পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘ধানের মূল্য কম অথচ বাজারে চালের মূল্য বেশি, এর কারণ কী-এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই না’। প্রসঙ্গক্রমে একথা বললেন, যশোর সদর উপজেলার বারীনগরের কৃষক আব্দুল করিম। তার কথা, মাঠে সবজির মূল্য কম, বাজারে বেশি, কৃষক কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্য পায় না। অথচ কৃষিপণ্য নিয়ে ব্যবসা করে মুনাফাখোররা লাভবান হচ্ছেন।
খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষক হাসমত আলী বললেন, রোপা আমন (স্বর্ণা, মোটা) ধান প্রতি মণ বাজারে বিক্রি করেছি মাত্র ৬শ’ টাকা। অনেক কৃষক এরও কমমূল্যে বিক্রি করেছে। যশোরের চাল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের কথা, ‘এক মণ স্বর্ণা ধানে ২৮কেজি চাল হয়, প্রতি কেজি স্বর্ণা চালের বাজার মূল্য ৩০ টাকা হিসেবে হয় ৮শ’ ৪০ টাকা।
বিরাট এ ব্যবধান মিলার বা সিন্ডিকেটের। বাস্তবে শুধু ধান চালের ক্ষেত্রে নয়, কৃষিজাত ও ভোগ্যপণ্যের ক্রয়মূল্য, বিক্রয়মূল্য ও মজুদ পরিস্থিতি তদারকির বিষয়টি মাঠপর্যায়ে একেবারেই ঢিলেঢালা। তাছাড়া বাজারে সব পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক অথচ দ্রব্যমূল্য বাড়ছেই-এসবের কারণ কী তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। এ চিত্র যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের।
কৃষি বিপণন অধিদফতরের যশোরের বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ মোতাবেক পণ্য সঙ্কট সৃষ্টি, অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন, মজুদ, ক্রয়কৃত পণ্যের মূল রশীদ বিপণন কেন্দ্রে টাঙানোসহ সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো জোরালোভাবে কার্যকর করা হলে বাজার ব্যবস্থা এলোমেলো কিংবা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হওয়ার কথা নয়।
তিনি জানালেন, চালের মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে মিলার ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং চাল ছাড়াও চিনি, ছোলা ও মসলাসহ ভোগ্যপণ্যের ব্যাপারে কড়া নজরদারি না হলে রমজানে আরো মূল্যবৃদ্ধি হতে পারে বলে আশঙ্কা করে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে।
মাঠপর্যায়ের বাজার কর্মকর্তাদের অনেকে বলেছেন, ২০১৮ এর আগে ১৯৬৪ সালের এগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেটস রেগুলেশন অ্যাক্ট ও ১৯৮৫ সালের সংশোধিত বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনসহ সংশ্লিষ্ট আইনগুলো অতীতেও জোরদারভাবে কার্যকর হয়নি। তাছাড়া ১৯৫৩ সালের মজুদবিরোধী আইন ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনেরও প্রয়োগ হয়নি। জেলায় জেলায় বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটি ও মনিটরিং সেল আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনও আছে কিন্তু বাস্তবে প্রয়োগ নেই।
খাদ্য অধিদফতর, বাজার কর্মকর্তা ও মনিটরিং সেল সূত্র জানায়, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সরকারের নির্দেশনা আছে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে কার্যকর হয় কম। মাঝে মধ্যেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাজার কমিটির বৈঠক হয়। দাবি করা হচ্ছে মাঠেও নামেন কর্মকর্তারা। কিন্তু বাস্তবে মাঠপর্যায়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢিলেঢালা অবস্থা দেখে কোনভাবেই আশ্বস্ত হতে পারেন না ভোক্তাসাধারণ। একেক বাজারে একেক মূল্য হাঁকছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
মূল্যবৃদ্ধির জন্য তারা দোষারোপ করছেন পাইকারি ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের। শহরাঞ্চলে যেনতেন, গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে খোঁজ নেয়ারও কেউ নেই। শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজার ও মুদি দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য আরো বেশি। মাছের মূল্যের ক্ষেত্রে বিক্রেতাদের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হয়। সকালে এক দামতো বিকালে আরেক। কীভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তার ফর্মূলাও খুঁজে বের করারও তাগিদ নেই।
অভিযোগ, বাজার কর্মকর্তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলার বাজারে গিয়ে মূল্য তালিকা টাঙানো হয়েছে কিনা, ক্রয় বিক্রয় রশীদ ব্যবহার হচ্ছে কিনা, কোন পণ্যের কত মূল্য-সাধারণত এটি দেখে থাকেন। মাঠপর্যায়ের এক বাজার কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। তবুও চেষ্টা করছি বাজার নিয়ন্ত্রণের।
তার কথা, একথাতো সত্য, রোপা আমন ধান সবেমাত্র উঠলো। এখন চালের মূল্য এতটা বৃদ্ধির কোন যৌক্তিকতা নেই। মজুতদার, মুনাফালোভী ও সিন্ডিকেটদের কারসাজি চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণ। জরুরিভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।