বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তি এলাকার বর্ষা শেষে শুঙ্ক মৌসুম শুরু থেকেই তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পদ্মা পাড়ের চরাঞ্চলবাসী। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, ভাঙন কবলিত কাওয়াজানি এলাকাটি বিআইডব্লিউটিএ’র একটি প্রকল্পের আওতায় পড়েছে। তবে আশা করছি এ মাসের মধ্যেই প্রকল্পটি পাস হবে। পাস হলেই কাজ শুরু হবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, পদ্মার ভাঙনে শুধু ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে না, ভাঙন ঝুঁকিতে আছে পুরো গ্রাম। দৌলতদিয়া ও দেবগ্রামের পাঁচটি বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির ও হাজার হাজার বসত বাড়ি রয়েছে ভাঙন ঝুঁকিতে। শুষ্ক মৌসুমে এমন ভাঙন আমরা এর আগে কখনো দেখিনি। জানা গেছে, গত বর্ষার ভয়বহ ভাঙনের ক্ষত কাটতে না কাটতেই আবার শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। শুষ্ক মৌসুমের এ ভাঙনে গত এক সপ্তাহে নদীতে বিলীন হয়েছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। প্রতিদিন একটু একটু করে পদ্মার কড়াল গ্রাসে হারিয়ে যাচ্ছে গোয়ালন্দ উপজেলার মানচিত্র। নিঃস্ব হচ্ছে এলাকার মানুষ।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার তথ্য মতে, প্রমত্তা পদ্মার ভাঙনে ২০১৭ সালে ১৯১৫টি, ২০১৮ সালে ২০৭০টি এবং ২০১৯ সালে জেলায় ৩১২০টি পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। তিন বছরে সাত হাজার ১০৫টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি ও দৌলতদিয়ার বেপারিপাড়া গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নদীর তীব্র ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে ফসলি জমি। নদীর তীরবর্তী প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে একাধিক ফসলি জমি ভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে যে কোন মুহুর্তে। একের পর এক নদী তীরের মাটির চাপ ভেঙে ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে পদ্মায়। জমির মালিকরা জমির ফসল তুলে কিছুটা হলেও বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।
দেবগ্রাম কাওয়াজানি গ্রামের টমেটো চাষী মোসলেম মন্ডল বলেন- বিগত বছরে নদীতে চলে গেছে বসত ভিটাসহ সব কিছু। প্রায় ২ বিঘা জমিতে চাষবাদ করেছিলাম। যতটুকু জমি ছিলো বাকি চাষ করে কোন রকমে চলছিলো সংসার। এই অসময়ে ভাঙনে তাও কেড়ে নিচ্ছে। অপর চাষী বলেন, ৩ বিঘা জমিতে টমেটো ও উস্তা চাষ করেছিলাম। আল্লাহ ফলনও ভালো দিয়েছিলো। বেশ কয়েক সপ্তাহ ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে পদ্মায়। নদী কেড়ে নিলো জমি। জীবন ধারণের চাষের প্রায় আড়াই লাখ টাকার ফসলও চলে গেলো পদ্মার পেটে।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম জানান, নদীর তীরবর্তী ইউনিয়নটি হওয়ায় বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি সহ ঘরবাড়ি। জনগণ এ মুহূর্তে দাবি অতিদ্রুত নদী শাসন না করলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমিসহ পরিবার। বর্ষা মৌসুমে কোটি কোটি টাকার জিও ব্যাগে বালি ভর্তি বস্তা ফেলে সাময়িক ভাঙন রক্ষা করা হলেও স্থায়ী সমাধান চায় ভাঙন কবলিত জনগণ। তাই প্রতি বছর জিও ব্যাগ না ফেলে, একবার মাত্র পরিকল্পিতভাবে নদী শাসন করা হলে পদ্মাপাড়ের মানুষের আহাজারি বন্ধ হবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আসাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের আওতায় পদ্মা নদীর পানির স্তর নিচে চলে যাওয়ার কারণে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। নদী ভাঙন কবলে দিনদিন ছোট হয়ে যাচ্ছে উপজেলার মানচিত্র। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বলেন, শুষ্ক মৌসুমের হঠাৎ ভাঙনের বেশ কিছু এলাকায় ক্ষতি সাধন হয়েছে । ভাঙন কবলিত কাওয়াজানি এলাকাটি বিআইডব্লিউটিএ’র একটি প্রকল্পের আওতায় পড়েছে। তবে আশা করছি এ মাসের মধ্যেই প্রকল্পটি পাস হলে অতিদ্রুত কাজ শুরু হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।