Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড-সিম্পসনের পথে হাঁটছেন হ্যারি-মেগান

ব্রিটিশ রাজপরিবারের অভ্যন্তরে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

বিয়ে বিচ্ছেদ করা এক নারীর প্রেমে পড়েছিলেন ব্রিটিশ রাজা অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড। কিন্তু এ বিয়ে রাজপরিবারে বিধি অনুমোদন করে না। রাজা কী করবেন? রাজা সিংহাসন ছেড়ে দিলেন। ব্রিটিশ রাজপরিবারে ঘটে যাওয়া সে কাহিনীর পুনরাবৃত্তিই যেন দেখা যাচ্ছে প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেলের মধ্যে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ়চেতা এক নারীর প্রেমে পড়েছিলেন জনপ্রিয় এক রাজপুত্র। যুক্তরাজ্যের বৈরি গণমাধ্যমের মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের। একালের ব্রিটিশ রাজপরিবারে হ্যারি ও মেগানের কাহিনী আট যুগ আগের সেই অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড ও ওয়ালিস সিম্পসনের কাহিনীর সঙ্গে মিল দেখছেন কেউ কেউ। সে সময় তাদের দুজনকে যে হৃদয় ভাঙার দশা পেরোতে হয়েছিল, তার সঙ্গে হ্যারি-মেগানের কি তুলনা চলে? ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স যদি তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন, তবে তা মিলে যায়।

১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করতে চলা এক নারীকে বিয়ের জন্য সিংহাসন ছেড়েছিলেন রাজা। যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্য হতে ওয়ালিস সিম্পসনকে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। তাকে বিভিন্নভাবে গণমাধ্যম আক্রমণ করা হয়।
‘দ্যট ওম্যান : দ্য লাইফ অব ওয়ালিস সিম্পসন’ বইয়ের লেখক অ্যান সেবা বলেন, রাজকীয় দায়িত্ব থেকে হ্যারি ও মেগানের সরে দাঁড়ানোর ঘটনাটি কোনোভাবেই সিম্পসনের সাংবিধানিক ঝড় তোলা ঘটনার কাছাকাছিও নয়। সিম্পসনকে ব্রিটিশ রাজতন্ত্র ও সাম্রাজ্য ধ্বংস করার অভিযোগে অভিযুক্ত হতে হয়েছিল।
লেখক সেবা বলেন, ‘আমরা এখন ১৯৩৬ সালে বাস করছি না, যখন মানুষ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো নারীকে দেখে আঁতকে উঠত। তারা ভাবত, এতে দুর্বল সমাজ গড়ে উঠবে, যেখানে সবাই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাবে। তবে সত্যিকারের পার্থক্য হলো অ্যাডওয়ার্ড রাজা ছিলেন আর হ্যারি রাজা হওয়ার দৌড়ে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছেন। তিনি কখনো রাজা হতে পারবেন না।’

হুগো ভিকারসের লেখা বায়োগ্রাফি ‘বিহাইন্ড ক্লোজড ডোরস, দ্য ট্রাজিক আনটোল স্টোরি অব ওয়ালিস সিম্পসন’ অনুসারে রাণী একবার বলেছিলেন, তার জীবনে সবচেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি করেছিলেন ওয়ালিস সিম্পসন ও হিটলার।
সিম্পসন ছোটবেলার বন্ধু ম্যারি কার্ক বলেছিলেন, তার কথা মনে হলেই হিটলারে কথা মনে পড়ে। শয়তানি শক্তি যাতে প্রাণীর চতুরতাপূর্ণ। প্রিন্সেস মার্গারেট (বর্তমান ব্রিটিশ রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছোট বোন) তার চাচার প্রেমিকা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘ভয়ানক এক নারী’।

রাজাকে চুরি করে নেওয়া নারী হিসেবে সিম্পসনকে বর্ণনা করা হলেও অ্যাডওয়ার্ড সবসময়ই রাজকীয় দায়িত্বে নিজের মধ্যে ক্লান্তি খুঁজে পেয়েছিলেন। মেগান ও হ্যারির মতোই তিনিও কানাডায় পালানোর স্বপ্ন দেখতেন।
সিম্পসন ও রাজা অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড নানা সমালোচনা ও বাজে কথা থেকে মুক্তি পেতে শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সে স্থায়ী হন। সেখানে হ্যারি ও মেগান কানাডায় স্থায়ী হতে চাচ্ছেন। রাজকীয় উপদেষ্টারা অ্যাডওয়ার্ডকে ‘আধ্যাত্মিক ধ্বংসপ্রাপ্ত’ বলে উপসংহারে পৌঁছেছিলেন।

হ্যারি ও মেগান যেহেতু নতুন পথে যাত্রা শুরু করছেন তারা এখন উইন্ডসরের ডিউক অ্যান্ড ডাচেসের লক্ষ্যহীন অস্তিত্বের ধরণে প্রবাহিত হওয়া এড়াতে চাইবেন। মেগান যেখানে সফল অভিনেত্রী, সমাজকর্মী ও লাইফস্টাইল বøগার হিসেবে খ্যাত সেখানে সিম্পসন তার জীবনে কোনো চাকরি করেননি।
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অলিভেট ওটেল বলেন, একজন ছিলেন কেতাদুরস্ত, আরেকজন স্বাধীন ও সফল নারী যিনি নিজের আয়ে চলতে জানেন। ডাচেস অব সাসেক্সের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আক্রমণ করা হয়েছে তাই তাদের দুজনকে মেলানো যাবে না।
ওটেল বলেন, ওয়ালিস সিম্পসনকে অবশ্যই ব্রিটিশ গণমাধ্যমে খারাপভাবে তুলে ধরা হয়েছিল তবে তা মেগানের মতো নয়। সূত্র : বিবিসি অনলাইন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ