্রির জন্য উত্তর বঙ্গ থেকে মোটা ধান আনা হচ্ছে। দালাল চক্র টাকার বিনিময়ে কৃষি কার্ড সংগ্রহ করে এবং দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা ১৬ টাকা কেজি দরের মোটা ধান সংগ্রহ করে কলারোয়া খাদ্য গুদামে ২৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে সরকারের লাখ লাখ টাকা পকেটস্থ করছে। এ জন্য কলারোয়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ৪০ কেজির বস্তায় ১ কেজি ধল এবং আগের বস্তায় ৬০ টাকার স্থলে বর্তমানে ১০০ টাকা ঘুষ নিচ্ছে বলে গুদামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র ইনকিলাবকে জানায়। সূত্র মতে, যেহেতু কিছু কৃষক সামান্য টাকার বিনিময়ে কৃষি কার্ড প্রদান এবং ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে দালাল চক্রের ধানের টাকা উত্তোলন করে দিচ্ছে তাই ঘুষ ও ওজনে ১ কেজি বেশি নেওয়ার কথা ফাঁস করার কেউ নেই। তবে কৃষি কার্ডে জমির পরিমাণের সঙ্গে ধান বিক্রির পরিমাণ দেখলে দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়ে পড়বে বলে সূত্র জানায়। এ ব্যাপারে কলারোয়া-তালার এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, কলারোয়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অনিয়ম দুর্নীতি খতিয়ে দেখে বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জ্ঞাত করেছেন এবং বেশি মুনাফার জন্য উত্তর বঙ্গ থেকে কম দামের মোটা ধান এনে খাদ্য গুদামে ভরার বিষয়টি জানতে পেরেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রশাসনের নীরবতায় খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার দুর্নীতি অব্যাহত
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ