Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বৃষ্টিস্নাত মাধবকুন্ডে প্রাণের মেলা

প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে হাজারো প্রাণের মিলনের ছন্দ। ঈদের ছুটিতে উৎসব হবে না তা কি করে হয়। তাইতো বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ঈদ-উল ফিতরের ছুটিতে হাজারো প্রাণের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে মাধবক- জলপ্রপাত। ঈদের দিন সকাল থেকেই বড়লেখার আকাশ গুমোট করে বৃষ্টি পড়তে থাকে। কখনো ভারী কখনো বা হাল্কা বৃষ্টিপাত। বৈরী আবহাওয়া থামাতে পারেনি ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক ও দর্শনার্থীদের। সব বাধা ডিঙ্গিয়ে জলকন্যা দর্শনে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়। উৎসবপ্রিয় মানুষের গন্তব্য যেন মাধবক- জলপ্রপাত। সরেজমিন মাধবকু- জলপ্রপ্রাতে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি-বাদল উপেক্ষা করে পবিত্র ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ ও বিদেশের অসংখ্য দর্শনার্থী ও পর্যটকের মিলনমেলায় মুখরিত। সব ধর্ম-বর্ণের পর্যটকের আগমনে আনন্দ পুরিতে পরিণত হয়ে উঠে মাধবকু- জলপ্রপাত ও আশপাশের এলাকা। পাকিং সমস্যায় রাস্তায় গাড়ির দীর্ঘ লাইন। জেলা পরিষদ কর্তৃক নির্মিত যানবাহন রাখার টার্মিনালে স্থান সংকুলান না হওয়া ও ইজারাদারের প্রতিনিধি নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে গিয়ে টোল আদায় রাস্তার উপর তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে পর্যটকদের অনেক দূরে গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে যেতে হয় জলপ্রপাতের কাছে। মাধবকু-ে আসা পর্যটক স্থানীয় ব্যবসায়ী কৃষ্ণ পাল, নাট্যকর্মী মো. শহীদ-উল ইসলাম প্রিন্স, হবিগঞ্জ নওয়াপাড়া চা বাগানের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক এএফএম ফরহাদ হোসেন, ইস্পাহানি লি.-এর ছাতক ডিপো: ইনচার্জ মো. ফাহিম আহমেদ, মুসফিকা আক্তার, শিক্ষার্থী আনতারা লাবিবা ও হাসনাইন আব্দুল্লাহ্ বলেন-মাধবকু- জলপ্রপাতের ব্যবস্থাপনা আরো উন্নত হওয়া দরকার। তবে আগের চেয়ে অনেকটা উন্নত হয়েছে মাধবকু-। কিন্তু গাড়ি পার্কিং সমস্যার কারণে অনেক ভোগান্তি হয়েছে। অনেক সময়ও নষ্ট হয়েছে। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়েছিলাম আমরা।  ইজারাদার সূত্র জানায়, ঈদের ছুটিতে শুক্রবার, শনিবার ও রোববার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে এ জলপ্রপাতে। জলপ্রপাত এলাকায় কেউবা তুলছেন সেলফি, কেউবা নিজ ও প্রিয়জনের ছবি ক্যামেরাবন্দি করছেন নিজের মোবাইল ফোনে। অনেককে জলপ্রপাতের কু-ের পানিতে নেমে আনন্দে গোসল করতে দেখা গেছে। উৎসবমুখর মানুষের পদচারণা-সবারই একটাই কথা, ঈদের ছুটি চলে যাবে ঘুরতে বের হতে পারবো না তা কি করে হয়। হোক না বৃষ্টি, হোক না তীব্র রোদ, হোক না ঝড়, তাতে কি ঘরে বসে থাকা যাবে? চিত্ত বিনোদনের জন্য পর্যটন কর্পোরেশন নির্মাণ করেছে-হাতি, পেঙ্গুইন, মৎস্যকন্যা, বাঘ, ভালুক, বক, ঈগল পাখি, কুমির, বানর ইত্যাদির ভাষ্কর্য। এসব ভাষ্কর্য আগত শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীকে বাড়তি আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে। ভাষ্কর্যগুলো কৃত্রিম হলেও প্রকৃতির নিপুণ অনুকরণে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে পঞ্চইন্দ্রিয়ে সবকিছুই প্রাকৃতিক বলে মনে হবে। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলপ্রপাতে অবিরাম ঝর্ণাধারা আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। যুগ যুগ ধরে এ পাহাড়ী জলকন্যা সৌন্দর্য পিপাসু ও ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে টানছে। জেলার বড়লেখা উপজেলার ৮নং দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের গৌর নগর মৌজায় মাধবকু- জলপ্রপাতের অবস্থান। পাহাড়ি ছড়ার প্রায় ২শ’ ফুট উপর থেকে যুগ যুগ ধরে গড়িয়ে পড়ছে পানি। এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসবে নারী-পুরুষ, শিশু ও বিদেশী পর্যটকদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে মাধবকু- জলপ্রপাত। কয়েক যুগ ধরে মাধবক- জলপ্রপাতের অঝরধারা প্রবাহমান থাকলেও সত্তরের দশকে দর্শনীয় স্থান হিসেবে এর পরিচিতি প্রকাশ পায়। জলপ্রপাত এলাকায় জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় রেস্টহাউস, পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে রেস্তোরাঁ। বড়লেখায় স্থাপিত দেশের প্রথম ইকোপার্ক, মাধবকু- জলপ্রপাত, আশপাশ এলাকার চা-বাগান, পাহাড়ি টিলা হাকালুকি হাওর দেশী-বিদেশী পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুদের দিন দিন কাছে টানছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৃষ্টিস্নাত মাধবকুন্ডে প্রাণের মেলা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ