নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এক বছর আগে ঠিক এই দিনে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে শ্বেতাঙ্গ উগ্রবাদী জুমার নামাজের সময় মসজিদে গুলি করে হত্যা করেছিল নিরীহ মানুষদের। সে মসজিদেই নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। অল্পের জন্যই যে সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহরা।
গত বছরের ১৬ মার্চ থেকেই শুরু হওয়ার কথা ছিল নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশে টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। সকালে অনুশীলন শেষে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য খেলোয়াড়দের যাওয়ার কথা ছিল মসজিদে। তখনকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সংবাদ সম্মেলনে কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। বলা যায়, সংবাদকর্মীদের একের পর এক প্রশ্নের কারণেই দেরি। তাতে বাকি টিমমেটরা হয়তো কিছুটা বিরক্তও হয়েছিলেন। নামাজে যেতে হবে যে! কে জানতো, সংবাদ সম্মেলনের সেই দেরিই বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়ে দেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বাংলাদেশ দলের বাস সেই আল নুর মসজিদের সামনেও গিয়ে পৌঁছে। ঠিক তখনই রক্তাক্ত শরীর নিয়ে এক নারী মসজিদের ভেতর থেকে বেরিয়ে পড়ে যান। ক্রিকেটাররা হতভম্ব হয়ে গেলেও চিন্তাও করতে পারেননি ভেতরে কী ঘটছে? দলের সঙ্গে ছিল না কোনো নিরাপত্তাকর্মী, এমনকি কোনো লিয়াজোঁ অফিসারও। আরেকটু আগে পৌঁছালে ক্রিকেটাররা মসজিদেই ঢুকে যেতেন। এমনকি তখনও, কিন্তু বাসের পাশে নিজের গাড়ি নিয়ে এসে এক নারী চিৎকার করে তাদের মসজিদে ঢুকতে নিষেধ করেন। জানান, ভেতরে গোলাগুলি চলছে।
ভয়াবহ সে দৃশ্য দেখেন ক্রিকেটাররা। রক্তাক্ত লোকজন চারদিকে পড়ে আছে। আতঙ্কিত ক্রিকেটাররা ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভাল মাঠে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের যান্ত্রিক পেশাদারিত্বের কারণে বাধ্য হয়ে পার্কের মধ্য দিয়ে হেঁটে হেঁটে ফিরতে হয় তাদের। এই দৃশ্য কী ভুলতে পারবেন তারা?
স্বভাবতই এই ঘটনায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট বাতিল হয়ে যায়। ট্রমা নিয়ে দেশে ফিরে আসে বাংলাদেশ দল। সেই ক্রাইস্টচার্চ হামলার এক বছর পর আজ নিশ্চয় সে স্মৃতি তাড়া করে বেড়াবে ক্রিকেটারদের।
হামলার শিকার ‘আল-নূর’ মসজিদের কাছেই হর্নক্যাসেল ময়দানে স্মরণসভা হওয়ার কথা ছিল। তবে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটায় বড় পরিসরের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। তবে, ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আল-নূর এবং লিনউড মসজিদের সামনে নিহতদের স্মরণ করছেন কিউইরা। অনেকেই সম্প্রীতির অংশ হিসেবে প্রদর্শন করছেন দেশটির ঐতিহ্যবাহী ‘হাক্কা ড্যান্স’। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারী উগ্রবাদী, বিকৃত মস্তিষ্কের সন্ত্রাসী ব্র্যান্টন ট্যারেন্টের এলোপাতাড়ি গুলিতে প্রাণ হারান পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন। দিনটি কি কখনোই ভুলতে পারবেন তামিম-মুশফিকরা?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।