Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপকভাবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন ও জারী করলে সারাদেশ সকল বালা-মুসীবত থেকে অবশ্যই রক্ষা পাবে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২০, ১১:৫৩ এএম | আপডেট : ২:৫৩ পিএম, ১৪ মার্চ, ২০২০

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা তথা সাইয়্যিদুল আইয়াদ পালন করা সকল সৃষ্টির প্রতি ফরয করে দিয়েছেন। সেজন্য সরকারের দায়িত্ব কর্তব্য হলো, প্রতি ইছনানিল আযীম শরীফ বা সোমবার এবং প্রতি হিজরী মাসের ১২ই শরীফ দিবসকে বিশেষ আইয়্যামুল্লাহ শরীফ বা বিশেষ দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা। সম্মানিত মীলাদ শরীফ সর্বত্র জারী করা। পাশাপাশি আগামী বছর পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মহাসমারোহে পালনের লক্ষ্যে আসন্ন মুজিববর্ষের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের চেয়ে লক্ষ কোটি গুণ বেশী বাজেট বরাদ্দ করে এখন থেকেই ব্যাপকভাবে পালনের প্রস্তুতি নেয়া। তাহলে দেশ ও জনগণ সকল বালা-মুছীবত থেকে অবশ্যই রক্ষা পাবে এবং নিয়ামত দ্বারা পূর্ণ হবে।

আজ জাতীয়
প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আয়োজিত এক
সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে দলীলভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন, বিশিষ্ট গবেষক ও কলামিষ্ট, মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসার মুহতামীম আল্লামা মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন এবং বিশিষ্ট গবেষক আল্লামা মুহম্মদ সিরাজুদ্দীন আঁখি প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, মুহম্মদ আবু বকর সিদ্দীক হাসান।

বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার যিনি হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যমীনে ও মানবজাতির মধ্যে প্রেরন করেছেন; সেজন্যই উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। যা কুল মাখলূকাতের জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-“হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এসেছেন মহান নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সকল ব্যাধিসমূহ দূরকারী, কুল-কায়িনাতের মহান হিদায়েত দানকারী ও ঈমানদারদের জন্য মহান রহমতস্বরূপ (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া, ইহসান ও রহমত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে) উনার জন্য ঈদ উদযাপন তথা খুশি প্রকাশ করো। (তোমরা যতো কিছুই করোনা কেনো) তিনিই হচ্ছেন সমগ্র কায়িনাতের জন্য সবচেয়ে বড় ও সর্বোত্তম নিয়ামত।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি মানবজাতির প্রতি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা তথা সাইয়্যিদুল আইয়াদ পালন করাকে ফরয করে দিয়েছেন। আর এ মুবারক নির্দেশ পালনার্থেই সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা সারাজীবন আখিরী নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র বিলাদতি শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষ্যে খুশী প্রকাশ তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন।

বক্তারা বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাপবিত্রতম বিলাদত শরীফ তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে যথাযথ তা’যীম তাকরীম-ইজ্জত-সম্মান করবেন তিনি আমার সাথে পবিত্র জান্নাতে প্রবেশ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র হাদীস শরীফ উনার বরাতে বক্তারা আরো বলেন, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি খাদ্য খাওয়ানোর মাধ্যমে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্রতম বরকতময় বিলাদত শরীফ ১২ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ রাত (ও দিবস) উনাকে যথাযথভাবে সম্মান করবেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন তাঁর জন্য পবিত্রতম শাফায়াতকারী হবো। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদত শরীফ উনার সুমহান সম্মানার্থে এক দিরহাম খরচ করবেন, সে ব্যক্তি ইয়াতীমদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় এক পাহাড় পরিমান লাল স্বর্ণ দান করার ফযীলত লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ! (নে’মতে কুবরা উর্দূ ১১ পৃষ্ঠা)

বক্তারা আরো বলেন, “যখন কোনো মুসলমান নিজ বাড়িতে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উদযাপন করে তখন সেই বাড়ির অধিবাসীগণের উপর থেকে মহান আল্লাহ পাক অবশ্যই খাদ্যাভাব, মহামারি, অগ্নিকান্ড, ডুবে মরা, বালা-মুছিবত, হিংসা-বিদ্বেষ, কু-দৃষ্টি, চুরি ইত্যাদি উঠিয়ে নেন। যখন উক্ত ব্যক্তি মারা যান তখন মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য মুনকার-নকীরের সুওয়াল-জাওয়াব সহজ করে দেন। আর উনার অবস্থান হয় মহান আল্লাহ পাক উনার সন্নিধানে সিদকের মাক্বামে।” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবরা)
তাই দেশ এবং জনগনকে
রহমত বরকতপূর্ণ করতে পাশাপাশি বালা-মুছীবত থেকে বাঁচাতে সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, অসীম ফযীলতপূর্ণ মহাপবিত্র ও মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ তথা ১২ই শরীফ ব্যাপকভাবে পালন ও জারীর উদ্যোগ নেয়া।

বক্তারা বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ অর্থাৎ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ এবং সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ পবিত্র ১২ই শরীফ উপলক্ষে বিশ্বের সকল দেশের প্রত্যেক সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো-১২টি বিষয় পালন করা ও জারী করা। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে প্রত্যক্ষভাবেই হোক আর পরোক্ষভাবেই হোক অর্থাৎ যেভাবেই হোকনা কেন যে-ই মানহানীকর বিষয় প্রচার, প্রসার করবে অথবা প্রকাশ করবে তাদেরকে এবং তাদের সংশ্লিষ্ট সকলের শাস্তিই মৃত্যুদন্ড। তা কার্যকর করা, জারী করা ফরযে আইন। এটাই সম্মানিত ও পবিত্র শরীয়ত উনার হুকুম। তাই জারি করতে হবে। মহাপবিত্র সাইয়্যিদুশ শুহুরিল আযীম শরীফ মাসে তথা রবিউল আউওয়াল শরীফ মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠানে মাসব্যাপী ছুটি ঘোষণা করা। সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ দিবসকে বিশ্ব ছুটির দিবস হিসেবে ঘোষণার উদ্যোগ নেয়া। সর্বপ্রকার অশ্লীল ও অশালীন কাজ বন্ধ করা। পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষ্যে সর্বোচ্চ ভাতা ও বোনাস দেওয়া সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব-কর্তব্য। সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদরাসায় ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ দিবসে বিশেষ মীলাদ শরীফ মাহফিল ও তাবারুকের আয়োজন করা। সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ব্যাপকভাবে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনে নির্দেশনা জারী করা এবং সরকারী-বেসরকারী স্থাপনাসমূহ মনোরম সাজে সজ্জিত করা। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এবং নিজ নিজ এলাকায় মন্ত্রী-এমপি কর্তৃক সর্বস্তরের জনগণের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করা, বছরব্যাপী ইসলামী অনুষ্ঠানসূচী ঘোষণা করা, বই প্রদর্শনী, সামরিক প্রদর্শনী, পতাকা উত্তোলন, অস্বচ্ছল ও বেকারদের চাকুরী এবং গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার ঘোষণা দেয়াসহ বিভিন্ন শরঈ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা।

১২টি বিষয়ে বক্তারা আরো বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে ‘পবিত্র না’তু উম্মি রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনাকে জাতীয় না’ত শরীফ হিসেবে ঘোষনা করতে হবে। দেশের সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদরাসায় তা প্রতিদিন পাঠের আয়োজন অপরিহার্য। সর্বস্তরে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জারী করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতো স্বতন্ত্র শক্তিশালী গবেষণা কেন্দ্র এবং পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা এবং কোটি কোটি কিতাব রচনা করা। পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানে ছাড় দেয়া এবং বিশেষ পণ্য সামগ্রী তৈরী করা। ১২ই শরীফ দিবসে দেশের সব মসজিদ-মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, মাজার শরীফসহ সব গরীব, দুঃখীদের নতুন পোশাক, ওষুধ বিতরণ, নগদ অর্থ বরাদ্দ ও বিশেষ খাবার সরবরাহ করা। বিশেষ প্রতিযোগীতার আয়োজন করা।
বক্তারা আরো বলেন, কুল কায়িনাত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বরকত ও রহমত হাসিলের জন্য পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফে অনন্তকালব্যাপী সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ মাহফিল জারী করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি হিজরী মাসের সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ অর্থাৎ পবিত্র ১২ই শরীফে আয়োজিত পবিত্র কোটি কোটি কন্ঠে মীলাদ শরীফ মাহফিল জারী করা হয়েছে। এছাড়া সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সকল আইয়্যামুল্লাহ শরীফ বা বিশেষ দিবসসমূহ জারী করা হয়েছে। এসব আজিমুশ্বান মাহফিলে অংশগ্রহণ করলে সকলেই সেই রহমত, বরকত ও নিয়ামত মুবারক হাছিল করতে পারবেন। তাই বক্তারা সবাইকে এসব আজিমুশ্বান মাহফিলে সর্বোতভাবে অংশগ্রহণের আহবান জানান।



 

Show all comments
  • Faisal ১৫ মার্চ, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
    Great initiative... It will bring unity ,peace, and take out the corruption out of our country
    Total Reply(0) Reply
  • রাফিউল হক ১৫ মার্চ, ২০২০, ৩:২৭ এএম says : 0
    ভাল কথা এখন আর কেউ শোনে না রে ভাই!
    Total Reply(0) Reply
  • Touhid ১৫ মার্চ, ২০২০, ৭:২১ পিএম says : 0
    1000% right no dout
    Total Reply(0) Reply
  • Touhid ১৫ মার্চ, ২০২০, ৭:২১ পিএম says : 0
    1000% right no dout
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ