Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

৪৮ বছর পরও অরক্ষিত বধ্যভূমি

মুজিববর্ষে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি

শংকর চন্দ্র বনিক, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০৬ এএম

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লী ইউনিয়নের কালীগঞ্জ সেতু ও চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রাম মাদরাসা সংলগ্ন দুটি স্থানের বধ্যভূমি আজও চিহ্নিত করা হয়নি। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত অরক্ষিত রয়েছে গেছে উক্ত দুটি বধ্যভূমি। সেখানে নির্মাণ করা হয়নি কোন ধরনের স্মৃতিস্তম্ভ। ফলে ১৯৭১-এ পাক-বাহিনীর হাতে নৃশংসভাবে বহু বাঙালির শহীদ হওয়ার ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে অজানায় রয়ে যাচ্ছে। মুজিবশতবর্ষকে উপলক্ষে করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিতকরণসহ স্মৃতিস্তম্ব নির্মাণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দা, সুশীল সমাজ, নান্দাইলের মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোর দাবি জানান। 

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন উল্লিখিত দুটি স্থানে পাকহানাদার বাহিনী ও তার এ দেশীয় দোসর রাজাকার আলবদররা শ’ শ’ বাঙালিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ফেলে রেখেছে। নান্দাইল উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান নরসুন্দা নদীটি মশুল্লী ইউনিয়নের শুভখিলা গ্রাম ভেদ করে ময়মনসিংহ-ভৈরব রেললাইনের নিচ দিয়ে চলে গেছে। আর তার পাশেই কালীগঞ্জ বাজার রয়েছে। সেই বাজারের নাম অনুযায়ী উক্ত রেলওয়ে সেতুটির নাম করা হয়েছে কালীগঞ্জ রেলসেতু। এই সেতু স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন বহু মুক্তিকামী বাঙালি নারী-পুরুষ ও শিশুদের নির্যাতনসহ গুলি করে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিতো পাকিস্তানি বাহিনী। ওই সমস্ত মানুষের আর্ত চিৎকার ও গুলির শব্দে মানুষ আতংকে থাকতো সবসময়।
আশপাশের বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়েছে পাকবাহিনী। এসময় মানুষের পাশাপাশি প্রকৃতি যেন কান্নায় ভেঙে পড়তো। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিক থেকে আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নিরীহ মানুষকে এনে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় এবং তা স্বাধীনতা সংগ্রামের পুরো সময় ধরে চলতে থাকে। শুধু তাই নয় উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বারইগ্রাম মাদরাসার কাছের ইটভাটায় বাংলার মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করে লাশের উপর লাশ ফেলে রাখা হতো। এ দুটি বধ্যভূমিতে কতজনকে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধারণা অগণিত লোককে হত্যা করা হয়েছে।
নান্দাইল উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাজহারুল হক ফকির বলেন, বধ্যভূমির কাহিনী খুবই হৃদয়বিদারক। আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে উক্ত দুটি বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ব স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে মুজিববর্ষ উপলক্ষে শীঘ্রই বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। এটাই নান্দাইলবাসীর প্রত্যাশা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ