Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দন্দ্বমূলক নীতি বিভক্ত করবে মানবতাকে

সিম্পোজিয়ামে ভারতের প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব শ্রীনীবাস

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

দন্দ্বমূলক মূল্যবোধ থেকে উদ্ভূত নীতি মানবতাকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে বিভক্ত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব ও কমনওয়েলথ অফ নেশনস এর উপ-সেক্রেটারি জেনারেল কৃষ্ণান শ্রীনীবাসন। তিনি বলেন, একটি জাতির মূল্যবোধ তখনই অর্থবহ হয় যখন তারা অন্যের দ্বারা স্বীকৃত হয়।
গতকাল শনিবার সিক্স সিজন হোটেলে আয়োজিত ‘মূল্যবোধ বৈদেশিক নীতিতে উপস্থিতি’ শীর্ষক একটি সিম্পোজিয়ামে তিনি এসব কথা বলেন।
সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের গবেষণা ফেলো ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সিম্পোজিয়ামটি পরিচালনা করেন। কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রাক্তন এই ভারতীয় ক‚টনীতিক বলেন, দ্ব›দ্বমূলক মূল্যবোধ থেকে উদ্ভূত নীতি মানবতাকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে বিভক্ত করতে পারে। আমাদের অবশ্যই সমস্যার সমাধানের কথা ভাবতে হবে। এজন্য দরকার একটি নতুন বিশ্বজনীনতা, সাধারণ মানবতার একটি যৌথ নীতি যা এক রকমভাবে জাতীয় স্বার্থের চেয়ে সার্বজনীন এবং আন্তর্জাতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়।
তিনি বলেন, মূল্যবোধ এবং স্বার্থের মধ্যে সর্বজনীন উত্তেজনা রয়েছে তা পরিত্যাগ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমানভাবে বর্ণিত সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।
কৃষ্ণান শ্রীনীবাসন বলেন, আমাদের সাধারণ মূল্যবোধ-সহনশীলতা, সমঅধিকার এবং সমান সুযোগের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন মানের ভিত্তিতে একত্রিত হওয়া উচিত। তিনি অবশ্য এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু অসুবিধার কথা উল্লেখ করে বলেন, তবে সমাজগুলো বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিলালন করে যা এ ধরনের সম্ভাবনাকে আপাতত অবাস্তব ও অপ্রয়োজনীয় করে তোলে। মূল্যবোধগুলো এত গভীরভাবে ধারণ করে যে তাদের প্রচার করা জাতীয় স্বার্থে পরিণত হয়। ভারতীয় ক‚টনীতিক বলেন, মূল্যবোধ আচরণের নীতি বা মান, যার দ্বারা ভাল-মন্দ, সঠিক এবং ভুলকে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, প্রজন্ম, শ্রেণি ও শিক্ষার উৎস ঐতিহ্যের উপর নির্ভর করে। যা মূল্যবোধকে পৃথক করে এবং জনগণ ও সরকার উভয়ের মনে ফলাফলকে প্রভাবিত করার প্রেরণা সরবরাহ করে। যদিও কিছু মূল্যবোধ সংস্কৃতির নামে ভাগ করা হয়। এটি বিভিন্ন সমাজের মূল্যবোধের বিপরীতে গিয়ে দেশগুলোর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুল ধারণা পোষণ করে।
দেশীয় মূল্যবোধ এবং এর চর্চা তুলে ধরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমঅধিকার, সামাজিক স¤প্রীতি এবং আইনের শাসনকে কেন্দ্র করে আলোচনা করেন।
শ্রীনিবাসন বলেন, শরণার্থী, অর্থনৈতিক অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা এখন উন্নত বিশ্বে কাম্য নয়। তবে জার্মানিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে এর মূল্যবোধের অংশ হিসাবে গ্রহণযোগ্যতার উপর জোর দেন।
প্রতিটি দেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে এর মূল্যবোধগুলোর নৈতিক মান রয়েছে। তবে মূল্যবোধগুলো বৈদেশিক নীতিকে বিশেষত প্রভাবিত করে যখন কোনও দেশ কোনো প্রকল্পের শক্তি বা প্রভাবের পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়। দুর্বল শক্তি কেবলমাত্র একটি পর্যায় অবধি মূল্যবোধ বজায় রাখতে পারে এবং একটি জাতির মূল্যবোধ তখনই অর্থবহ হয় যখন তারা অন্যের দ্বারা স্বীকৃত হয়। ভারতীয় এই কূটনীতিক বলেন, মূল্যবোধের সমর্থিত না হয়ে একটি সফল বৈদেশিক নীতি কার্যকর করা যায় না। যে মানগুলো কেবলমাত্র এক দেশের স্বার্থের জন্য সেগুলো অন্য দেশের সাথে তার সম্পর্ককে সম্ভাব্যভাবে বিপদগ্রস্ত করতে পারে যারা এই স্বার্থগুলোকে সম্মান করে না। এটি সত্য যে সমস্ত জাতি সাধারণত একই বুনিয়াদি লক্ষ্যগুলো অনুসরণ করে- তাদের জনগণের কল্যাণ এবং সুরক্ষা ও তাদের জাতীয় সীমান্ত রক্ষা করা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানবতা

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১১ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ