Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জয়ে শুরু, জয়েই শেষ বাংলাদেশের

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টি-টোয়েন্টি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২০, ৯:১০ পিএম | আপডেট : ৯:১৩ পিএম, ১১ মার্চ, ২০২০

ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকরা জিতেছে ৯ উইকেটে। কেবল দ্বিতীয়বারের মতো এই সংস্করণে ৯ উইকেটে কোনো জয় পেল তারা। সফরে সব আন্তর্জাতিক ম্যাচে হারল জিম্বাবুয়ে। ২৫ বল বাকি থাকতে ১২০ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ৮ চারে ৪৫ বলে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন লিটন। দুই ছক্কায় ১৬ বলে ২০ রান করেন সৌম্য।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

জিম্বাবুয়ে : ২০ ওভারে ১১৯/৭ (কামুনহুকামউই ১০, টেইলর ৫৯*, আরভিন ২৯, উইলিয়ামস ৩, রাজা ১২, মুতুমবামি ১, মাটোমবোদজি ৩, মাধেভেরে ০, মুম্বা ১*; মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-২, সাইফ ৪-০-৩০-১, আল আমিন ৪-০-২২-২, হাসান ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৩-০-১৪-১, আফিফ ১-০-২-১)।

বাংলাদেশ : ১৫.৫ ওভারে ১২০/১ (লিটন ৬০*, নাঈম ৩৩, সৌম্য ২০*; মাধেভেরে ৩-০-২০-০, এমপোফু ৩.৫-০-২৭-১, মুম্বা ৩-০-২৬-০, সুমা ১-০-১০-০, উইলিয়ামস ৩-০-১৬-০, রাজা ২-০-১৮-০)।

ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা : লিটন দাস।

সিরিজ : বাংলাদেশ ২-০তে জয়ী।

ফিরলেন নাঈম, হাফসেঞ্চুরি লিটনের

ওভার প্রতি কেবল সাড়ে চার রান প্রয়োজন। সহজেই আসছে রান। ম্যাচ শেষ করে আসা খুব কঠিন ছিল না। তবুও ফাঁদে পা দিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ছক্কার চেষ্টায় ফিরলেন সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। ভাঙল ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।

ক্রিস এমপোফুকে পুল করে ওড়াতে চেয়েছিলেন নাঈম। টাইমিং করতে পারেননি। ধরা পড়েন ডিপ মিডউইকেটে। অন্যদিকে তার সঙ্গী লিটন দাস ঠিকই তুলে নিয়েছেন তার ব্যক্তিগত পঞ্চাশ রান। তিনি ৫০ রানে অপরাজিত আছেন।

পাঁচ চারে ৩৪ বলে ৩৩ রান করেন নাঈম। ১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৮৯/১। ক্রিজে লিটনের সঙ্গী আগের ম্যাচের নায়ক সৌম্য সরকার।

লিটন-নাঈমের ব্যাটে ভালো শুরু

বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের ২য় ম্যাচে আজ (বুধবার) মিরপুর শেরে বাংলায় মুখোমুখি দুই দল। টাইগার বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ে জয়ের জন্য মাত্র ১২০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়। জয়ের জন্য ব্যাটিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ দল।

এই রিপোর্ট লেখা অবধি টাইগারদের সংগ্রহ ৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৩ রান। উইকেটে আছেন লিটন দাস (১৮) এবং মোহাম্মদ নাঈম শেখ (১৪)।

বাংলাদেশের সামনে ছোট লক্ষ্য

সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়েছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমান করলেন বোলাররা। মুস্তাফিজুর রহমান ও আল আমিনের তোপে ১১৯ রানেই আটকে যায় সফরকারিরা। ব্রেন্ডন টেইলরের অপরাজিত ৫৯ রানের পরও বাংলাদেশকে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

জিম্বাবুয়ে : ২০ ওভারে ১১৯/৭ (কামুনহুকামউই ১০, টেইলর ৫৯*, আরভিন ২৯, উইলিয়ামস ৩, রাজা ১২, মুতুমবামি ১, মাটোমবোদজি ৩, মাধেভেরে ০, মুম্বা ১*; মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-২, সাইফ ৪-০-৩০-১, আল আমিন ৪-০-২২-২, হাসান ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৩-০-১৪-১, আফিফ ১-০-২-১)।

মুস্তাফিজের জোড়া শিকার

নিজের শেষ ওভারে ফিরে উইকেট পেলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ফিরিয়ে দিলেন টিনোটেন্ডা মাটোমবোদজিকে। ডিপ মিডউইকেটে তার সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। সেই ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরের ক্যাচও মুঠোয় নিয়েছেন এই তরুণ।

এই দুই উইকেটের মাঝে সফরে নিজের প্রথম ফিফটি পেয়েছেন ব্রেন্ডন টেইলর। শুরুতে জীবন পাওয়া অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ৪২ বলে ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ। ১৯ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১১৩/৭। ক্রিজে টেইলরের সঙ্গী কার্ল মুম্বা।

আল আমিনের দ্বিতীয় শিকার মুতুমবামি

সময়ের দাবি মিটিয়ে বড় শট খেলতে গিয়েই ফিরলেন রিচমন্ড মুতুমবামি। আল আমিন হোসেনকে ওড়ানোর চেষ্টায় লং অনে দিলেন সহজ ক্যাচ। খানিক আগে লং অফে ক্যাচ ছাড়া সৌম্য সরকার এবার কোনো ভুল করেননি। আস্থার সঙ্গে মুঠোয় জমান ক্যাচ। ২ বলে ১ রান করে ফিরেন মুতুমবামি।

১৭ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১০১/৫। ক্রিজে ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গী টিনোটেন্ডা মাটোমবোদজি।

সাইফের শিকার রাজা

দ্রুত এগোনোর চেষ্টায় থাকা সিকান্দার রাজা যেতে পারলেন না বেশিদূর। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের লেগ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল যে কোনো জায়গায় পাঠাতে পারতেন রাজা। মারে জোর ছিল বেশ। তবে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ মুঠোয় নিতে কোনো ভুল হয়নি আল আমিনের।

১০ বলে দুই চারে ১২ রান করেন রাজা। ১৬ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৯৭/৪। ক্রিজে ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গী রিচমন্ড মুতুমবামি।

মেহেদীর শিকার উইলিয়ামসন

মেহেদী হাসানের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ডাউন দ্য উইকেটে এসেছিলেন শন উইলিয়ামস। তবে সংযোগ ঘটেনি ব্যাটে-বলে। সরাসরি বল চলে যায় মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। মিস করেননি এই তারকা উইকেটরক্ষক। স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩ রান করেছিলেন তিনি।

এই রিপোর্ট লেখা অবধি জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৩.২ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৬ রান। উইকেটে আছেন, ব্রেন্ডন টেইলর (৩৩)।

আরভিনকে ফেরালেন আফিফ

মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভাঙলেন আফিফ হোসেন। ক্রেইগ আরভিকে ফিরিয়ে দিলেন তরুণ এই অফ স্পিনার। অফ স্টাম্পের বাইরের বল লং অফ দিয়ে ওড়াতে চেয়েছিলেন আরভিন। টাইমিং করতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিছুটা এগিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নেন সৌম্য সরকার। ভাঙে ৫৭ রানের জুটি।

১২ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৭১/২। ক্রিজে ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গী শন উইলিয়ামস।

প্রথম উইকেট আল আমিনের

তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে আল আমিন হোসেন এনে দিলেন প্রথম সাফল্য। কট বিহাইন্ড করে ফেরালেন টিনাশে কামুনহুকামউইকে। আল আমিনকে স্কুপ করতে চেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার। ঠিক মতো পারেননি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।

১০ বলে দুই চারে ১০ রান করেন কামুনহুকামউই। ৩ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১৫/১। ক্রিজে বেন্ডন টেইলরের সঙ্গী ক্রেইগ আরভিন।

জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠালেন মাহমুদউল্লাহ

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

বাংলাদেশ দলে তিন পরিবর্তন

শেষ ম্যাচে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামছে টাইগার শিবির। তামিম, শফিউল ও বিপ্লবের পরিবর্তে নাঈম শেখ, আল-আমিন ও হাসান মাহমুদ আছেন একাদশে। আর জিম্বাবুয়ে এনেছে একটি পরিবর্তন। তিরিপানোর জায়গায় খেলছেন টিশুমা।

বাংলাদেশের একাদশ : নাঈম শেখ, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আল-আমিন হোসেন, হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।

জিম্বাবুয়ে একাদশ : তিনাশে কামুনহুকামুয়ে, ক্রেইগ আরভিন, ব্রেন্ডন টেইলর, সিকান্দার রাজা, শন উইলিয়ামস (অধিনায়ক), উইসলে মাধভের, রিচমন্ড মুতুম্বামি (উইকেটরক্ষক), চার্লটন টিশুমা, তিনোতেন্ডা মুতোম্বোদজি, ক্রিস্টোফার এমপফু ও কার্ল মুম্বা।

মাইলফলক ছোঁয়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশ

টেস্টে প্রথম জয় পেতে লেগেছিল ৫ বছর, টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচেই। এই দুই ফরম্যাটে নিজেদের পাওয়া প্রথম জয়ে জিম্বাবুয়েকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ। এদের বিপক্ষে ম্যাচ এবং জয়ের রেকর্ড সবচেয়ে ভালো বাংলাদেশের। সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়েকে বাংলাদেশের প্রিয় প্রতিপক্ষ বললে ভুল হবে না। সেই জিম্বাবুয়েকে সামনে পেয়ে আবারও জয়োৎসব করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একমাত্র টেস্ট জয় দিয়ে শুরু। এরপর ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়েইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নেওয়ার অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

সিরিজ জয়ের মিশন নিয়ে আজ (বুধবার) সন্ধ্যায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ম্যাচটি সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে।

শেষটা ভালো করার অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশের সামনে আছে মাইলফলক ছোঁয়ার সুযোগ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে হারাতে পারলে এক দফায় কোনো দলের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটেই সিরিজ জয়ের স্বাদ পাবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি এক সিরিজের তিন ফরম্যাটের সব ম্যাচ জেতার সাফল্য যোগ হবে ঝুলিতে। প্রতিপক্ষ দুর্বল হলেও মাইলফলক গড়ার ব্যাপারটি নিশ্চয়ই বাংলাদেশকে বাড়তি মনোযোগী রাখবে এই ম্যাচে।

এর আগেও তিন ফরম্যাটে সিরিজ জয়ের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার পর ওয়ানডে সিরিজও জেতে বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশ। এবার দারুণ ছন্দে থাকা বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এই সাফল্য ছিনিয়ে নিতে সন্ধ্যায় মাঠে নামছে।

এই ম্যাচে তামিম ইকবাল বিশ্রামে থাকতে পারেন। তার জায়গায় খেলানো হতে পারে তরুণ নাঈম শেখকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে আগের দিন টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে জানা গেছে। দুই তরুণ হাসান মাহমুদ ও নাসুম আহমেদকে বাজিয়ে দেখার জন্য এই সিরিজে এই ম্যাচটিই বাংলাদেশের কাছে শেষ সুযোগ।

এই ম্যাচটি দিয়ে বাংলাদেশের ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ৫০তম টি-টোয়েন্টি খেলার মাইলফলক ছুঁতে যাচ্ছেন সৌম্য সরকার। বাংলাদেশের হয়ে ৫০টির বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ(৮৬), মুশফিকুর রহিম (৮৫), সাকিব আল হাসান (৭৬) তামিম ইকবাল (৭৪) ও মাশরাফি বিন মুর্তজা (৫৪)।

চার্লটন টিসুমা, এইন্সলে এনডিলভু ও রেজিস চাকাভাকে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ আছে জিম্বাবুয়ের সামনে। যদিও তাদের একাদশে পরিবর্তন না আসার সম্ভাবনাই বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ