বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ‘স্পেশাল অপারেশন্স এক্সচেঞ্জ’ স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করার পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে এগিয়ে নেবে।

বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে প্রথম ত্রিপক্ষীয় সামরিক কৌশল, ধারণা ও অনুশীলন বিনিময়ের মাধ্যমে এ অঞ্চলের নিরাপত্তাগত হুমকি ও সঙ্কট পরিস্থিতি মোকাবেলায় অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে যৌথ কার্যক্রমের সক্ষমতার উন্নতি করাই এ কর্মসূচির লক্ষ্য।
মঙ্গলবার ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল স্পেশাল অপারেশন্স এক্সচেঞ্জের সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ ‘অপারেশন মনোগ্রাম’ নামে এ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের সামরিক অংশীদারদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে ভূমিকা রাখছে এটি। ‘অপারেশন মনোগ্রাম’ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশি সেনা ও নৌবাহিনীর মধ্যে প্রথম কোনো এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম।
সমাপনী অনুষ্ঠানে এ প্রশিক্ষণ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রাবার্ট মিলার বলেন, মাদক ও মানবপাচার, জলদস্যুতা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে হুমকি প্রতিরোধ ও মোকাবেলার জন্য এই সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পারস্পরিক নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা সবাই সার্বভৌমত্ব, সীমান্ত অতিক্রম করে যাওয়া উন্মুক্ত অর্থনীতি এবং আইনের শাসনের মতো বিষয়গুলো সমুন্নত রাখতে চাই।
তিনি বলেন, চার সপ্তাহের এই আয়োজনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এলিট স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ (এসডব্লিউএডিএস) ইউনিটের ৪০ জন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সেস ফার্স্ট প্যারা-কমান্ডো ব্রিগেডের ১০ জন অংশগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ক্ষুদ্র ইউনিট কৌশল এবং সামুদ্রিক অভিযান বিষয়ে কৌশল, পদ্ধতি এবং আদর্শ করণীয় বিনিময় করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, এর লক্ষ্য ছিল বাহিনীর বিভিন্ন অংশের মধ্যে যৌথ কার্যক্রমের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। সামুদ্রিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জগুলোর মধ্যে ছিল এসডব্লিউএডিএস-এর সম্প্রতি পাওয়া ‘মেটাল শার্ক’ নৌযান, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাংলাদেশের নদীপ্রধান এবং উপকূলীয় এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আদর্শ। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর স্পেশাল অপারেশন্স ইউনিটগুলো নৌযানে আরোহন, সমুদ্রে নেভিগেশন এবং বিশেষ কৌশল বিষয়ে এসডব্লিউএডিএস এর সঙ্গে কৌশল বিনিময় করে।
তিনি বলেন, স্থলভিত্তিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল লক্ষ্যভেদে দক্ষতা, শহুরে অঞ্চলে চলাচল এবং প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ। এই এক্সচেঞ্জটি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর মধ্যে সংলাপ এবং অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়েছে এবং তা এ দুই বাহিনীর মধ্যে ভবিষ্যত যৌথ কার্যক্রমের মান বৃদ্ধি করবে।