পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মোশাব্বের আলী ওরফে আক্কাস (৪০)। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রাইভেট কারে শ্যালকের বিয়ের দাওয়াতে যাচ্ছিলেন। যাত্রী ছিলেন আটজন। পথে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সড়কের পাশে থাকা গাছে সজোরে ধাক্কা খায় গাড়িটি। এতে মোশাব্বের আলী, তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ প্রাণ গেল সাত জনের। এর মধ্যে চালকও আছেন। অন্য দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাদিপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এছাড়া গত ২০ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৩০ জন। আহতের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাজশাহী : বিয়ের দাওয়াত খেতে যাওয়ার পথে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে একটি প্রাইভেটকারের ধাক্কা লেগে একই পরিবারের চারজনসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী, দু’জন শিশু ও দু’জন পুরুষ রয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কাদিরপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনায় ঘটে।
নিহতরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর মুন্নাফের মোড় এলাকার আক্কাস আলী (৪০), তার স্ত্রী হাসনে আরা (৩৫), তার মেয়ে মুসফেরা (১০) ছেলে আদিব আল হাসান (৪ মাস), মহানগরীর মেহেরচন্ডী এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে প্রাইভেটকারচালক মাহবুবুর রহমান (৩৫), গোদাগাড়ী কেল্লাবাড়ি গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী আছিয়া বেগম (৩০) ও মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকার প‚র্ণিমা (২৩)।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন নিহত নারী আছিয়ার স্বামী রমজান আলী (৩৫) ও তার মেয়ে রাফিয়া (৩)। এদের মধ্যে রমজান আলী হাসপাতালের আট নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এবং তিন বছরের শিশু রাফিয়াকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম জানান, শ্যালকের বিয়ের দাওয়াত খাওয়ার জন্য বোন ও বোনের স্বামী এবং ভাগ্নে-ভাগ্নি রাজশাহী থেকে গোদাগাড়ী যাচ্ছিল। দুপুরে তাদের প্রাইভেটকারটি (ঢাকা মেট্রো-খ- ১১-৩২৬০) ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে গোদাগাড়ীর কাদিরপুর এলাকায় পৌঁছানোর পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে।
এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে গোদাগাড়ী থানা পুলিশ ও স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। গুরুতর আহত পাঁচজনকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু রামেক হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। এরপর বিকেলে আহত পূর্ণিমার মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত একজন রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরই মধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ শেষ করা হয়েছে।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে বাস খাদে পড়ে পথচারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন। গতকাল শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দাউদকান্দির জিংলাতুলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- বাসযাত্রী মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কাটালতলী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে মোহাম্মদ রমজান (৪১), ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ এলাকার শাহ আলম মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম এবং পথচারী দাউদকান্দি উপজেলার ছান্দ্রা গ্রামের মৃত মজিদ মোল্লার ছেলে শহীদ মোল্লা (৬০)। আহত শফিক (২২), প্রান্ত (২০), শাহাদাৎ (৩০) ও ছাইদুর রহমানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।আহত অন্যদের দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট আলমগীর হোসেন জানান, রাজধানীর ইসলামপুর এলাকার পাটুয়াটুলী মার্কেটের বোরকা ব্যবসায়ী সমিতির ১১০ জন মালিক-কর্মচারী মিলে তিনটি বাসে দু’দিন আগে বনভোজনে কক্সবাজার যায়। আজ শনিবার ভোরে ফেরার পথে তাদের বহনকারী খাদিজা ভিআইপি (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৪০৬৯) বাসটি এক পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে খাদে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় সড়ক দূর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। একজন বাস চাপায় অন্যজন ট্রলি উল্টে মারা যান। গতকাল শনিবার সকালে তালা উপজেলার বালিয়া ব্রীজ এলাকায় ও দুপুরে শহরের এসপি বাংলোর সামনে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। দুপুরের ঘটনায় ঘাতক বাসটিকে আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, দুপুরে খুলনা থেকে সাতক্ষীরা গামী যাত্রীবাহী বাস শহরের পলাশপোল এসপি বাংলোর সামনে পথচারি গোলাপ রহমান (৪৫) কে চাপা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ বাসটি আটক করে।
অপরদিকে, সকালে তালা উপজেলার বালিয়া ব্রীজের পাশে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় ইটের ট্রলি উল্টে গনেশ ঘোষ (৪৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গনেশ ঘোষ উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের কেষ্টপদ ঘোষের ছেলে। ঘটনার পরপরই ট্রলি চালক পালিয়ে যায়।
বদরগঞ্জ(রংপুর) : রংপুরের বদরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মাসুদ মিয়(৩৫) নামে ট্রলি চালকের মৃত্যু হয়েছে। আহত ট্রলি হেলপার হাসান আলি গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল শনিবার উপজেলার রামনাথপুর ইউপির মিরাপাড়া নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রলি চালক মাসুদ মিয়া পার্বতীপুর উপজেলার খাগড়াবন্দ কোটালিপাড়া গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে এবং হেলপার হাসান আলি একই এলাকার মাহাফুজার রহমানের ছেলে।
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে আরও একজন। নিহত মামুন মিয়া নাগেশ্বরী পৌরসভার মাছুর খামার এলাকার আবুবক্করের ছেলে এবং আহত তৈয়ব আলী ইউসুফ আলীর ছেলে। তারা দুজনেই নাগেশ্বরী টেকনিক্যার এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট-এর দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
ভোলা : ভোলা সদর উপজেলার পূর্বইলিশা ইউনিয়নের সোনাডগী গ্রামের বেড়িবাঁধ এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলিচাপায় সাইফুল (৩) নামে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সাইফুল সোনাডগী ২ নম্বর ওয়ার্ডের মমিনের ছেলে।
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে যাত্রীবাহী বাস ও লরির সংঘর্ষে সহকারী চালক মো. মহসিন ভ‚ঁঞা (৩২) নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নয়দুয়ার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মহসিন খইয়াছড়া ইউনিয়নের মসজিদিয়া মুহুরীপাড়ার হেঞ্জু ভ‚ঁঞা বাড়ির মৃত জেবাল হোসেন টুনুর মেজ ছেলে। এ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন বাসযাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় সাইফুর রহমান (৩৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
গতকাল সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ব্রাম্মণবাজার ইউনিয়নের মিশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুর রহমান উপজেলার মিরশংকর গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে। তিনি আবুল খায়ের গ্রুপের সেলসম্যান বলে জানা গেছে।
মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের ঢাকা ও আরিচা মহাসড়কে বাসচাপায় মাসুদ রানা ওরফে জীবন (২৫) নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মাসুদ রানা মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মূলজান গ্রামের সফিকুল ইসলামের ছেলে। মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্যই সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।