Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমগাছটি ১৯৭১-এর বর্বরতারই প্রমাণ

কালের সাক্ষী

মো. আশিকুর রহমান টুটুল, লালপুর (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

১৯৭১ সালে পাক বাহিনী বিনা অপরাধে বাঙালিদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। ১৯৭১ সালে ৩০ মার্চ উত্তরবঙ্গের মধ্যে নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের ময়নাগ্রামে পাক বাহিনীর সঙ্গে প্রথম সম্মুখ স্বাধীনতা যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
সেই দিন এ যুদ্ধে ময়নাগ্রামে প্রায় অর্ধশতাধিক মুক্তিকামী বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সে সময় ৭ জন বাঙালি যোদ্ধা সৈয়দ আলী মোল্লা, আয়েজ উদ্দিন মোল্লা, মসলেম উদ্দিন মোল্লা, আবুল কাশেম, সেকেন্দার আলী, খায়রুল আনাম ও আব্দুর সামাদকে এই আম গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে পাক বাহিনী। এ সময় সেই ব্রাশফায়ারের বুলেটের আঘাতে নির্বাক এই আমগাছটিও ক্ষতবিক্ষত হয়। এর মধ্যে গুলি খেয়েও গুরুতর আহত আবস্থায় প্রাণে বেঁচে যায় আব্দুস সামাদ। সেদিনের পাক বাহিনীর এই নির্মম হত্যায় ৭ বাঙালি যেমন নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল তেমনি এই আমগাছটিও সেদিন পাকবাহিনীর বন্দুকের সামনে নিজের বুক পেতে দিয়েছিল। সেই ব্রাশফায়ারের হাজারো গুলি বুকে নিয়ে এক পায়ের উপরে ভর করে আমগাছটি আজও দাড়িয়ে আছে বর্বরতার সাক্ষী দেয়ার জন্য।
সরেজমিনে গতকাল সকালে ময়নাগ্রামে দেখা যায়, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে কালেরসাক্ষী আমগাছটি বুকে শহীদের রক্ত ও হানাদার বাহিনীর বুলেট নিয়ে এক পায়ের ওপরে ভর করে সবুজ পাতার মাথায় হাজারো মুকুলে ছেয়ে গেছে। পাকিস্তানি বর্বরতার সাক্ষী দেয়ার জন্য কালজয়ী সাক্ষী হিসেবে আজও যেন ডেকে বলছে আমি আমগাছ প্রস্তুত পাকিস্তানি বর্বরতার সাক্ষী দিতে।
এ সময় ওয়ালিয়া ইউনিয়নের ময়নাগ্রামের ওয়ার্ড সদস্য হারুনর রশিদসহ এলাকার অনেকের সঙ্গে কথা হয় তারা ইনকিলাবকে বলেন, ইতিহাসের সাক্ষী এই আমগাছটি আনুমানিক গত ২০১০ সালে লালপুর উপজেলা আ.লীগ অর্থের বিনিময় গাছের মালিকের নিকট থেকে ক্রয় করে নেন। মৃত পায় এই আম গাছটিকে কালের সাক্ষী হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে বিভিন্নভাবে আমরা পরিচর্যা করে কোনো রকম টিকিয়ে রেখেছি। এই গাছের চারপাশে ৪ শহীদের কবর অরক্ষিত আছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি ইনকিলাবকে জানান, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিবিজারিত স্থান, গণকবর ও বধ্যভূমী সংরক্ষণের জন্য প্রকল্প আছে। এই গাছকে সংরক্ষণ করার জন্য সরকারি বিধি মোতাবেক আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমগাছ-১৯৭১
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ