পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অযথা টালবাহানার পর অবশেষে জনদাবি পূরণ হলো। স্থগিতই ঘোষণা করা হলো সাড়ে ১৯ লাখ ভোটার ও ৭০ লাখ চট্টগ্রামবাসীর ভয়-আতঙ্ক চরম অনীহার চসিক ভোটকান্ড। কারোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির মাঝেও খানিকটা স্বস্তি পেলো চট্টগ্রামবাসী। অনেকে বলেছেন, আগেই ভোট ভোট খেলা বন্ধ করা উচিৎ ছিল। তবুও দেরিতে হলেও স্থগিত ঘোষণায় মানুষ সন্তুষ্ট। কেননা জাতির দুঃসময়ে ভোট না হওয়ার পক্ষে ছিল প্রবল জনমত। অবশ্য চসিক ভোট স্থগিতে নগরবাসী বলছেন, এটি সরকারের সময়োপযোগী এবং ভালোই সিদ্ধান্ত। এ পদক্ষেপের জন্য অনেকে প্রশংসা করেছেন বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার। মহামারী পরিস্থিতির মধ্যে ইসির অতিউৎসাহী ভোটারশূণ্য ‘ভোট উৎসব’ বিড়ম্বনা দূরীভূত হওয়ায় চাটগাঁবাসী আল্লাহতায়ালার শোকরিয়া আদায় করেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানায়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া সংক্রামক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারী দুর্যোগ পরিস্থিতির কারণে ২৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে চসিক নির্বাচন স্থগিত হবে কি-না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেয়, ২১ মার্চের পর করোনাভাইরাস প্রকোপ থাকা পর্যন্ত আর কোন নির্বাচন দেশে অনুষ্ঠিত হবে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে ইসির এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঘোষিত আগের তফসিলে ছিল আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটির ভোটগ্রহণের দিন। চসিক এলাকায় পড়েছে ৫টি সংসদীয় আসন। বিগত ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল সর্বশেষ চসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। চসিকের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৫ আগস্ট। অবশ্য দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সরকার এবং ইসি বিবেচনা করলে তা আরও পিছিয়ে দিতে পারে।
ঝুঁকি-আতঙ্কের প্রশিক্ষণ সাজা!
করোনাভাইরাস মহামারী সংক্রমণের ঝুঁঁকিতে সবাই সচেতন এবং শঙ্কিত-আতঙ্কিত। আর তা মাথায় নিয়েই শুক্রবারের মতো গতকালও ভোটগ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাজারো প্রিসাইডিং, সহকারি প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারকে জড়ো করে ভোটের প্রশিক্ষণ চলেছে গতকালও। অথচ সেখানে স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সরঞ্জাম রাখা হয়নি। অন্যদিকে দুপুরে চট্টগ্রামেও পৌঁছে যায় আরেক দুঃসংবাদ। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে আরও একজনের মর্মান্তিক মৃত্যু।
করোনায় ঝুঁকি-আতঙ্কের মধ্যদিয়ে প্রকারান্তরে শাস্তির মতোই প্রশিক্ষণ চললেও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাসহ চট্টগ্রামবাসীর মুখে ঘুরেফিরে ছিল ওই একই জিজ্ঞাসা। দুর্যোগ সত্তে¡ও ২৯ মার্চ চসিক ভোটকান্ড কখন থামবে? ইসি’র পক্ষ থেকে তা বাতিল কিংবা স্থগিতের ঘোষণার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। অবশেষে দুপুরে আসে সেই প্রত্যাশিত স্থগিত হওয়ার ঘোষণা।
এর পূর্ব পর্যন্ত পথেঘাটে চট্টগ্রামবাসী বিরক্তি, ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন। কেন দেরি? হুদা কমিশন কী ভাবছে? তাদের কথা, ‘বন্ধ হোক ভোটের নামে নাটক।
সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে যখন চসিক ভোগ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের পূর্ববর্তী সিডিউল অনুযায়ী জড়ো করে ভোটের প্রশিক্ষণ চলে, তখন সবারই চেহারায় অজানা আতঙ্ক ও ভীতির ছাপ দেখা যায়। তারা বলেন, কী করবো আমরাতো বাস্তবে অসহায়। নগরীর কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ পরিবেশে সংবাদকর্মীরা আরও দেখেন, বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী নিজ দায়িত্বে মাস্ক ব্যবহার করছেন। খুব কম সংখ্যক প্রশিক্ষণার্থীর হাতে গ্লাভস। তাছাড়া হাতেকলমে এ প্রশিক্ষণের জন্য ইভিএম স্পর্শ করে ব্যবহারের আগেই যে হাতে গ্লাভস ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের কথা, ইসির পক্ষ থেকে আশ^স্ত করা হয়েছিল তা দেখা গেছে দুয়েকটি। বেশিরভাগ কর্মকর্তা তাও পাননি।
এ সময় কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী বলেন, আমরা নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে এসেছি। কিন্তু পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কোন ব্যবস্থা নেই। স্যানিটাইজার এবং গ্লাভ দেয়ার কথা। অথচ সবাই একই মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দিচ্ছি। করোনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। প্রসঙ্গত গত শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইভিএমে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি নিশ্চয়ই আছে’। এহেন আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠার মাঝেই চট্টগ্রামে দ্বিতীয় দিনের মতো চলে চসিক ভোটকান্ডের জন্য বাস্তবে নজিরবিহীন এক শাস্তিমূলক প্রশিক্ষণ-যন্ত্রণা। অংশগ্রহণকারিরা ছিলেন দৃশ্যত: অসহায়। চসিক নির্বাচনে ৭৩৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৪ হাজার ৮৮৬ জন সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার এবং ৯ হাজার ৭৭২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্বে।
এদিকে ইসি’র এই ‘অবাক নির্বাচনী’ আয়োজন বন্ধ বা স্থগিতের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীগণ এবং তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকরা যার যার ঘরে ফিরে গেলেন। এর ফলে সবাই হাফ ছেড়ে যেন বাঁচলেন। চাটগাঁবাসী এহেন দৃশ্য অতীতে কখনই ঘটতে দেখেনি।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস দুর্যোগ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে চসিক নির্বাচন নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর চরম ক্ষোভ-অনীহা এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে সুস্পষ্ট জনমত প্রতিফলিত হয় সবার আগেই দৈনিক ইনকিলাবে ধারাবাহিক প্রকাশিত সরেজমিন প্রতিদেনগুলোতে। পাঠকমহল এবং চট্টগ্রামের রাজনৈতিক-সামাজিক নেতা-কর্মীদের মাঝে তা সাড়া জাগায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।