পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারত সরকার যে উগ্র সাম্প্রদায়িক নীতি গ্রহণ করেছে, সেটা শুধু ভারতেই নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়বে। ভারতজুড়ে উগ্র সাম্প্রদায়িক হত্যাকান্ডের দায় নরেন্দ্র মোদিকেই নিতে হবে। মোদির পরিচয় এখন খুনি-সন্ত্রাসী। তাই এদেশের জনগণ একজন খুনিকে এদেশে আসতে দেবে না। সন্ত্রাসী ফ্যাসিবাদী মোদির বিরুদ্ধে ভারত, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
গতকাল দুপুরে ছাত্র ফেডারেশনের আয়োজনে ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ, সীমান্ত হত্যা বিচার এবং বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার বন্ধের দাবিতে ‘ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে অবস্থান’ কর্মসূচিতে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মুজিববর্ষ পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে, রাষ্ট্রীয়ভাবে। যে দেশ বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করছে সে দেশের সরকার প্রধানকে অতিথি হিসেবে কোনোভাবেই আমন্ত্রণ জানানো উচিত নয়। সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকারী নরেন্দ্র মোদিকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। সরকার আমাদের প্রতিবাদকে আমলে না নিলে সকল গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও জনগণকে সাথে নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সফরকে তীব্রভাবে প্রতিহত করা হবে।
গোলাম মোস্তফা বলেন, ভারতজুড়ে ঘৃণা ছড়ানো সাম্প্রদায়িক হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ন্যায্য আন্দোলন গড়ে উঠেছে। এনআরসি-সিএএ’র বিরুদ্ধে আন্দোলনকে প্রতিহত করতেই দিল্লি মেঘালয়সহ ভারতজুড়ে সহিংতা ছড়াচ্ছে ভারতের বিজেপি সরকার। ভারত সরকার আন্দোলনের দাবি না মেনে বরং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ঘোষণা দিয়ে মুসলিম জনগণের ওপর হামলে পড়েছেন। ভারতের সম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছেন আমরা তাদের সাথে সংহতি জানাচ্ছি। অবিলম্বে সম্প্রদায়িক হত্যাকান্ড ও বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো বন্ধ করতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন বলেন, গত ১৫ বছরে সীমান্তে পাখির মত গুলি করে সহস্রাধিক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করছে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। সীমান্তে ফেলানী হত্যাসহ সব ধরণের হত্যাকান্ডের বিচার ও সীমান্ত হত্যাকান্ড বন্ধের দাবি জানান। এই সীমান্ত হত্যা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমেই তা সম্ভব।
নতুনবাজার বাঁশতলা বাসস্ট্যান্ডে জমায়েত হয়ে দুপুর ১২টার দিকে দূতাবাস অভিমুখে রওনা হয় ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। ‘দিল্লি-মেঘালয়সহ ভারতজুড়ে সম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ করো’, ‘ফেলানীসহ সীমান্ত হত্যার বিচার কর’ ইত্যাদি স্লােগান ও ব্যানারসহ মিছিল নিয়ে ভারতীয় দূতাবাসের অভিমুখে কিছুদূর গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশি বাধার মুখে পড়ে সড়কেই বিক্ষোভ মিছিল ও বক্তৃতার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন নেতারা।
পুলিশি বাধার পর সিনিয়র নেতারা পুলিশ সদস্যদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, কেন এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া উচিত। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা তাদের অবস্থানে অনড় থাকেন। তাদের ভাষ্য, নিরাপত্তার খাতিরে আর সামনে এগিয়ে যেতে দেওয়া হবে না এবং ভারতীয় দূতাবাসের সামনে অবস্থান করা যাবে না।
এ সময় ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘বিশ্বের কোনও দেশে হত্যাকান্ড, নিপীড়ন, মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড হয় তাহলে সে দেশের দূতাবাসের সামনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রতিবাদ জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। আমরা অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে চাই। আমাদের অবস্থান করার সুযোগ দিন। এভাবে আধা ঘণ্টার বেশি সময় পুলিশ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। শেষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে না পেরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন নেতাকর্মীরা।
ছাত্র ফেডারেশনের নেতারা বলেন, অত্যন্ত লজ্জাজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা, আমাদের দেশের পুলিশ কার পক্ষে দাঁড়িয়েছে? আমরা হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করতে এসেছি। আমাদের সে প্রতিবাদ করতে দেওয়া হচ্ছে না। জনগণের টাকায় যারা চলছে, তারা জনগণের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছে। তারা নিপীড়কদের পক্ষ নিচ্ছে, দুর্নীতিবাজদের পক্ষ নিচ্ছে। মানবিকতার পক্ষে, দেশের পক্ষে যারা কথা বলছে তাদের বাধা দেওয়া হয়। সংবিধানে রয়েছে কোথাও নিপীড়ন ঘটলে বাংলাদেশ নিপীড়িতের পক্ষে কথা বলবে। পৃথিবীর যেকোনও প্রান্তে নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমি কথা বলা আমার সাংবিধানিক অধিকার। এই সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করার জন্য পুলিশের সহযোগিতা ও নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা তা করছে না।
কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিক রেজা ও মশিউর রহমান খান রিচার্ড, ভারপ্রাপ্ত অর্থ সম্পাদক আহমেদ নবীন, দপ্তর সম্পাদক এম এইচ রিয়াদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি শুভ দেব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু রায়হান খান ও সাধারণ সম্পাদক সালমান ফরাজী, ঢাকা মহানগর শাখার আহবায়ক সৈকত আরিফ ও সম্পাদক রূপক রায় প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।