পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। বহুদিনের টালবাহানা, দীর্ঘ ৭ বছর ধরে চলা আইনি জটের গেরো পেরিয়ে গতকাল (শুক্রবার) ভোর সাড়ে ৫টায় ফাঁসি হল নির্ভয়া কান্ডের ৪ অপরাধীর। এই প্রথম দিল্লির তিহার জেলে একটি নির্দিষ্ট মামলায় একসঙ্গে ৪ অপরাধীর- ফাঁসি হল। ভারতের ইতিহাসেও এই ঘটনা নজিরবিহীন। মৃত্যুদন্ডের সাজা কার্যকর করা হল আসামি অক্ষয় ঠাকুর (৩১), পবন গুপ্তা (২৫), বিনয় শর্মা (২৬) ও মুকেশ সিংয়ের। স্বস্তি পেল এত বছর ধরে আদালতে চক্কর কাটা নির্ভয়ার পরিবার। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির ২৩ বছর বয়সী এক প্যারা মেডিকেল ছাত্রীকে নির্মমভাবে গণধর্ষণ করে রাজপথে ছুঁড়ে ফেলে দেয় মোট ৬ দুষ্কৃতি। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে একজন নাবালক বলে সংশোধনাগার থেকে ৩ বছর পরে ছাড়া পেয়ে যায়। আরেক অভিযুক্ত রাম সিং জেলের মধ্যেই আত্মহত্যা করে। বাকি ৪ আসামিকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে আদালত।
ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেন, ‘নির্ভয়ার মা হিসাবে আমি গর্বিত’। সবকিছুর পরেও শেষপর্যন্ত যেভাবে ৪ দোষীকে ফাঁসিতে ঝোলালেন জল্লাদ পবন, তাতে হাসি ফিরেছে নির্ভয়ার পরিবারের মুখে। যদিও এই ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে চলে দীর্ঘ টালবাহানা। এর আগে মোট ৩ বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেও নানা রকম আইনি জটিলতার কারণে তা খারিজ করতে বাধ্য হয় দিল্লির এক আদালত। নির্ভয়া-কান্ডের ওই ৪ অপরাধীকে সব আইনি বিকল্পের পথ খুলে দিতে এই পথে হেঁটেছিল দেশের আদালত। শেষ পর্যন্ত গতকাল অর্থাৎ ২০ মার্চ ফাঁসি দেয়ার লক্ষ্যে নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়।
ফাঁসির আগের রাতে নির্ভয়া মামলায় মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত ওই ৪ আসামি খেতে অস্বীকার চায়নি এবং তারা সারা রাত জেগে ছিল, জানিয়েছেন তিহার জেলের কর্মকর্তারা। এই ফাঁসি কার্যকরের আগে গোটা তিহার জেলকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে রাখা হয়। গোটা জেল চত্বরই ফাঁসির আগের রাতে লকডাউন পরিস্থিতিতে ছিল। তিহার জেল সূত্রে খবর, এশিয়ার বৃহত্তম এই কারাগারের কোনও বন্দিই এদিন চোখের পলকের জন্যেও ঘুমাতে পারেনি। সবাই যেন প্রহর গুণছিল নির্ভয়া কান্ডের আসামিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার জন্যে।
বৃহস্পতিবারই যখন আইনের সব পথ বন্ধ হয়ে গিয়ে একরকম নিশ্চিত হয়ে যায় ৪ অপরাধীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ার বিষয়টি, তখন নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেন, ‘অবশেষে দোষীদের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে। এবার আমি শান্তি পাব। আমার মেয়ের আত্মাও শান্তি পাবে’।
শুধু নির্ভয়া বা নির্ভয়ার পরিবারই নয়, এই ৪ ঘৃণ্য অপরাধীর ফাঁসিতে যেন খুশি হয়েছে রাজধানী দিল্লিসহ গোটা দেশই। কেননা যখন দিল্লি গণধর্ষণ কান্ডের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে তখন দেশ জুড়েই উঠেছিল প্রতিবাদের ঢেউ। সবার মুখেই এক কথা ছিল, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ওই অপরাধীদের। এমনকি এই ভয়াবহ গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পরে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সম্পর্কিত আইনও পরিবর্তন করা হয় দেশ। দীর্ঘ ৭ বছর পর এবার যেন তাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল গোটা দেশ।
এদিকে নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসি কার্যকর হওয়া নিয়ে মন্তব্য করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বললেন, ন্যায় প্রতিষ্ঠা হল। সাত বছর পরে লড়াইয়ের পরে দিল্লির ধর্ষণের অভিযুক্তদের ফাঁসি হয়েছে এদিন ভোরে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মত, ‘দেশ চালাতে সবচেয়ে জরুরি নারীসুরক্ষা ও সম্ভ্রম, কাজেই এই ঘটনায় ন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়েছে’। এদিন তিনি আরও বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে নারীশক্তি বিকশিত হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে। সর্বত্র নারীশক্তিকে সমান সুযোগ দিতে হবে’। সূত্র : এনডিটিভি ও নিউজ১৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।