নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সকালে হাফসেঞ্চুরির আনন্দ। দুপুরে সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাস। বিকেলে ডাবল সেঞ্চুরির গর্বিত হাসি। ঢাকা টেস্টের তৃতীয়দিন মুশফিকময় হয়ে থাকল! ব্যাট হাতে মুশফিক যেন ম্যাজিক দেখালেন।
নিরাপদ, নির্ভুল ও নিশ্চিত ভঙ্গিতে-ডাবল সেঞ্চুরির আনন্দময় যাত্রার সঙ্গী হলেন মুশফিকুর রহিম। টেস্টে এটি তার তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। দিনের খেলা শেষ হওয়ার আধঘন্টা মুশফিক ডাবল সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌছান। খেলেন ৩১৫ টি বল। বাউন্ডারি হাঁকান ২৮টি। মুশফিকের অপরাজিত ২০৩ রানের সেঞ্চুরির পরপরই ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান তখন ৬ উইকেটে ৫৬০ রান। ম্যাচে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ২৯৫ রনে।
সেঞ্চুরি অনেকেই করে। কিন্তু মুশফিক একটু ব্যতিক্রম। তিনি সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন। ক্যারিয়ারের ৭টি সেঞ্চুরির মধ্যে তিনটিই তার ডাবল সেঞ্চুরি! আরও অবাক করা তথ্য হলো টেস্টে সর্বশেষ যে দুটো সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক; তার দুটোই ডাবল সেঞ্চুরি! মিল আরো আছে, দুটোতেই প্রতিপক্ষ একই-জিম্বাবুয়ে। মাঠও একই- শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এখন পর্যন্ত টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে ডাবল সেঞ্চুরির সংখ্যা ৫টি। যার তিনটির মালিক মুশফিকুর রহিম!
আগের দিনের ৩২ রান নিয়ে তৃতীয়দিনের সকাল শুরু করেন মুশফিক। দিনের শুরুতেই ঝটপট হাফসেঞ্চুরিতে পৌছে যান। ১০ বাউন্ডারিতে ৯৫ বলে হাফসেঞ্চুরি পুরো হয় তার। লাঞ্চের আগেই সেঞ্চুরির ঘ্রাণ পেয়ে যান। অপরাজিত ৯৯ রান নিয়ে লাঞ্চে যান। ফিরে এসে নিজের খেলা সাত নম্বর বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির আনন্দে মেতে উঠেন। সেঞ্চুরিটা এলো তার ১৬০ বলে, ১৮ বাউন্ডারিতে। কিন্তু শুধু সেঞ্চুরিতে তৃপ্ত হওয়ার মতো ব্যাটসম্যান নন মুশফিক। ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি শেষে নতুন করে গার্ড নিলেন। নিজেকে তৈরি করলেন যেন নতুন করে। সেই পথে হেঁটেই দিনের শেষ সেশনের প্রথম ঘন্টায় পৌছে গেলেন ১৫০ রানে। খেললেন ২৫৪ বল। দেড়শ রানের মাইলফলকে পৌছানোর পর ছোট্ট করে আনন্দটা উদযাপন করলেন। বড় আনন্দ যেন জমিয়ে রাখলেন ডাবল সেঞ্চুরির জন্য!
দিনের খেলার শেষ ঘন্টায় প্রতীক্ষিত সেই ডাবল সেঞ্চুরির উচ্ছাসে নিজে এবং গ্যালারির দর্শকদের ভাসালেন মুশফিক। ইনিংসের পুরোটা জুড়ে কোন সময় মনেই হয়নি মুশফিককে আউট করতে পারবে জিম্বাবুয়ের বোলাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ২৬৫
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : (আগের দিন ২৪০/৩) ১৫৪ ওভারে ৫৬০/৩ (মুমিনুল ১৩২, মুশফিক ২০৩*, মিঠুন ১৭, লিটন ৫৩, তাইজুল ১৪*; টিরিপানো ৩০-৬-৯৬-১, নিয়াউচি ২৭-৩-৮৭-১, রাজা ৩০-১-১১১-১, টিশুমা ২৫-০-৮৫-১, এনডিলোভু ৪২-১-১৭০-২)
হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়েই সাজঘরে ফিরলেন লিটন
আগের ওভারেই তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি। মুশফিকের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকা লিটন হউট করেই ভুল করে বসলেন। সিকান্দার রাজার ওভারের প্রথম বলে লিটনের লেট কাট আটকে যায় চাকাভার শরীরে। ফলে ভাঙে মুশফিকের সঙ্গে তার ১১১ রানের জুটি। লিটন আউট হলেও সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই তারা ২৭৬ রানের লিড নিয়েছেন।
এই রিপোর্ট লেখা অবধি বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫০ ওভারে ৬ উইকেটের খরচায় ৫৪১ রান। উইকেটে রয়েছেন মুশফিক (১৯০) এবং তাইজুল (৮)।
বেরিয়ে এসে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে ওড়াতে চেয়েছিলেন মুমিনুল হক। তবে দারুণ রিফ্লেক্সে ক্যাচ মুঠোয় জমিয়ে তাকে চমকে দিলেন আইন্সলে এনডিলোভু। টেস্টে এটাই বাঁহাতি এই স্পিনারের প্রথম উইকেট।
২৩৪ বলে ১৪ চারে ১৩২ রান করেন মুমিনুল। ভাঙে ২২২ রানের জুটি। তবে তার আগেই ১৩৫ রানের লিড নিয়ে পানি পানের বিরতিতে গেছে স্বাগতিকরা। ১১৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৪০০/৪। ক্রিজে মুশফিকুর রহিমের (১২৮) সঙ্গী মোহাম্মদ মিঠুন (৫)।
তামিম-ইমরুলকে ছাড়িয়ে মুমিনুল-মুশফিক
এতো দিন টেস্টে দুটি করে দুইশ রানের জুটি ছিল তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস এবং মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম জুটির। দুই ওপেনারের জুটিকে এবার ছাড়িয়ে গেলেন মুমিনুল ও মুশফিক।
মুমিনুল-মুশফিকের তিনটি দুইশ রানের জুটির দুটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১৮ সালে মিরপুরেই চতুর্থ উইকেটে গড়েছিলেন ২৬৬ রানের জুটি। এর আগে সেই বছর জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ২৩৬ রানের জুটি।
টেস্টে দশমবারের মতো দুইশ বা এর বড় জুটি পেল বাংলাদেশ। ৩১৬ বলে দুইশ স্পর্শ করে মুমিনুল-মুশফিকের চতুর্থ উইকেট জুটির রান। তাদের জুটি একশ ছুঁয়েছিল ১৮০ বলে।
মুমিনুলের পর মুশফিকের সেঞ্চুরি
দুর্দান্ত এক দ্যুতি ছড়ানো সেঞ্চুরিতে দলকে কক্ষপথে রাখলেন মুমিনুল হক। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে তিন অঙ্কের দেখা পেলেন মুশফিকুর রহিমও।
সেঞ্চুরির জন্য মোটেও তাড়াহুড়া করেননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। অপেক্ষা করেছেন সঠিক বলের জন্য। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারেই পেয়ে গেলেন সেই বল। আইন্সলে এনডিলোভুর বলে বাউন্ডারি মেরে পৌঁছে গেলেন সপ্তম টেস্ট শতকে।
১৮ চারে ১৬০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন মুশফিক। ৯৫ বলে ছুঁয়েছিলেন ফিফটি। এই অভিজ্ঞ দুই সেনানীর ব্যাটে ভর করে এরই মধ্যে ১২৪ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ।
১০৭ ওভার শেষে ঐ ৩ উইকেট হারানো স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩৮৯। মুমিনুল ১২৮ ও মুশফিক ১২৬ রানে ব্যাট করছেন।
মুমিনুলের সেঞ্চুরি, অপেক্ষায় মুশফিক
অধিনায়ক হিসেবে বিবর্ণ শুরুর পর ক্রমেই নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন মুমিনুল হক। ভারত সফর একদমই ভালো কাটেনি। পাকিস্তানে থিতু হতে পেরেছিলেন কিন্তু দুটি সম্ভাবনাময় ইনিংসকে দিতে পারেননি পূর্ণতা। দেশের মাটিতে নেতৃত্বর অভিষেকে পেলেন তিন অঙ্কের দেখা।
ডোনাল্ড টিরিপানোকে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান মুমিনুল। টেস্টে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের এটি নবম সেঞ্চুরি। স্পর্শ করলেন বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি নয় সেঞ্চুরি করা তামিম ইকবালকে।
২০৮ মিনিটে ১৫৬ বলে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পথে মুমিনুলের ব্যাট থেকে এসেছে ১২টি চার। অপরাজিত আছেন ১১৯ রানে।
তিন অঙ্ক পেতে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিমও। মাত্র এক রানের অপেক্ষায় রেখে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ। ১৫৩ বলে ৯৯ রানের ইনিংসটি ১৭টি চারে সাজানো।
৯৯ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩৫১। এই দুই অভিজ্ঞ টেস্ট স্পেশালিস্টের কাঁধে ভর করে এরই মধ্যে ৮৬ রানের লিড নিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর :
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ২৬৫
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৭১ ওভারে ২৪০/৩ (তামিম ৪১, সাইফ ৮, শান্ত ৭১, মুমিনুল ৭৯*, মুশফিক ৩২*; টিরিপানো ১৫-৩-৪০-১, নিয়াউচি ১৩-২-৪১-১, রাজা ২২-১-৭৫-০, টিশুমাম ১২-০-৪৬-১, এনডিলোভু ৯-১-৩৩-০)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।