নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রথমে ব্যাট হাতে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হয়ে ঝড় তুলেছিলেন ডেভিড মালান। পরে কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্সের হয়ে টর্নেডো ইনিংস খেললেন আজম খান। আজমকে যোগ্য সমর্থন দিয়েছেন সরফরাজ আহমেদ ও পরে তাণ্ডব চালিয়েছেন বেন কাটিং। তাতে ইসলামাবাদের করা ১৬৮ রান ৩ উইকেট হাতে রেখেই টপকে ফেলল কোয়েটা। পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা প্রথম ম্যাচটা শুরু করল চ্যাম্পিয়নের মতোই। ৩ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল অধিনায়ক সরফরাজের দল।
১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কোয়েটাকে শুরুতেই বড় ধাক্কা দেন মোহাম্মদ মূসা। বিশ্বকাপজয়ী ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়কে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই ১৯ বছর বয়সী পেসার। এই উইকেট পতণের পর কিছু সময় স্তব্ধ হয়ে যায় কোয়েটা শিবির। প্রথম রান তুলতে তাদের খরচ হয় ১০ বল! দলকে কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়া চেষ্টা করছিলেন শেন ওয়াটশন। তবে ব্যক্তিগত ১৫ রানে রান আউটের শিকার হয়ে দলকে বিপদে ফেলেন এই অস্ট্রেলিয়ান। তারপর মূসার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন সাবেক পাকিস্তানি ওপেনার ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদ। তিনি ৭ রান করে আউট হন। দলীয় স্কোর২৬/৩। তখন ক্রিজে আজম খান ও সরফরাজ আহমেদ। চমৎকার ব্যাটিং নৈপুন্য দিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন এই জুটি। কিন্ত আমাদ বাটের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পরে ২১ রানে ফেরেন সরফরাজ। এতে ভেঙে যায় ৪০ বলে ৬৪ রানের পার্টনারশিপ।
তখন দলের প্রয়োজন ৫২ বলে ৮১ রান। ক্রিজে ৪১ রানে খেলতে থাকা আজমের সঙ্গে যোগ দেন নওয়াজ। ব্যাটিংয়ে এসেই মারমুখি ভূমিকায় অবতীর্ণ হন নওয়াজ। প্র্রথম চার বলেই দুটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। পরের ওভারে শাদারে ওভারে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ২৭ বলে ফিফটি তুলে নেন আজম। ১৮ বলে ৪০ রানের জুটি হয়ে উঠছিল ভয়ংকর। ঠিক সেসময় ফাহিম আসরাফ বোল্ড করেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান আজমকে (৫৯)। অবশ্য ফেরার আগে দলকে রেখে যান সুবিধাজনক অবস্থানে। তখন দলের প্রয়োজন ৩৩ বলে ৪১ রান।
নওয়াজের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন বেন কাটিং। এই অস্ট্রেলিয়ানের সঙ্গী নওয়াজকে আর এগুতে দিলেন না আকিফ জাভেদ। আমাদ বাটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তিনি মাত্র ১৩ বলে চারটি চারের সাহায্যে করেন ২৩ রান। সোহেল খান ব্যাটিংয়ে নামেন এরপর। উইকেট নেয়ার ওভারে আকিফ মাত্র ২ রান খরচ করলে ২৪ বলে কোয়েটার প্রয়োজন দাঁড়ায় ৩৭ রান। কিন্তু দুর্দান্ত সব শটে লক্ষ্যকে সহজ করে ফেলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ৯ বলে ১৮ রান করে মূসার তৃতীয় শিকারে পরিণত হলেও কাজের কাজ ঠিকই করে গেছেন সোহেল। ৯ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কোয়েটা। কাটিং অপরাজিত ছিলেন ২২ রানে। নাসির খেলছিলেন ১ রানে। মূসা নেন সর্বোচ্চ তিন উইকেট। এছাড়া আকিফ, অহিম ও আমাদ একটি করে উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে পিএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচে টস জিতে ইসলামাবাদকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান কোয়েটা অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। ইনিংসের প্রথম বলেই কলিন মুনরোকে ফিরিয়ে দিয়ে দলপতির সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমান করেন মোহাম্মদ নওয়াজ। আরেক ওপেনার লুক রনকি চেষ্টা করেছিলেন সেই ধাক্কা পুষিয়ে নেয়ার। তকে ব্যক্তিগত ২৩ রানে সোহেল খানের বলে ক্যাচ আউটে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। এরপর দলকে বড় সংগ্রহের ভীত তৈরি করে দেয় ডেভিড মালান-হোসেন তালাত জুটি। দলীয় ১০০ রানে তালাত (১৯) ফিরলে ভেঙে যায় জুটি। তাকে ফেরান হাসনাইন। ম্যাচে এরপর তিনি তুলে নেন আরও তিনটি উইকেট।
এরপর ক্রিজে আসেন কলিন ইনগ্রাম। তিনি মাত্র ৬ রানেই ফিরে যান। তিনি বিদায় নেয়ার পর টিকতে পারেননি মালানও। ব্যাক্তিগত ৬৪ রানে তিনি আউট হওয়ার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পরে ইসলামাবাদের ইনিংস। শেষে ফাহিম আশরাফ ৮ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলতে না পারলে স্কোরটা হয়তো সম্মানজনক পর্যায়েও পৌঁছতো না। শেষ পর্যন্ত ১৯.১ ওভারে ১৬৮ রানে গুটিয়ে যায় শাদাব খানের দল। হাসনাইন সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া বেন কাটিং ৩টি, সোহেল খান ২টি ও নওয়াজ নেন ১টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইসলামাবাদ ইউনাইটেড : ১৯.১ ওভারে ১৬৮/১০ (মুনরো ০, রনচি ২৩, মালান ৬৪, তালাত ১৯, ইনগ্রাম ৬, আসিফ ১৯, শাদাব ৮, ফাহিম ২০, আমাদ ০, মূসা ০, আকিফ ০×; নওয়াজ ১/১৭, সোহেল ২/২১, হাসনাইন ৪/২৫, কাটিং ৩/৩১, নাসির ০/২৬, ফওয়াদ ০/৪৩)।
কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্স : ১৮.৩ ওভারে ১৭১/৭ (রয় ০, ওয়াটসন ১৫, শেহজাদ ৭, সরফরাজ ২১, আজম ৫৯, নওয়াজ ২৩, কাটিং ২২×, সোহেল ১৮×, নাসির ১×; মূসা ৩/৩০, আকিফ ১/২১, ফিাহিম ১/১৮, শাদাব ০/৪৬, আমাদ ১/৫০)।
ফল : কোয়েটা ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মোহাম্মদ হাসনাইন (কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্স)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।