মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নরেন্দ্র মোদি সরকার যে সব বিদেশীকে ভারতের নাগরিকত্ব দিয়েছে, তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানীরা। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যসভায় এ তথ্য পেশ করেছেন।
তথ্যে দেখা গেছে যে, সংশোধিত নাগরিক আইনের বাইরেও ভারতের আশেপাশের প্রতিবেশী দেশগুলোর নাগরিকরা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। মোদি সরকার যখন জোর দিয়ে বলেছে যে, প্রতিবেশী দেশগুলোর নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দেয়ার জন্য আইন প্রয়োজন, তখনই নাগরিকত্ব দেয়ার এই ধারাটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, গত এক দশকে যে সংখ্যক বাংলাদেশী ভারতের নাগরিকত্বের জন্য চেষ্টা করেছে, তাদের সংখ্যা বছরে দুই অঙ্কের মধ্যে সীমিত। এই তথ্য সাবেক বাংলাদেশী হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর বিবৃতিকে সমর্থন করে। তিনি বলেছিলেন যে, তার দেশের মানুষ নতুন দেশের খোঁজে ভারতে প্রবেশের চেয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ভূমধ্যসাগরে যাওয়া বেশি পছন্দ করে।
প্রকৃতপক্ষে, যে ৭০টি দেশের নাগরিকদেরকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার তালিকায় দেখানো হয়েছে, এদের মধ্যে শুধুমাত্র পাকিস্তানী আর আফগানদের সংখ্যা চার অঙ্কের কোঠায় রয়েছে। বাকি অধিকাংশ দেশের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা এক বা দুইয়ের কোঠায় সীমাবদ্ধ।
বিতর্কিত সিটিজেনশিপ অ্যামেণ্ডমেন্ট অ্যাক্টের (সিএএ) মাধ্যমে বিধান করা হয়েছে যে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা ছয়টি ধর্মের মানুষদেরকে দ্রুত ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। মুসলিমদেরকে দ্রুত নাগরিকত্ব দেয়ার তালিকা থেকে বাদ রাখার বিষয়ে সরকার বলে আসছে যে, তারা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এই চেষ্টা চালাতে পারবে।
২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত এই তিনটি দেশের ৩,৬৭৪ জন ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হলো পাকিস্তানী। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের কতজন মানুষকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বছরপ্রতি তথ্য জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সমাজবাদী দলের সদস্য রবি প্রকাশ ভার্মা। তার প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
সরকারের সরবরাহ করা তথ্য অনুযায়ী ২০১১ সাল থেকে ৪,০৮৫ জন পাকিস্তানীকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এবং এর বড় অংশই দেয়া হয়েছে মোদির আমলে। ২০১৪ ও ২০১৫ সাল বাদি দিলে অতীতের যে কোন ইউপিএ সরকারের তুলনায় মোদির আমলে বেশি পাকিস্তানীকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে ২৬৩ জন পাকিস্তানীকে নাগরিকত্ব দেয়া হয় এবং ২০১৬ সালে এই সংখ্যা বেড়ে ৬৭০ হয়। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে এটা আবার কমে যথাক্রমে ৪৭৬ ও ৪৫০ তে দাঁড়ায়। শুধু এই বছরের প্রথম দুই মাস ছয় দিনে ১৯১ জন পাকিস্তানীকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে।
এই সব নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে সিএএ’র আওতার বাইরে। সিএএ’র নীতিমালা এখনও চুড়ান্ত করা হয়নি। ইউপিএ আমলে এই সংখ্যা ছিল ২০১১ সালে ৩০২ জন, ২০১২ সালে ৩৫৬ জন এবং ২০১৩ সালে ৩০১ জন। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৬৭, যে বছর দিল্লীর ক্ষমতায় পরিবর্তন আসে।
আফগানিস্তানের ১১০৭ জন ব্যক্তিকে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। ইউপিএ আমলে ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ১৩৩ জনকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। মোদির আমলে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ২৪৪ জনকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়। ২০১৭ সালে এটা কমে ১১৭, ২০১৮ সালে ৩০ এবং গত বছরে সেটা ৪০ এ নেমে আসে। এ বছর একজন মাত্র আফগানকে এ পর্যন্ত নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশীদের নাগরিকত্ব দেয়ার সংখ্যা ২০১৫ সালে বেড়ে যায় কারণ ওই বছর ইন্দো-বাংলাদেশ স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশ ছিটমহল বিনিময় করে। সিটিজেনশিপ অ্যাক্টের ৭ ধারা অনুযায়ী সে সময় ১৪,৮৬৪ জন বাংলাদেশীকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। একই সময়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয় ৩৭,৫৩২ জন ভারতীয়কে। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।